শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বইমেলা নিয়ে যত কথা

মোস্তফা মতিহার

পয়লা ফেব্রুয়ারি, ভাষার মাসের প্রথম দিনই শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩। এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।  এ কারণে কাগজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। বিপাকে পড়েছেন প্রকাশকরা। নয় দিন পার হওয়ার পরেও এখনো পুরোপুরি জমে ওঠেনি এবারের মেলা। বইমেলার নানা দিক নিয়ে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের কথা নিয়ে এ আয়োজন।

 

বাংলা একাডেমিরও দাবি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি খোলা রাখা হোক

ডা. মুজাহিদুল ইসলাম

পরিচালক, বাংলা একাডেমি ও সদস্যসচিব, মেলা পরিচালনা কমিটি

গতবারের মেলায়ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি খোলা ছিল এবং এই অংশে গাড়ি পার্কিংও ছিল। এবার সাত দিন পার হওয়ার পরেও কেন গেটটি এখনো বন্ধ রেখে জনসাধারণের মেলায় প্রবেশ বিঘিœত করা হচ্ছে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি। মেলায় জনসাধারণের অবাধ প্রবেশে গেটটি খোলা রাখার জন্য আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বলেছেন, শুধু শুক্র ও শনিবার তারা গেটটি খোলা রাখবেন। আমার কথা হচ্ছে, পাঠকরা তো আর শুক্র ও শনিবার মাথায় রেখে মেলায় আসেন না, যখন আসতে মনে চায় তখনই মেলায় আসেন। একুশের চেতনার স্বার্থে ও মেলাকে সফল করার লক্ষ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি খোলা রাখা শুধু পাঠকদের দাবি নয়, লেখক, প্রকাশক, দর্শনার্থী ও মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমিরও দাবি।

 

কাগজের দামই প্রধান সমস্যা

মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন

স্বত্বাধিকারী, অন্বেষা

বৈশ্বিক সমস্যার কারণে কাগজের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে আমরা বইয়ের দাম সে হারে বাড়াতে পারব না।  আমাদের পাঠকের সংখ্যা আরও কমে যাবে...

কাগজের দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধিতে বইমেলার ওপর অবশ্যই একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ডিজিটাল যুগে বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ এমনিতেই কমে গেছে। এর ওপর কাগজের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধিতে বইমেলার ওপর অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বৈশ্বিক সমস্যার কারণে কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদেরও বইয়ের দাম বাড়াতে হবে। তবে কাগজের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে আমরা বইয়ের দাম সে হারে বাড়াতে পারব না। আমাদের পাঠকের সংখ্যা আরও কমে যাবে। দেশের প্রকাশনা শিল্পকে হুমকির কবল থেকে রক্ষা করার জন্য কাগজের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিক্রির যে মন্দাভাব চলছে তাতে কাগজের দামই প্রধান সমস্যা।

 

গবেষণাধর্মী বইয়ের প্রকাশকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন

ওসমান গনি

প্রকাশক, আগামী

আমরা যারা গবেষণাধর্মী ও উচ্চমার্গীয় বই বেশি প্রকাশ করে থাকি তারাই বেশি সমস্যায় পড়ছি

কাগজের দাম বৃদ্ধিতে বইমেলার দীর্ঘদিনের সফলতায় ভাটা পড়েছে। সরকার যদি কাগজ আমদানিতে ট্যাক্স ফ্রি করে দেয় অথবা আমাদের ওপর ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে দিলে আমরা অন্তত প্রকাশনাশিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারব। কাগজের দামের লাগামহীন বৃদ্ধি যদি এখনই রোধ করা না যায় তাহলে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হবে। কাগজের দাম বৃদ্ধি দেশের প্রকাশনাশিল্পের জন্য অশনিসংকেত। আমরা যারা গবেষণাধর্মী ও উচ্চমার্গীয় বই বেশি প্রকাশ করে থাকি তারাই বেশি সমস্যায় পড়ছি। আমাদের গবেষণাধর্মী বইগুলো সারা বছর ধরেই বিক্রি হয়। বিশেষ করে আগামী প্রকাশনী যে ধরনের বই প্রকাশ করে সে ধরনের বইয়ের খুব একটা কাটতি নেই। চটুল বইয়ের প্রকাশকদের চেয়ে আমরা উচ্চমার্গীয় বইয়ের প্রকাশকরা বেশি পরিমাণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হব। প্রকাশনা শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে সরকারের কাছে অনুরোধ করব কাগজের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি এবারের মেলাকে এখনো গোছাতে পারেনি। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি ধুলো নিরসনেও একাডেমি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

 

যারা বই কেনেন, তারা বই কিনবেনই

মাজহারুল ইসলাম

প্রকাশক, অন্যপ্রকাশ

কাগজের দাম বৃদ্ধি হওয়াটা আমাদের প্রকাশকদের জন্য চরম দুঃসংবাদ। কাগজের দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলেও এতে মেলায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কারণ যারা বই কেনেন, তারা বই কিনবেনই। কাগজের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা বইয়ের দাম বাড়াব না। জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই সামান্য দাম বৃদ্ধি করা হবে। যার কারণে মেলার ওপর ততটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই আমি মনে করছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সব কিছুর পাশাপাশি কাগজের দামও যেহেতু বেড়েছে; তাই বইয়ের দামও কিছুটা বাড়বে। তবে আমরা বইয়ের দাম পাঠকদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রাখার চেষ্টা করব। বৈশি^ক দুর্যোগ শেষ হলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলেই আশা করছি।

 

প্রকাশনাশিল্পের সংকটে অংশীজন লেখক, পাঠকরাও

মঞ্জুর হোসেন

প্রকাশক, জোনাকী

প্রকাশনা সংস্থা জোনাকীর কর্ণধার মঞ্জুর হোসেন বলেন, প্রকাশনা শিল্পের সংকট ও বিপর্যয় শুধু আমাদেরই নয়, এর প্রভাব অনেক সুদূরপ্রসারী। আমাদের নির্মূল হয়ে যাওয়া শুধু আমাদেরই বিলুপ্তি নয়, এর অংশীজন বৃহত্তর লেখক ও পাঠক সমাজও। সরকারের প্রতি জোর মিনতি করছি, এর আশু সমাধানকল্পে জরুরি ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে এই প্রকাশক বলেন, মূলধারার সাহিত্যিকদের বইয়ের চেয়ে ফেসবুক সেলিব্রেটিদের বই বেশি চলে। আমাদের কিছু প্রকাশক নিজেদের স্বার্থে ফেসবুক সেলিব্রেটিদের বই প্রকাশ করে বাণিজ্যের লোভে শিল্পকে ধবংস করছেন। এটা মেলার জন্য, বাংলা সাহিত্যের জন্য এবং একুশের চেতনার জন্য একটি অশনিসংকেত। মুনাফার কথা আর অনেক প্রকাশক ফেসবুক সেলিব্রেটিদের বই প্রকাশ করে একুশের চেতনাকে আঘাত করছেন। কী ধরনের বই একুশে বইমেলায় প্রকাশ করা উচিত তার একটি নীতিমালা থাকা দরকার বলেও আমি মনে করি। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি বন্ধ থাকায় বইপ্রেমীরা মেলায় আসতে পারছেন না। এই গেটটি বন্ধ পেয়ে অনেকেই মেলায় প্রবেশ না করেই ফিরে যাচ্ছেন। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পুলিশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি বন্ধ রাখায় একুশের চেতনা তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।

 

উচ্চমূল্য দিয়েও মিলছে না প্রকাশনার জন্য জরুরি উপকরণগুলো

আরিফুর রহমান নাঈম

স্বত্বাধিকারী, ঐতিহ্য

কাগজের অস্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দেশের প্রকাশনা খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। একই সঙ্গে যোগ হয়েছে আমদানিনির্ভর প্লেটের দুষ্প্রাপ্যতা। জরুরি প্রকাশনায় উচ্চমূল্য দিয়েও মিলছে না এসব উপকরণ। এই অস্বাভাবিকতা এখন চরম পর্যায়ে। বর্তমান বাজার মূল্যে ছাপাকেন্দ্রিক কোনো কাজকর্মই করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটিও বন্ধ রাখা হয়েছে। যার কারণে কাকরাইল, শান্তিনগর, রামপুরা, মৌচাক এলাকা থেকে আগত অনেক বইপ্রেমীকে টিএসসি বা দোয়েল চত্বর হয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হয়। যার কারণে ঝামেলা এড়াতে অনেকেই মেলায় প্রবেশ না করেই বাসায় ফিরে যান বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়টি সমাধানে বাংলা একাডেমিকে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

 

কাগজের দাম বেশি বেড়েছে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ জরুরি

এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি

প্রকাশক, তাম্রলিপি

করোনা মহামারির পর বৈশি^ক সমস্যার কারণে শুধু কাগজের দাম নয় সব কিছ্রু দামই বেড়েছে। তবে কাগজের দাম যতটা বাড়ার কথা তার চেয়ে বহুগুণ বেশি বেড়েছে।

সিন্ডিকেটের কারণেই কাগজের দাম এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সিন্ডিকেট বাজার দখল করেছে। আমি আশা করব সরকার এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেবেন।

 

সরকারি নজরদারি থাকা উচিত

শরীফা বুলবুল

স্বত্বাধিকারী, বলাকা প্রকাশন

একটা সিন্ডিকেট কাগজের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে ফেলেছে। কেউ তাদের ধরছে না। অথচ অন্য কোনো সেক্টরে পণ্যের দাম এত দ্বিগুণ হয়নি। প্রতিবছর বইমেলা আর পাঠ্যবই ছাপার সময় এলেই তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াতে থাকে। এবার সুযোগ পেয়ে সেটা ডাবল করে ফেলেছে। তারপর অজুহাত তোলে আন্তর্জাতিক বাজারের। এ অন্যায় কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। যে কোনো মূল্যে সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। কাগজের দাম বাড়ার কারণে বইয়ের দাম বেড়ে যাবে, যে চাপটা গিয়ে পড়বে ক্রেতা পাঠকের ওপর। বই বিক্রিও কমতে পারে। এতে পাঠকও কমে আসবে। অথচ সরকার একটা বুদ্ধিবৃত্তিক সৃজনশীল সমাজ কিংবা প্রজন্ম গড়ে তুলতে যে উদ্যোগ নিচ্ছে বা টাকা ঢালছে, সিন্ডিকেটওয়ালাদের দুষ্কর্মের কারণে এসব আয়োজন ভেস্তে যাবে। সে জন্য সরকারি নজরদারি থাকা উচিত।

কী বলছেন পাঠক, দর্শনার্থীরা

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বইমেলায় আগত পাঠকদের বেশির ভাগই এবারের মেলা নিয়ে হতাশ। বইয়ের দাম বৃদ্ধি, মেলার অগোছালো পরিবেশ, শৌচাগারে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকা ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি বন্ধ রাখাসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন আছে পাঠক, দর্শনার্থীদের।  রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আগত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুম রহমান রানা বলেন, ‘এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও মেলাকে এখনো ধুলোমুক্ত করতে পারেনি বাংলা একাডেমি।’ কাকরাইল থেকে আগত তরুণ জুয়েল রানা বলেন, ‘অনেক আশা করে উচ্ছ্বাস নিয়ে মেলায় আসি। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-সংলগ্ন গেটটি পুলিশ কর্তৃক বন্ধ থাকাতে আমাদের ভোগান্তি বেড়েছে। গতবারও এই গেট দিয়ে মেলায় প্রবেশ করেছি। কিন্তু এবার নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পুলিশ এই গেটটি বন্ধ রেখে আমাদের বিড়ম্বনায় ফেলেছে।’ যাত্রাবাড়ী থেকে আগত আরাফাত রহমান বলেন, ‘ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধির কারণে বই খুব একটা কেনা যাচ্ছে না। যেখানে পাঁচটা বই কেনার কথা, সেখানে অনেকেই দুটি বই কিনছেন, আবার যাদের ১০টা বই কেনার কথা তারা হয়তো পাঁচটা বই কিনছেন।’ লালবাগ থেকে আগত তরুণী ফাহিমা হক টুম্পা বলেন, ‘মেলায় এসে প্রতিবারের মতো এবারও ধুলোর কবলে পড়তে হয়েছে। গোছানো ও পরিচ্ছন্ন মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমিকে আরও যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলেই মনে করছি।’

 

এক নজরে

মূল প্রবেশপথ এবার একটু সরিয়ে বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথের উল্টো দিকে অর্থাৎ মন্দির-গেটটি মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে...

এবার একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৩৮টি। মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মূল প্রবেশপথ এবার একটু সরিয়ে বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথের উল্টো দিকে অর্থাৎ মন্দির-গেটটি মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গতবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অংশে ১৮২টি স্টল এবং ১১টি প্যাভিলিয়ন ছিল। পাঠক, দর্শক এবং প্রকাশকদের সম্মিলিত আহ্বান ছিল- এবারের মেলায় যেন তাদের দৃশ্যমান অংশে সন্নিবেশ করা হয়। শিশুচত্বরটির পরিধি কম হওয়ায় এবার এই চত্বরটি মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে। এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি। সেখানে ১৫৩টিসহ পাঁচটি উন্মুক্ত স্থানে লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫% কমিশনে বই বিক্রি করছে। এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ও পুনর্মুদ্রিত ১৩৬টি বই।

 

এ পর্যন্ত প্রকাশিত বই

অষ্টম দিন শেষে প্রকাশনার পরিসংখ্যানে মেলা তার নিজস্ব গতিতে চললেও বিক্রিতে হোঁচট খেয়েছেন প্রকাশকরা। কাগজের দাম লাগামহীন বৃদ্ধি পেয়ে রিম ১৭০০ টাকা থেকে ৩৮০০ টাকায় উন্নীত হলেও বইয়ের প্রকাশনায় এর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পর প্রকাশনা স্বাভাবিকভাবেই চলছে। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্য মতে,  অষ্টম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৪টি। আর গত আট দিনে মেলায় মোট নতুন বই এসেছে ৬৪২টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৬০টি, প্রবন্ধ ৩৬টি, কবিতার বই ১৬৮টি, গবেষণা ১১টি, জীবনী ৩৪টি, রচনাবলি ৬টি, নাটক ৬টি, বিজ্ঞান ১৪টি, রাজনীতি ৬টি, অনুবাদ ১১টি, ছড়ার বই ৯টি, শিশুসাহিত্য ২১টি, মুুক্তিযুদ্ধের বই ১৭টি, ভ্রমণ ১৫টি, ইতিহাস ২৪টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ৫টি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ৬টি, রম্য/ধাঁধা দুটি, ধর্মীয় ১০টি, সায়েন্স ফিকশন ৭টি ও অন্যান্য ৬৪টি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর