যে ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ চান তা পান না বলে জানিয়েছেন ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। এজন্য সরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কার করতে হবে। আর ৫৯ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছেন, কারিগরি শিক্ষার মান ভালো। তবে পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন শিক্ষক নেই। প্রযুক্তিনির্ভর যে শিক্ষা তা দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
‘যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে জরিপের ফলাফলে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আরও বক্তব্য দেন ইউরোপীয় ইউনিনের প্রতিনিধি ও ইএসডিও’র শহীদুজ্জামান প্রমুখ।
শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এই সম্মেলনের আয়োজন করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পরিচালিত জরিপে সাতক্ষীরা, সুনামগঞ্জ ও পঞ্চগড় জেলার প্রায় ছয়শ’ শিক্ষার্থীর মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। মতামত দিয়েছেন ৬০ জন শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। কথা হয়েছে ২৪০ জন অভিভাবকের সঙ্গে। এছাড়াও জাতীয় এবং স্থানীয় ৭৫ জনের সাক্ষাতকার নিয়েছে সিপিডির জরিপ দল।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ২৩ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া সুবিধা নেই। প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের জন্য র্যাম্প সুবিধাও নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে মাত্র ৩০ শতাংশে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের অংশ বাড়ানোর লক্ষ্য ধরে রাখা যাচ্ছে না। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশী ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছেন। সাধারণ প্রচারের চেয়ে সামাজিক প্রচারণা এবং আগের অভিজ্ঞতার আলোকে মানুষের কাছে পড়তে আসেন। প্রচারে তরুণদের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা হয় না।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কোর্সের জন্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে একই শিক্ষার্থী একাধিক কোর্স করছেন। কিন্তু সেই অর্থে কাজে লাগাতে পারছেন না। শিক্ষকের মান উন্নয়নে নজর দেওয়া জরুরি। বাজার ব্যবস্থার যে যোগাযোগ সেটা তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে কাজ পাচ্ছেন কিন্তু বেতন ১০ হাজার টাকার নিচে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নিয়োগ দেওয়ার পর আবারও প্রশিক্ষণ দিতে হয় বলে জানিয়েছেন নিয়োগ কর্তারা।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সনদের ব্যবস্থা করতে না পারলে দেশে বিদেশে চাকরি পাওয়া কঠিন। পঞ্চগড় এবং সুনামগঞ্জে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। একটা পর্যায়ে সেখানে শিক্ষা নেওয়া কঠিন হয়ে যায়। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার কম, সেটা বাড়াতে হবে। সাধারণ শিক্ষার মত কারিগরি শিক্ষাকে আরও বিস্তৃত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল দরকার। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষাকে যেভাবে দেখা হয় ঠিক সেভাবে।
বিডি প্রতিদিন/একেএ