আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসান বোলিংয়ে আসেন ৬৬তম ওভারে। অধিনায়কের দেরিতে বোলিংয়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করেন টাইগার স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো সময়ক্ষেপণ করেননি সাকিব। ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই আঘাত হানেন। মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন সাকিব শুধু বল হাতে নয়, ব্যাটিংয়েও ছিলেন দুর্দান্ত। সাকিবের সঙ্গে দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন আরেক বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দুই বাঁ-হাতি স্পিনারের ঘূর্ণির ভেল্কিতে দ্বিতীয় দিনেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে সাকিব বাহিনী। সাকিব ও তাইজুলের উজ্জ্বল দিনটিকে একা নিজের করে নেন বর্ষিয়ান টেস্ট ক্রিকেটার ও সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দারুণ ছন্দে থাকা মুশফিক ৮৫ টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০তম সেঞ্চুরি করেন ১২৬ রানের ইনিংস খেলে। সেঞ্চুরির সংখ্যায় তার চেয়ে এগিয়ে আরেক সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক। মুমিনুল ৫৬ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন ১১টি। টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ৭০ টেস্টে ১০টি।
টেস্টের প্রথম দিন আয়ারল্যান্ড ২১৪ রানে অলআউট হয় তাইজুলের ফাইপারে (৫/৫৮)। বাংলাদেশ দিন শেষ করেছিল ২ উইকেট ৩৪ রান তুলে। গতকাল মুশফিকের ১৬৬ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১২৬, সাকিবের ৮৪ বলে ৮৭ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ৮০ বলে ৫৫ রানে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৬৯ রান। ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে সফরকারীরা ৪ উইকেটে ২৭ রান তুলে। ইনিংস হার এড়াতে এখন ১২৮ রান করতে হবে আয়ারল্যান্ডকে।
আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৬০ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি করে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান মুশফিক। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন টেস্টেও। গতকাল ৪০ রানে ৩ উইকেটের পতনের পর অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়েন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুই সিনিয়র ক্রিকেটার ৩১.২ ওভারে ১৫৯ রান যোগ করেন। বিশেষ করে সাকিব খেলেছেন ওয়ানডে স্টাইলে। ৮৭ রানের ইনিংসটি খেলেন টাইগার অধিনায়ক ৯৪ বলে ১৪ চারে। প্রথম ৫০ রান করেন ৪৫ বলে ৯ চারে। মুশফিক ১০০ রান করেন ১৩৫ বলে ১৩ চার ও ১ ছক্কায়। প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেন ৬৯ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায়। ছন্দে থাকা মুশফিক গত ১০ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন ৩টি এবং হাফসেঞ্চুরি একটি। ২০২২ সালের মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেন মুশফিকু। চট্টগ্রামে ১০৫ ও মিরপুরে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। মুশফিকের সর্বশেষ ১০ ইনিংস যথাক্রমে ১২৬, ৯, ২৬, ২৩, ২৮, ২৩, ১৭৫*, ১০৫, ১ ও ৫১।
মুশফিক ও সাকিব দুই তারকা ক্রিকেটার গতকাল জুটি বেঁধে ১৫৯ রান যোগ করেন ১৮৮ বলে। জুটি বেঁধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে রান করেছেন দুই তারকা। ৬৫ ইনিংসে ৪৩.১০ গড়ে রান করেছেন ২৮০২। দুজনের শতরানের জুটি ৫টি এবং হাফসেঞ্চুরির জুটি ১৭টি। জুটিতে সর্বোচ্চ ৩৫৯ রান করেছিলেন ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। অবশ্য জুটিতে ৫টি শতরান করেছেন জাভেদ ওমর গুল্লু ও হাবিবুল বাশার। জুটিতে দুই সাবেক ক্রিকেটার রয়েছেন ৫ নম্বরে। দুজনে ৩২ ইনিংসে ৪১.২৮ গড়ে রান করেছেন ১৩২১। জুটিতে সর্বোচ্চ রান করায় দুইয়ে রয়েছেন ইমরুল কায়েশ ও তামিম ইকবাল। দুজনে ৫৮ ইনিংসে করেছেন ৪৩.৪৪ গড়ে ২৪৩৩ রান। সর্বোচ্চ রানের জুটি পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় ৩১২। মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম ৩০ ইনিংসে জুটি বেঁধে ৫৩.০৬ গড়ে রান করেছেন ১৫৩৯। মুমিনুল হক তামিম ৩০ ইনিংসে জুটি বেঁধে যোগ করেছেন ১৩৮৬ রান।