লুপাস রোগের চিকিৎসায় এক নতুন উদ্ভাবনী থেরাপি চিকিৎসা ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসকদের মতে, এই নতুন সিএআর-পি (CAR T) সেল থেরাপি রোগীর কোষকে জিনগতভাবে পরিবর্তন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে রোগীদের সারাজীবন ওষুধ সেবনের প্রয়োজন নাও থাকতে পারে।
লুপাস রোগের উপসর্গ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে জয়েন্টে ব্যথা, ত্বকের সমস্যা, ক্লান্তি এবং প্রধান অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের আজীবন বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করতে হয় যার মধ্যে রয়েছে আইবুপ্রোফেন, স্টেরয়েড ট্যাবলেট বা ইনজেকশন, কিংবা অন্যান্য ইমিউনোসপ্রেসিভ ওষুধ।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ লুপাসে আক্রান্ত। রোগটি মূলত নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। যুক্তরাজ্যে CAR T-সেল থেরাপির মাধ্যমে তিনজন রোগীকে লুপাসের গুরুতর রূপ থেকে নিরাময় করা হয়েছে। থেরাপি নেওয়া রোগীদের মধ্যে কিছু রোগী এখন আর লুপাসের কোনো ওষুধ সেবন করতে হচ্ছে না এবং তারা রেমিশনে রয়েছেন।
ম্যানচেস্টার রয়েল ইনফার্মারির অধ্যাপক বেন পার্কার এই চিকিৎসায় কাজ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, লুপাস এমন একটি রোগ যা সারাজীবন চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। তবে এই থেরাপি সেই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। তিনি বলেন, ‘এই নতুন থেরাপি লুপাস গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
এর আগে CAR T-সেল থেরাপি মূলত ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। তবে গবেষকরা মনে করছেন, এটি লুপাসসহ অন্যান্য অনেক রোগেও কার্যকর হতে পারে। এই থেরাপিতে শরীরের কোষকে জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সমস্যা সৃষ্টিকারী কোষ শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে।
এই বছরের জুলাই মাসে ম্যানচেস্টার রয়েল ইনফার্মারিতে প্রথম ব্রিটিশ রোগী ক্যাথরিনের ওপর এই থেরাপি প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া, ইউনিভার্সিটি কলেজ হাসপাতালেও আরও দুইজন রোগীর ওপর এই চিকিৎসা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ বছর বয়সী ক্যাটি টিংকলার ৩০ বছর ধরে লুপাসে ভুগছিলেন। এই সপ্তাহে থেরাপি নেওয়ার পর জানান, আমি এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। সূত্র : গার্ডিয়ান
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল