শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

উইকেটেই যত ভয়

‘আমার মনে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের চেয়েও কঠিন ছিল উইকেটটা। তবে এরপরও আমরা ভালো জায়গায় বোলিং করতে পেরেছি। আর যেহেতু নিউজিল্যান্ডের এমন কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা নেই, তাই তারা ধুঁকেছে বলে আমার মনে হয়।’

আসিফ ইকবাল

উইকেটেই যত ভয়

২০১১ থেকে নিয়মিত টি-২০ ক্রিকেট ম্যাচ হচ্ছে মিরপুর স্টেডিয়ামে। কিন্তু উইকেটের এমন দুর্বোধ্য আচরণ ছিল না কখনো। পাঁচ ম্যাচের অস্ট্রেলিয়া সিরিজ এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে উইকেটের ব্যবহার ছিল রীতিময় রহস্যময়। চার-ছক্কার খেলা টি-২০ ক্রিকেটে রান করতে নাভিশ্বাস উঠেছে দলগুলোর। নাজেহাল হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। গত ৬ ম্যাচে মিরপুরের উইকেটে সর্বোচ্চ দলগত স্কোর ১৩১ এবং সর্বনিম্ন ৬০। শেষ দুই ম্যাচের স্কোর আবার অবিশ্বাস্য! ৬০ ও ৬২। এমন উইকেট নিয়ে এখন শঙ্কিত বিসিবি। যদিও ম্যাচগুলোতে আন ইভেন বাউন্সের জন্য কোনো ব্যাটসম্যানই আহত হননি। তাই আইসিসির ডি মেরিট পয়েন্ট পাওয়ার শঙ্কায় নেই আপাতত। তবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয়ের পর টাইগারদের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন, যে উইকেটে খেলা হয়েছে, সেটা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের চেয়েও বাজে। এতেই প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে।

১৭ অক্টোবর-১৪ নভেম্বর ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-২০ বিশ্বকাপ। ম্যাচগুলো হবে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। আসরে সাফল্য পেতে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের এটাই যেহেতু শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ সিরিজ, তাই নিউজিল্যান্ড সিরিজের উইকেট হওয়া উচিত ছিল ব্যাটিং সর্বস্ব। কিন্তু খেলাগুলো হচ্ছে ধীরগতির ও লো বাউন্সের উইকেটে। এমন উইকেটে প্রস্তুতি নিয়ে কতটা সাফল্য পাবে, সেটি কোটি টাকার প্রশ্ন। সেজন্যই হয়তো টাইগারদের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আশা করেছিলেন, নিউজিল্যান্ডের ম্যাচগুলোতে স্কোর যেন হয় ১৫০-১৬০-এর মতো। কিন্তু কোচের আশা পূরণ হয়নি।

মিরপুরের উইকেটে দুইশ’র উপরে স্কোর হয়েছে তিন ম্যাচে। বাংলাদেশ দুবার এবং নিউজিল্যান্ড একবার। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২১১ রান এবং ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২০০ রান করেছিল টাইগাররা। নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে ২০৪ রানের ইনিংস খেলেছিল ২০১৩ রানে।   

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টি আজ। কোনো উইকেটে খেলা হবে নিশ্চিত নয়। কেননা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ম্যাচগুলো হয়েছিল মাত্র দুটি উইকেটে। তাই রানও হয়নি। ম্যাচগুলোতে ধীরগতির উইকেটে রান করতে ব্যাটসম্যানদের এতটাই  লড়াই করতে হয়েছিল যে, মাত্র ২টি হাফসেঞ্চুরি ছিল সিরিজে। সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৩১ ও সর্বনিম্ন স্কোর ৬২। উইকেটের আচরণের বিস্মিত সবাই ধরেই নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডে সিরিজেও একই আচরণ হবে। কিন্তু এতো বাজে হবে ভাবাই যায়নি। নিউজিল্যান্ড এখানে প্রথম ম্যাচেই আটকে গেল ৬০ রানে। সে রান টপকাতে বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে ১৫ ওভার। সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের চেয়েও কঠিন মনে হয়েছে প্রথম ম্যাচের উইকেট, ‘আমার মনে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের চেয়েও কঠিন ছিল উইকেটটা। তবে এরপরও আমরা ভালো জায়গায় বোলিং করতে পেরেছি। আর যেহেতু নিউজিল্যান্ডের এমন কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা  নেই, তাই তারা ধুঁকছে বলে আমার মনে হয়।’

বুধবারের উইকেটে মুস্তাফিজের স্লোয়ার, সাইফুদ্দিনের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং সাকিব ও নাসুমের ঘূর্ণিতে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের স্থায়িত্ব

ছিল মাত্র ১৬.৫ ওভার। ৬০ রান টপকাতে মাহমুদুল্লাহ বাহিনীকে ব্যাট করতে হয়েছে ১৫ ওভার পর্যন্ত। ম্যাচে ১২২ রান তুলতে দুই দল ওভার খরচ করেছেন ৩১.৫ ওভার। বাউন্ডারি হয়েছে মাত্র ৮টি!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর