দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, সামনে আরেকটি সংকট ভুয়া সমন্বয়ক। যেভাবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর হঠাৎ ‘সিক্সটিন ডিভিশন’ নামের একটি বাহিনী আবির্ভূত হয়েছিল, এখনো তেমন একটি নতুন সংকট মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে- ভুয়া সমন্বয়ক। এখনই প্রতিরোধ না করলে এটি ভবিষ্যতের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতকরণ এবং সেবার মানোন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রশাসনের অবক্ষয় প্রসঙ্গে ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘সরকার পাল্টায়, সরকার চলে যায়। কিন্তু আমরা প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়কে এতটা জায়গা দিয়েছি যে, এখন সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এখন আমাদের সামনে বড় সুযোগ। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক পক্ষপাতবিহীন। রাজনৈতিক চাপ না থাকলে আমাদের কাজের পরিবেশ ভালো থাকে। আমাদের উচিত এই সুযোগে পরিবর্তন আনা। কারো পক্ষ নেওয়া আমাদের জন্য ভালো নয়। আমাদের কাজ হচ্ছে নিরপেক্ষ সেবা দেওয়া। আমরা সেই সেবা দিয়েই যাব।’
রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলি প্রশাসনের রাজনৈতিকীকরণ হয়েছে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতায় দেখি উল্টো, আমরাই অনেক সময় রাজনীতিবিদদের কাছে যাই। যদি আমরা নিরপেক্ষ থাকতে পারি, পরিবর্তন আনা সম্ভব।’
দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গও উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘সবার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনুস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার। এই কাজ সফল করতে আমাদের সক্রিয় থাকতে হবে।’
দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশি কাজ হওয়া উচিত, ভবিষ্যতে যেন দুর্নীতি না হয়। আগের দুর্নীতি নিয়ে শতভাগ সময় ব্যয় না করে বর্তমান দুর্নীতি প্রতিরোধে মনোযোগী হওয়া জরুরি। এই ভুল থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
এর আগে, সকালে ড. মোমেন নগরীর সিএন্ডবি রোডে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ছয়তলাবিশিষ্ট বরিশাল দুদক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সভায় বরিশাল বিভাগের সব সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ