মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপরাধ প্রমাণের পর সাজার মাত্রা নির্ধারণে শুনানির নির্দেশ স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোনো মামলায় যুক্তিতর্ক শেষ হলেই রায় ঘোষণা না করে দোষী ব্যক্তির সাজার পরিমাণ নির্ধারণেও শুনানির নির্দেশনা দিয়ে হাই কোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গতকাল আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, সাজার মাত্রা নির্ধারণে ফের শুনানির নির্দেশ দিয়ে হাই কোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। আমাদের আপিল ফাইল করা পর্যন্ত রায়টি স্থগিত থাকবে। পরে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। রাষ্ট্র বনাম মো. লাভলু মামলায় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ২০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে প্রদত্ত নির্দেশনা অধস্তন আদালতের বিচারকদের অবহিত করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে নির্দেশনা অংশে বলা হয়েছে, ‘যখন উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়, তখন বিচারক আসামিকে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা কয়েক বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন বিচারক তার মনের এই কথাটি উন্মুক্ত আদালতে মামলার উভয় পক্ষের আইনজীবীদের জানাবেন। এরপর উপযুক্ত শাস্তি নির্ধারণের জন্য আসামির শাস্তির বিষয়ে পৃথক শুনানির জন্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি তারিখ ঠিক করবেন। সেই তারিখে শুনানিতে আসামির সামাজিক অবস্থান, অপরাধের রেকর্ড, বয়স ও আর্থিক অবস্থার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি ঘোষণা করবেন।’

রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, ‘বিচারিক আদালতের বিচারকদের অবশ্যই রায় ঘোষণার আগে অপরাধীর সংশোধন এবং সংস্কারের সম্ভাবনার বিষয়গুলোও বিবেচনা করে দেখবেন। একজন ব্যক্তির জীবন কেড়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুতর একটি কাজ। যদি না আইন দ্বারা তাতে বাধ্য করা হয়, আইনগত আদালত সর্বদা এ-জাতীয় কোনো আদেশ দিতে নারাজ।’ এরই মধ্যে বিশ্বের অনেক দেশই মৃত্যুদন্ডের বিধান বাতিল করেছে। তার কারণ ফৌজদারি মামলায় পক্ষগণ থাকে মানুষ। আর মানুষই ভুল করে। আর এ ভুলের জন্য ব্যক্তির জীবন কেড়ে নেওয়া উচিত নয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত। হাই কোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিলে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে দিলেন।

 

সর্বশেষ খবর