আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে ক্রিকেট। নিয়মিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলছে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ ম্যাচে সাফল্য পাচ্ছে। অথচ মাঠের অভাবে ভুগতে হয় বিসিবিকে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম, জহুর আহমেদ চৌধুরী ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম ছাড়া আর কোথাও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় না। এক সময় নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা স্টেডিয়াম, বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম, খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। এসব মাঠে এখন আর কোনো ম্যাচ হয় না। এমনকি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও নিয়মিত হয় না। জমজমাট ঢাকা লিগের খেলার জন্য মাঠ ভাড়া করতে হয়। আওয়ামী সরকারের আমলের বোর্ড খেলাকে রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে ফেলে মাঠ ভাড়া করে খেলিয়েছে। বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নিয়েই পূর্বাচলে অর্থের অপচয়ের হাজার কোটি টাকার নৌকা স্টেডিয়ামের প্রজেক্ট বাতিল করেন। স্টেডিয়াম তৈরির চেয়ে বিসিবি এবার নজর দিচ্ছে খেলার মাঠ তৈরিতে। ইতোমধ্যে পূর্বাচলে যে সাড়ে ৩৭ একর জমি রয়েছে বিসিবির, সেখানে স্টেডিয়ামের জায়গায় দুটি মাঠ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া পুবেরগাঁও ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দুটি মাঠে নিয়মিত খেলার চিন্তাভাবনা করছে। ফতুল্লা, বগুড়ার চান্দু ও খুলনা এবং রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামগুলোর সংস্কার করার কাজ শুরু করেছে বিসিবি। বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘ক্রিকেটে সাফল্য পেতে হলে মাঠে খেলা থাকতে হবে। ক্রিকেটাররা যাতে নিয়মিত খেলতে পারেন, সেজন্য বিসিবি মাঠ তৈরি করতে চাচ্ছে বেশি করে। আমরা ফতুল্লা, চান্দু, খুলনা স্টেডিয়ামের সংস্কারের কাজ করব। এর মধ্যে ফতুল্লা স্টেডিয়ামে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা পুবেরগাঁও ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দুটি মাঠও নিতে চাইছি। খেলার জন্য মাঠ পুনর্গঠনের দিকেই মনোনিবেশ করবে বিসিবি।’ শুধু রাজনৈতিক কারণে চান্দু স্টেডিয়াম থেকে খেলা সরিয়েছে আগের বোর্ড। ২০০৬ সালে এই মাঠে শ্রীলঙ্কাকে ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বগুড়ায় দেড় যুগ ধরে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় না। খুলনায় ২০১৫ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ড্র করেছিল তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড ৩১২ রানে ভর করে। ফতুল্লায় ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডকে ওয়ানডেতে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ফতুল্লায় ২টি টেস্ট, ১০টি ওয়ানডে ও ৪টি টি-২০ ম্যাচ হয়েছে। চান্দু স্টেডিয়ামে একটি টেস্ট ও ৫টি ওয়ানডে এবং খুলনায় ৩ টেস্ট, ৪ ওয়ানডে ও ১০টি টি-২০ ম্যাচ হয়েছে। স্টেয়িামগুলোকে সংস্কার করলেও আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলানোর চিন্তা নেই। তবে অনূর্ধ্ব-১৯, এইচপি, ‘এ’ দল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলানোর পরিকল্পনা করেছে।