সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

একজনের নাম ব্যবহার করে ২০ বছর চাকরি করছেন আরেকজন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

জালিয়াতির মাধ্যমে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর গ্রামের মঈন উদ্দিন খান পরিচয়ে ২০ বছর ধরে কারারক্ষী পদে সিলেট কারাগারে চাকরি করছেন কুমিল্লার এক ব্যক্তি। সম্প্রতি জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় তদন্তে নেমেছে কারাকর্তৃপক্ষ। হবিগঞ্জ জেলা কারাগার ও ভুক্তভোগী পারিবার জানায়, ২০০১ সালে মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর গ্রামের নুর উদ্দিন খানের ছেলে মঈন উদ্দিন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে কারারক্ষী পদে চাকরির আবেদন করেন। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজির হয়ে শারীরিক ফিটনেস, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। মঈন উদ্দিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তাকে যোগদানপত্র পাঠানো হয়নি। একপর্যায়ে চাকরির আশা ছেড়ে ফার্মেসি শুরু করেন। গত ১২ আগস্ট কারারক্ষী ক্রমিক নং-২১৮৬২ মূলে মঈন উদ্দিন খান চাকরি করেন মর্মে শাহজাহানপুর ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক কার্যালয় থেকে চিঠি আসে। চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন ওই চিঠি পেয়ে প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে মঈন উদ্দিনকে জানান। চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নপত্র পেয়ে মঈন উদ্দিন খান কারারক্ষী পদে তিনি চাকরি করেন না এবং তার নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কে চাকরি করছেন তা অবগত করার জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর মাধবপুর থানায় জিডি করেন। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান গত ১৬ নভেম্বর কারা উপ-মহাপরিদর্শক কামাল হোসেন বরাবর একটি প্রত্যয়ন পাঠান। তাতে উল্লেখ করেন মঈন উদ্দিন খান কারারক্ষীর চাকরি করেন না। এই চিঠি পেয়ে সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক এক পত্রে মঈন উদ্দিন খানকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। মঈন উদ্দিন উপ-মহাপরিদর্শক কামাল হোসেনের কাছে গিয়ে জানান, তিনি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারারক্ষী পদে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি পেয়েছেন এমন কোনো কাগজ পাননি। এ সময় তিনি চাকরিতে যোগদানের জন্য লিখিত আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের উপ-মহাপরিদর্শক বিষয়টি তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য হবিগঞ্জ জেল সুপারকে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী হবিগঞ্জ জেল সুপারের পক্ষে জেলার জয়নাল আবেদীন চিঠি ইস্যু করে মঈন উদ্দিন খানকে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী মঈন উদ্দিন খান এলাকার সাবেক চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে কারাগারে আসেন। কিন্তু মঈন উদ্দিন খান নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কুমিল্লার যে ব্যক্তি চাকরি করছেন তাকেও হবিগঞ্জ কারাগারে হাজির থাকার নির্দেশনা দিলে তিনি আসেননি।

সর্বশেষ খবর