যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ স্টেটের অর্ধ শতাধিক বাংলাদেশি আমেরিকান চিকিৎসক এক যুক্ত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বর্ণ-জাতিগত অবিচারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ৫ জুন দেওয়া এই বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেছেন, স্বাধীনতার মূল্যবোধ, সম-অধিকার অথবা ন্যায় বিচার এবং সহনশীলতার ভিত্তিতে অভিবাসী সমাজ যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। অথচ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কী এক অদৃশ্য কারণে কৃষ্ণাঙ্গরা কোন সেক্টরেই শ্বেতাঙ্গদের সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। আর এমন বৈষম্য গৃহায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিচার বিভাগে ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা-সেবায় নিরলসভাবে অবদানের জন্যে বাংলাদেশি আমেরিকান চিকিৎসকরা গৌরববোধ করেন। কভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবায় বাংলাদেশি চিকিৎসকরাও নিজের জীবন বাজি রেখে সর্বক্ষণ সক্রিয় রয়েছেন সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে। ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশ ক’জন চিকিৎসকের প্রাণহানীও ঘটেছে। এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক একটি সত্য উপলব্ধিতে রাখা উচিত যে, আমরা আজকের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকান-আমেরিকানদের সৃষ্ট নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অবদান অনস্বীকার্য। সে আন্দোলনে অসংখ্য আফ্রিকান-আমেরিকানের রক্ত ঝরেছে, অশ্রুপাত হয়েছে। তাদের সেই ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত অধিকারের বলেই আমরাও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সুযোগ পেয়েছি। নিজেদেরকে আমেরিকান হিসেবে পরিচিত করার অধিকার পেয়েছি। তাই কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক যে আচরণ চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদেরও রুখে দাঁড়াতে হবে। সামিল হতে হবে চলমান গণআন্দোলনে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান আন্দোলন কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে, লুটতরাজের ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু এটি ভুলে গেলে চলবে না যে, সহায়-সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হবার সাথে পুলিশী বর্বরতায় মৃত্যুবরণকারিদের জীবনের কোন তুলনা হবে না।‘কমিউনিটির সদস্য হিসেবে আমরা নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারি না। বর্ন-বৈষম্য, জাতিগত বৈষম্যের অবসানে যে আন্দোলন চলছে তার সাথে আমরাও একাত্মতা ঘোষণা করছি।
আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আদায়ের এ পরিক্রমায় নেতৃত্ব প্রদানকারি চিকিৎসক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন জানান, স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়েছে। আরও অনেকে রয়েছেন শীঘ্রই তাদের সহমতও পাবো। কারণ, সকলেই ক্ষুব্ধ কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে পুলিশী আচরণে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা