৩ জুন, ২০২০ ১৩:৫৬

একটু অক্সিজেন চাই

হাসিনা আকতার নিগার

একটু অক্সিজেন চাই

সামাজিক ও গণমাধ্যমে এখন মৃত্যুর খবরগুলো আহত করে মনকে। ভেন্টিলেটর আর আইসিইউর অভাবে মানুষ অসহায় এখন। ঢাকার পর চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে হতাশার শেষ নেই শহরবাসীর। এ নগরীর বিত্তবান ও বিশিষ্টজনদেরও যেখানে ঠাঁই মেলেনি বেসরকারি হাসপাতালে, সেখানে সাধারণ মানুষের কথা বলা বাহুল্য মাত্র।

সীমিত পরিসরে সরকার সব খুলে দিয়েছে গত ৩১ মে থেকে। মানুষের মাঝে সীমিতভাবে চলাফেরার তেমন কোন লক্ষণ নেই। বরং সাধারণ ছুটি শেষে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার আমেজ দেখা যাচ্ছে চারদিকে। নিদারুণ সত্য হলো, করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত্যুকে মেনে নিতে শুরু করেছে মানুষ। এ মহামারীতে কারো চিরবিদায় এখন 'দোয়া আর আহারে' শব্দে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। প্রকৃতি মানুষকে  এ  কোন নিষ্ঠুর পৃথিবী দেখাচ্ছে তা কেবল বিধাতা জানে। 

প্রকৃতির কাছে মানুষ আজ পরাজিত। কোভিড ১৯ এর এখনো কোন প্রতিষেধক নেই। যদিও অনেক দেশে আক্রান্তের হার কমে এসেছে। তবে পুনরায় আক্রমণের শঙ্কাতে ভুগছে চীনসহ অন্যান্য দেশ। বাংলাদেশের অবস্থা আশাব্যঞ্জক নয়। এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা  নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। মানুষ হাসপাতালে যেতে ভয় পায়। কারণ যথাযথ সেবা নাই।

সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।  এ মুহূর্তে  কোভিড ১৯ এর জন্য বরাদ্দকৃত হাসপাতাল সমূহে সিট আর ভেন্টিলেটর সংকটে ভুগছে সারা দেশসহ চট্রগ্রামের মানুষ। একটু অক্সিজেন পাওয়ার আশায় হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে রোগী নিয়ে পরিবারের সদস্যরা  ছুটছে দিগ্বিদিক ভুলে। আইসিইউ আর অক্সিজেনের অপ্রতুলতাতে বন্দর নগরী চট্রগ্রামে করোনা রোগীরা মারা যাচ্ছে বেশি। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা দেবার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে মিটিংয়ে রাজি হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। 

করোনাভাইরাসের রোগী বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি নেয় না। যার প্রমাণ প্রতিদিন দেখা যায় সামাজিক ও গণমাধ্যমে। এ         ছাড়াও করোনার ভয়ে এসব ব্যক্তি মালিকাধীন হাসপাতাল অন্য রোগীরও চিকিৎসা দিচ্ছে না। অন্য রোগের কারণে  মুমূর্ষু রোগী ভর্তি নিতেও নারাজ। অবস্থা দেখে মনে হয় মানুষের যেন কোভিড-১৯ ছাড়া আর কোন রোগ নেই।

একটু অক্সিজেনের আশায় হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে স্বজন হারিয়ে শোকে স্তব্ধ হচ্ছে মানুষ। স্বাস্থ্যখাতের এ বেহাল দশা  হৃদয়বিদারক। আর চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর নাটকীয় সিদ্ধান্ত অমানবিকতার দৃষ্টান্ত ছাড়া আর কিছু নয়।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাঁচার আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে আসছে। একদিকে সীমিতভাবে সব চালু হয়েছে দেশে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাড়ছে। তাই এ মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজের সুরক্ষার নিজেকে  করতে হবে। আর তা না হলে অক্সিজেনের জন্য আর্তনাদ করে মরতে হবে।

লেখক: কলামিস্ট

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর