চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, অধিকাংশ অপরাধের নেপথ্যের কারণ হচ্ছে মাদক। সমাজের এই ভয়াবহ ব্যধি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় সচেতনতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা। পাশাপাশি সন্তানদের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার চান্দ্রা বাজার ঈদগা ময়দানে সচেতন মহলের উদ্যোগে মাদকবিরোধী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আলোচনা সভায় বক্তব্য দিয়ে মাদকের যেসব তথ্য তুলে ধরেছেন, সেসব বিষয় খুব দ্রুত সমাধান করা যাবে না। তবে পুলিশ ফাঁড়ি না করা গেলেও এখন থেকে এই ইউনিয়নে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলবে। গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করবে। যারা তথ্য দিয়ে মাদকে জড়িতদের ধরিয়ে দিবেন এমন প্রথম ১০জনকে ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হবে। অবশ্যই এসব অভিযান সফল হতে হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, আপনারা অনেকে বলেছেন মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের তথ্য দিলে ব্যক্তির নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা হয়। আপনাদের নিরাপত্তা আমি নিশ্চিত করবো।
সন্তানদের শিশু বেলা থেকে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। যার মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা আছে সে অপবিত্র থাকতে পারে না। সে মসজিদে নামাজ পড়তে কিংবা মন্দিরে পুঁজা করতে গেলে অপবিত্র অবস্থায় যাবে না। যার মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা আছে সে কখনো অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজে জড়িত হবে না। অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি অবশ্যই সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন।
এসপি মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, শুধুমাত্র চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে প্রতিমাসে গড়ে ৯০-১০০টি মাদক মামলা হচ্ছে। আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদ তাজুল ইসলামের বাবা আনোয়ার উল্যাহ পাটোয়ারী।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের আইন কর্মকর্তা ও সমাজ সেবক এড. মো. শাহজাহান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুকুর চাকমা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা বিভাগীয় সংগঠনিক সম্পাদক শেখ জয়নাল আবেদীন, চান্দ্রা বাজার নুরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এটিএম মোস্তফা হামিদী, চান্দ্রা বাজার ইয়াকুব আলী স্মারক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন, আইনজীবী আব্দুল কাদের খান প্রমুখ।
সভার সঞ্চালনায় ছিলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শিক্ষক মোরশেদ আলম ও মোহাম্মদ সাব্বির মিয়া।
এড. মো: শাহজাহান খান বলেন, আমাদের ইউনিয়নে মাদকের সাথে জড়িত এবং অপরাধ থেকে ফিরে আসতে চান তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরীর জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো। আমাদের প্রবাসীরাও এই কাজে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ ইউনিয়নের সর্বস্তরের লোকজনের অংশগ্রহণে সভাপূর্বে একটি র্যালি বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সভায় একটি মাদক বিরোধী অভিযোগ বক্স রাখা হয়। সেখানে স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্যোগে মাদকে জড়িতদের তথ্য দিয়ে (তালিকা) বক্সের মধ্যে রাখবেন। সভাশেষে সভার উদ্যোক্তা এড. মো. শাহজাহান খান পুলিশ সুপারের হাতে ওই বক্সটি তুলে দেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ