বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ব্যাঙাচির জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন। এটার বয়স প্রায় ১৬ কোটি বছর। আর্জেন্টিনায় পাওয়া এই নতুন জীবাশ্মটি ২০ মিলিয়ন বছর পুরোনো পূর্বের রেকর্ডধারী জীবাশ্মের চেয়েও পুরোনো।
গবেষকদের মতে, জীবাশ্মটির মাথার খুলির অংশ, মেরুদণ্ডের অবশিষ্টাংশ এবং চোখ ও স্নায়ুর ছাপ স্যান্ডস্টোনের এক টুকরো পাথরে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
বুয়েনস আয়ার্সের মাইমোনিডেস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী এবং গবেষণার প্রধান লেখক মারিয়ানা চুলিভার জানান, এটি কেবল সবচেয়ে প্রাচীন ব্যাঙাচিই নয়, বরং সবচেয়ে নিখুঁতভাবে সংরক্ষিত একটি নমুনা।
গবেষকদের ধারণা, প্রায় ২১৭ মিলিয়ন বছর আগে থেকেই ব্যাঙেরা পৃথিবীতে বিচরণ করছিল। তবে তারা কীভাবে ব্যাঙাচি থেকে পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙে রূপান্তরিত হলো এবং এই বিবর্তন ঠিক কোন সময়ে শুরু হয়েছিল, তা আজও রহস্যে আবৃত। এই আবিষ্কার সেই বিবর্তন চক্রের সময়কালকে কিছুটা স্পষ্ট করেছে। গবেষণায় দেখা যায়, এই প্রাচীন ব্যাঙাচির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার, যা একটি বিলুপ্ত প্রজাতির বড় আকারের ব্যাঙের ছোট আকারের রূপ হতে পারে।
গবেষণায় সরাসরি জড়িত ছিল না তবে বিষয়টির উপর মত প্রকাশ করা স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের প্যালিওন্টোলজিস্ট বেন ক্লিগম্যান জানান, এই আবিষ্কারটি ব্যাঙের বিবর্তন প্রক্রিয়ার সময়কাল নির্ধারণে নতুন দিক নির্দেশনা প্রদান করছে।
এই গবেষণার ফলাফল বুধবার প্রখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল নেচারে প্রকাশিত হয়েছে। জীবাশ্মটি আজকের ব্যাঙাচিদের সাথেও বেশ মিল রয়েছে। এমনকি, এতে গিল কাঠামোর চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা আধুনিক ব্যাঙাচিরা জল থেকে খাদ্য কণিকা ছেঁকে খাওয়ার জন্য ব্যবহার করে।
ক্লিগম্যানের মতে, এই কৌশলটির দীর্ঘস্থায়ীতাই প্রমাণ করে যে, এই কৌশল তাদের বহু গণবিলুপ্তি অতিক্রম করতে সহায়ক হয়েছে। যুগ যুগ ধরে প্রাচীনকালের পরিবেশের পরিবর্তন সত্ত্বেও, ব্যাঙেদের বেঁচে থাকার কৌশলটি কার্যকর থেকে গেছে। সূত্র : গার্ডিয়ান
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল