মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষকসন্তান কিবরিয়া এখন গিনেস বুকে

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কৃষকসন্তান কিবরিয়া এখন গিনেস বুকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের পার্থ দেবের পর এবার গিনেস বুকে নাম লেখালেন জেলার নবীনগরের কৃষকসন্তান আলম কিবরিয়া। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট তৈরি করে এবার রেকর্ড গড়লেন তিনি। তার তৈরি করা সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি ক্যাটারির ওয়েবসাইট ‘www.amargram.xyz’-কে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইটের স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ। রবিবার গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতিপত্র হাতে পৌঁছায় কিবরিয়ার। বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের সব তথ্য এক ঠিকানায় আনতেই এই ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন কিবরিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গাজীকান্দি গ্রামের হিরণ মোল্লার ছেলে আলম কিবরিয়া সাত ভাই-বোনের মধ্যে ষষ্ঠ। বাবা হিরণ মোল্লা পেশায় কৃষক। মা খাদিজা বেগম গৃহিণী। ২০১৬ সালে নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন কিবরিয়া। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করার জন্য ঢাকায় চলে যান। কোচিং করার ফাঁকে কয়েক মাস একটি আইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডেভেলপিংয়ের কাজ শেখেন। তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ থেকেই নিজের নাম গিনেজ বুকে তোলার ইচ্ছা জাগে মনে। তাই করোনাভাইরাসের মহামারীকালে ঘরে শুয়ে-বসে সময় নষ্ট না করে ‘আমার গ্রাম’ ওয়েবসাইট তৈরির কাজে হাত দেন কিবরিয়া। পরিকল্পনা ছিল, বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফোন নম্বর এক ঠিকানায় নিয়ে আসা। সেই থেকেই সর্ববৃহৎ ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট বানানোর কাজ শুরু করেন। টানা কয়েক মাস প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা করে সময় ব্যয় করেন ওয়েবসাইট তৈরির কাজে।

কিবরিয়া বলেন, ‘ওয়েবসাইটের ডোমেইন কিনে আমি নিজেই ডিজাইন ও ডেভেলপিংয়ের কাজ করেছি। পরিবারের কেউ জানত না আমি সারা দিন ঘরে বসে কী কাজ করছি বা কী তৈরি করছি। কারণ আমার পরিবারের কারও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। করোনাভাইরাসের সময়টাতে আমি ঘরেই ছিলাম। কিন্তু ঘরে শুয়ে-বসে সময় নষ্ট না করে ওয়েবসাইটের কাজ করেছি। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও সরকারি ওয়েবসাইট এবং গুগল ও উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার ওয়েবসাইটটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির। ৫ হাজার ৫৬৬টি ক্যাটাগরি যুক্ত করা হয়েছে সাইটটিতে। সাইটটিতে ঢুকলেই বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র দেখা যাবে। মানচিত্র অনুযায়ী জেলায় ক্লিক করলেই ওই জেলার সব উপজেলা ও ইউনিয়ন এবং গ্রামের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য চলে আসবে। আপাতত ৬৮ হাজার গ্রামের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। কিন্তু গ্রামের তথ্যগুলো এখনো হালনাগাদের কাজ চলছে। যে-কেউ চাইলে সাইটে গিয়ে নিজ গ্রামের তথ্যগুলো হালনাগাদ করতে পারবেন এমন ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়েবসাইট তৈরির পর পাঁচ মার্কিন ডলার খরচ করে আমি গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের কাছে গত ২০ সেপ্টেম্বর আবেদন করি এটিকে সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইটের স্বীকৃতি দিতে। গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষ আমার আবেদন যাচাই-বাছাই করার পর স্বীকৃতি দেয়। রবিবার তাদের স্বীকৃতিপত্র হাতে পেয়েছি।’

সর্বশেষ খবর