২০ জুলাই, ২০১৯ ১২:৪৬

বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট অভিযোগ করেছেন প্রিয়া সাহা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট অভিযোগ করেছেন প্রিয়া সাহা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রিয়া সাহা (বামে) ও ড. একেএ মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন বলেছেন, “প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট অভিযোগ করেছেন তিনি। আমি এই আচরণের নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ, বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীর ২৫ শতাংশ ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু। যদিও সংখ্যালঘুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ।”

রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী সমাবেশে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বিস্তারিত আলোকপাত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মিয়ানমার জান্তার বর্বরতার শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানরা যখন বাঁচার তাগিদে বসতভিটা ত্যাগ করে, সেই ১১ লক্ষাধিক অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। সে কারণে বিশ্বের সভ্য সমাজে বাংলাদেশের মহানুভবতার প্রশংসা উচ্চারিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে একই সম্মেলনে যোগদানকারী এনজিও কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার এমন অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসীদেরকেও বিস্ময়ে হতবাক করেছে।

ড. এ কে মোমেন ১৯ জুলাই (শুক্রবার) বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য শেষে লন্ডনের উদ্দেশে বস্টন ত্যাগের প্রাক্কালে এ সংবাদদাতাকে আরও বলেন, “ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতির আলোকপাত করেছেন। তাই প্রিয়া সাহার বক্তব্য যে অন্তঃসারশূন্য এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে এমন জঘন্য মিথ্যাচার করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ধরনের অভিযোগে প্রকারান্তরে শান্তিপূর্ণ সমাজে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তা কখনো হতে দেবে না। আশা করছি প্রিয়া সাহার বোধোদয় ঘটবে।”

“ইতিমধ্যেই অনেক প্রবাসী আমাকে ফোন করে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঘুরে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন যারে সহ্য হচ্ছে না সেই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য হাসিল করতেই এমন উদ্ভট প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছে “ যোগ করেন ড. মোমেন।

এদিকে, প্রিয়া সাহাকে শুক্রবার সকালে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেও কথা বলেননি এ সংবাদদাতার সঙ্গে। লাইন কেটে দেওয়ার পর কয়েক ফা চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি টেক্সট মেসেজ দিলেও জবাব নেনি ২০ জুলাই নিউইয়র্ক সময় শনিবার ভোর রাত পর্যন্ত। 
নিউইয়র্কে বসবাসরত তার ঘনিষ্ঠ স্বজনরা প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিয়ে কোনও মন্তব্য/প্রতিক্রিয়া না জানালেও নাম গোপন রাখার শর্তে শুধু বলেছেন যে, তার স্বামী মলয় সাহা দুদকের গুরুত্বপূর্ণায়িত্ব পালন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার দুই সন্তান লেখাপড়া করছেন আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট হিসেবে। প্রিয়া সাহা নিজেও ঢাকাস্থ মার্কিনূতাবাস থেকে ভিসা নিয়ে স্বামীর গাড়িতে (সরকারি যানবাহন) এয়ারপোর্ট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। তাহলে তিনি নির্যাতিত বলে দাবি করলেন কীভাবে।

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ‘হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন’র কর্মকর্তা জয় ক্যানসারার চেষ্টায় প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রে এই সম্মেলনে আসেন বলে জানার পর জয় ক্যানসারার মাধ্যমে প্রিয়া সাহার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

ঐক্য পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখার কর্মকর্তারাও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বক্তব্য/বিবৃতি দিতে চাননি প্রিয়া সাহার অভিযোগ প্রসঙ্গে। 
ডেমক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক খোরশেদ খন্দকার প্রচণ্ড ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, “প্রিয়া সাহা নিজের স্বার্থে বাংলাদেশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের সহজ পথ হিসেবে এমন উদ্ভট-আজগুবি কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে।”

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর