ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন আখতার চৌধুরী বলেছেন, একটি দেশের উন্নয়নে সরকারের সহযোগী হিসেবে ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। বিশেষত, স্বাধীনতার পর ব্যাংক খাতের জোরালো ভূমিকায় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায়। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক দেশের প্রথম দেশীয় মালিকানায় বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক এখন সুপ্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে ন্যাশনাল ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ ব্যাংকের ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড অনুসারে দেশের সপ্তম বৃহত্তম ব্যাংক হচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
ডলার সংকটের কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে রেমিট্যান্স সংগ্রহে নজর দিয়েছে প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। হুন্ডি কমিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে আরও বেশি রেমিট্যান্স আনার জন্য বিদেশে কয়েকটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে ছয়টি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে থাকে।
হোসেন আখতার চৌধুরী বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক আমানতকারীদের জন্য চালু করেছে কয়েকটি আকর্ষণীয় প্রডাক্ট। যার অন্যতম হচ্ছে- ডাবল বেনিফিট স্কিম, যাতে সাড়ে আট বছরে জমাকৃত অর্থের দ্বিগুণ প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া ৭ দশমিক ২ শতাংশ সুদে সেঞ্চুরিয়ান আমানত স্কিম চালু করেছে। ৪৫ দিন মেয়াদি সোনার বাংলা স্কিম ও স্বাধীনতা স্কিমের আমানতকারীরা মেয়াদ পূর্তির আগে টাকা তুলে নিলেও কোনো চার্জ কর্তন করা হয় না। প্রতিটি স্কিমের বিপরীতে ঋণ সুবিধা রয়েছে। এ ধরনের প্রডাক্টগুলো দেশের জনসাধারণের জন্য বেশ আকর্ষণীয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
ন্যাশনাল ব্যাংক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের অগ্রযাত্রায় কিছু যুগান্তকারী ও অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করা হয়েছিল যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দেশি ব্যাংক হিসেবে প্রথম মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডেড ক্রেডিট কার্ড চালু করে ন্যাশনাল ব্যাংক। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরণও বাংলাদেশে প্রথম শুরু করে ন্যাশনাল ব্যাংক। প্রায় ৬ হাজার জনের কর্মীবাহিনী দিয়ে ২২১টি শাখা এবং ৩৩টি উপশাখা থেকে সারা দেশে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক। গ্রাহকদের জন্য নিত্যনতুন সার্ভিস প্রচলনের পাশাপাশি আগামীতে আমরা রপ্তানি বাড়ানোর দিকেও নজর দিয়েছি। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতিতে রপ্তানি নিঃসন্দেহে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে। রপ্তানি খাতের উদীয়মান ইউনিটগুলোকে অর্থায়ন করতে হবে। ছোট ছোট তৈরি পোশাক অথবা অপ্রচলিত পণ্যের দিকেও আমরা নজর দিচ্ছি। বড় বড় ঋণ দিয়ে অনেক বেশি মুনাফা করা গেলেও ছোট ঋণ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে আরও বেশি এগিয়ে নেওয়া যায়। আমরা বিশ্বাস করি যে, অতীতের ঐতিহ্যকে লালন করেই ন্যাশনাল ব্যাংক আগামী দিনগুলোতে দৃপ্ত পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাবে।