২৭ বছরের ব্যবধানে সিটিজেনশিপ গ্রহণে ফি’র পরিমাণ বেড়েছে ৫০০%। ১৯৮৯ সালে সিটিজেনশিপের জন্যে আবেদনের সঙ্গে ফি লাগতো ৬০ ডলার। এখন তা বেড়ে ৬৮০ ডলার হয়েছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের অনেকের পক্ষেই সিটিজেনশিপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। এমন পরিস্থিতির অবসানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হবার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি কম্পট্রোলার স্কট এম স্ট্রিঙ্গার।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাবার আগে ইমিগ্র্যান্টদেরকে গ্রিনকার্ড (পারমানেন্ট রেসিডেন্ট কার্ড) দেয়া হয়। গ্রিনকার্ডের বয়স ৫ বছর হলেই সিটিজেনশিপের জন্যে আবেদন করা যায়।
সিটি কম্পট্রোলার স্ট্রিঙ্গার বলেছেন, নিউইয়র্ক সিটিতে ৬ লাখ ৭০ হাজার গ্রিনকার্ডধারী রয়েছেন, যারা সিটিজেনশিপ গ্রহণের যোগ্য। কিন্তু আর্থিক কারণে সে পথে পা বাড়াচ্ছেন না। এরমধ্যে কুইন্সে ২ লাখ ১৭ হাজার, ব্রুকলিনে ২ লাখ ৮ হাজার, ব্রঙ্কসে এক লাখ ১৭ হাজার, ম্যানহাটানে এক লাখ ৬ হাজার এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে ১৯ হাজার জন রয়েছেন।
স্ট্রিঙ্গারের দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে যে, ফি প্রদানই যথেষ্ট নয়। অনেক বয়স্ক মানুষকে ইংরেজি শেখার জন্যে ক্লাস নিতে হয়। এ জন্যেও মাথাপিছু লাগে ৪০০ ডলার করে। এরপর অনেককেই ইমিগ্রেশনের এটর্নির সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়। এটর্নি ফি বাবদও এক হাজারের বেশি ডলার লাগে। এভাবে সিটিজেনশিপ গ্রহণের সুযোগ গ্রহণে অক্ষমরা শুধু পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন না, একইসঙ্গে সমগ্র কম্যুনিটি এবং এই সিটিও অতিরিক্ত আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ সিটিজেনশিপ গ্রহণের পরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আয়-রোজগার বেড়ে যায়। এ অর্থ পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য আনার পাশাপাশি পাড়া-প্রতিবেশির জন্যেও সুফল বয়ে আনে।
স্ট্রিঙ্গার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফি’র মাধ্যমে সংগৃহিত অর্থেই পরিচালিত হচ্ছে ইউএসসিআইএস। এহেন পরিস্থিতির অবসানে উদ্যোগ নিতে হবে কংগ্রেসকে। ইউএসসিআইএস’র কাজকর্ম চালানোর তহবিলের বিকল্প উৎস ভাবতে হবে কংগ্রেসকে। এ সংস্থাকে সত্যিকার অর্থেই একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের দায়িত্ব অপরিসীম। একইসঙ্গে ফি ব্যতীত সিটিজেনশিপের দরখাস্ত প্রদানের বর্তমান বিধিতেও সংস্কার প্রয়োজন। দারিদ্রসীমার ১৫০% নিচে জীবন-যাপনকারীদের জন্যে ফি রহিতের ব্যবস্থা থাকলেও সে সুযোগ অনেকে পাচ্ছেন না। এক ধরনের জটিল ব্যাখ্যার মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে ওই প্রক্রিয়া। এহেন অবস্থায় নিউইয়র্কের লোকজনের বসে থাকা উচিত নয়। কারণ এটি হচ্ছে বিশ্বের ইমিগ্র্যান্টদের রাজধানী। তাই এখান থেকেই আওয়াজ উঠতে হবে এবং সে আওয়াজ ছড়িয়ে দিতে হবে সমগ্র আমেরিকায়।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা