শেষ হলো জমজমাট জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ। অনেক দিন পর এ খেলা ঘিরে দেশে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হলো। সত্তর ও আশির দশকে ঘরোয়া ব্যাডমিন্টন মানেই ইনডোরে উপচেপড়া দর্শকের সমাগম। সেই চেহারা হারিয়ে যেতে বসেছিল। অনিয়ম ও অযত্নে জনপ্রিয় এ খেলা হুমকির মুখে ছিল। অবশেষে ব্যাডমিন্টনে ফিরল হারানো দিনের জৌলুস। অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে জাতীয় প্রতিযোগিতা বর্ণাঢ্যভাবে আয়োজিত হলো। আর তা চমকে ভরা। দল সংখ্যা, প্রাইজমানি, প্রতিযোগী সবকিছু মিলিয়ে নতুনত্বে ভরা দেশসেরা এ আসরের পর্দা নামল গতকাল। যা ১৪ জুলাই উডেন ফ্লোরে গড়িয়েছিল।
প্রতিযোগিতায় পুরুষ এককে পুরোনো রাজার দেখা মিলল। দেশ পেয়েছে ব্যাডমিন্টনের নতুন রানি। গতকাল শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত পুরুষ এককে বাংলাদেশ আনসারের আবদুস সোয়াদ ফাইনালে আল আমিন জুমারকে ২১-১৪, ২১-৪ গেমে সহজে হারিয়ে টানা তিনবার অর্থাৎ হ্যাটট্রিক শিরোপার খেতাব পান। রাজা পরিবর্তন না হলেও দেশ পেয়েছে ব্যাডমিন্টনের নতুন রানি। নারী একক ফাইনালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাছিমা খাতুন ১২-২১, ২১-১৭ ও ২১-১৭ গেমে উর্মি আক্তারকে হারিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়ন হন। উল্লেখ্য, উর্মি জিতলে টানা তিন শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়তেন। তা আর হতে পারেনি। প্রথম সেটে জিতলেও পরে আর পেরে ওঠেননি।
রাজত্ব ধরে রাখার পর সোয়াদ বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমি খুশি, যা আমাকে সামনে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তবে টুর্নামেন্টে নামার আগে আমি কিছুটা হলেও চিন্তিত ছিলাম। চোটের জন্য একমাস অনুশীলন করতে পারিনি। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো খেলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। সব মিলিয়ে ভালো একটা টুর্নামেন্ট শেষ হলো।’ নাছিমার কাহিনিটা আবার ভিন্ন। প্রতিপক্ষ উর্মি আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন। তাকে হারানো কঠিনই ছিল। প্রথম সেটে হারও মানেন। কিন্তু নাছিমা পরের দুই সেটে দুর্দান্ত খেলে শিরোপার খাতায় নাম লেখান। উইম্বলডন জিতে প্রতিযোগীরা যেমন কোর্টে শুয়ে পড়েন। নাছিমাকেও দেখা গেল এভাবে উদ্যাপন করতে। গ্যালারি থেকে নেমে আসেন তার মা জাহেদা বেগম। মেয়েকে জড়িয়ে উল্লাস করতে থাকেন। নাছিমা আরও এগিয়ে যেতে চান। সামনে এসএ গেমসে পদক জিততে চান তিনি।