চার বছর মেয়াদে দায়িত্ব থাকলেও দ্বিতীয়বার কাজী সালাউদ্দিন সভাপতি হওয়ার পরই সবাই যখন বুঝতে পেরেছেন তার মাধ্যমে ফুটবলে অবনতি ছাড়া কিছুই হবে না। তখন থেকেই সালাউদ্দিনকে হটানোর ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সালাউদ্দিন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ফুটবলের অভিভাবক ছিলেন। অথচ তাঁরই নিষ্ক্রিয়তায় ফুটবল এমন সংকট অবস্থা তৈরি হয়েছে তা থেকে বের হওয়া মুশকিল। একটা কথা অনেকে বলেন বা বলছেন যে, সালাউদ্দিন বিদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের ফুটবলে অন্ধকার কাটবে না। এখন ফেডারেশনে নতুন সভাপতি বা নতুন কমিটি হবে। তাহলে কি অন্ধকার থেকে বের হয়ে ফুটবল আলোর দেখা পাবে? ইতোমধ্যে তরফদার রুহুল আমিন তো ঘোষণা দিয়েছেন তিনি বাফুফের সভাপতির পদে প্রার্থী হবেন। তরফদার সরাসরি বলেননি, একজন তাকে সমর্থন করলে সম্মতি প্রকাশ করেন। আসলে এ কালচার তো নতুন নয়। এ দৃশ্য খুবই চেনা বা পরিচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে এবার নির্বাচনটা কেমন হবে? স্বৈরাচার হটিয়ে দেশে এখন গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই বড় ফেডারেশন ফুটবলের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এখানে তো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এখনই যেসব নমুনা দেখা যাচ্ছে, তা ভালো ঠেকছে না। কারও কারও মতে, আওয়ামী লীগ আমলের সেই চেনা দৃশ্যই দেখা মিলছে। তরফদার সভাপতি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, ঐক্যমতের প্যানেল গড়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। জানি না ভিতরে ভিতরে তিনি প্যানেল ঠিক করে ফেলেছেন কি না? সালাউদ্দিনও প্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচন করেছিলেন। এতে কি ফুটবলে উন্নয়ন ঘটেছিল? সত্যি বলতে কী যোগ্যতার প্রমাণ দিতে মেয়াদের পর মেয়াদ লাগে না। কাজেই প্রমাণ দেয় তিনি যোগ্য না অযোগ্য। ২০২০ সালের সালাউদ্দিনের কমিটির কার্যক্রম নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিল না। ফিফার ফান্ডও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এরপরও ফুটবলের চাকা সচল ছিল। বিশেষ করে ঘরোয়া আসরে নতুনত্ব আসে। স্পন্সর যোগাড় করেছেন এমনই ব্যক্তি যেটা তার কাজ ছিল না। জাতীয় দলের ভেন্যু, ম্যাচ আয়োজন করাটা অসম্ভব হলেও তা করা গেছে। নারী ফুটবল জেগেছে কার মাধ্যমে? নতুন কমিটিতে প্রথমবার এসেও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেই চলেছেন। এখন সেই ধরনের যোগ্য লোকের হাতে ফুটবল নিরাপদ কি না তা একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে হয়। আাওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাফুফের নির্বাহী কমিটি অনেকে পালিয়েছেন। কেউবা আবার নিষ্ক্রিয়। এর মধ্যেও ফুটবল উন্নয়নে একজন কাজ করে যাচ্ছেন। এমন ত্যাগী সংগঠককে মূল্যায়ন করা কী ফুটবলের জন্য মঙ্গল ডেকে আনবে না? অন্তর্বর্তী সরকার তো যোগ্য ও সৎদের প্রাধান্য দিচ্ছে। সেখানে ফুটবল ঘিরে ভাবা তো যেতেই পারে। প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু অতীত খতিয়ে দেখতে হবে ফুটবল যেন আবারও সালাউদ্দিনের ছায়ায় বন্দি না হয়ে যায়।