'এখানে আমার অনেক বন্ধু আছেন। কিন্তু কেউই আমার মতো ভাগ্যবান নন। আমি একমাত্র ক্রিকেটার যিনি চার প্রজন্মের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি। ক্যারিয়ারের শুরু ছিল আতাহার ভাইদের সঙ্গে। এরপর আকরাম ভাই, বুলবুল ভাই, পাইলট, সুজন। সবশেষে সাকিব, তামিম, আশরাফুলদের সঙ্গে খেলেছি। অবশ্য আজকের পর আর ক্রিকেট খেলব না ভাবতেই কষ্ট লাগছে। কিন্তু বাস্তবতাও মেনে নিতে হবে। সেটা মেনে নিয়েই ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানালাম।' গতকাল সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার পর মিডিয়ার মুখোমুখিতে নিজের অভিব্যক্তি এভাবেই প্রকাশ করেন জাভেদ ওমর বেলীম গুল্লু। জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার ক্রিকেটকে বিদায় জানান মাঠ থেকে। তবে বিদায়ী ম্যাচটি ছিল না কোনো প্রতিযোগিতামূলক। জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সাংবাদিকদের এক প্রদর্শনী ক্রিকেট ম্যাচ খেলে তুলে রাখছেন ব্যাট, প্যাড, গ্লাভস।
প্রায় ১৯ বছর আগে ১৯৯৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু গুল্লুর। ক্যারিয়ার টানা খেলে গেছেন ২০০৭ সাল পর্যন্ত। এরমধ্যে খেলেছেন ৪০টি টেস্ট ও ৫৯টি ওয়ানডে। টেস্টে ২২.০৫ গড়ে রান করেছেন ১৭২০ এবং ওয়ানডেতে ২৩.৮৫ গড়ে রান করেছেন ১৩১২। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার উনিশ বছরের হলেও ক্রিকেট ক্যারিয়ার আরও লম্বা। প্রায় ২৫ বছরের। এরমধ্যে নিজেকে আলাদা করে পরিচিত করেছেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। খুব বেশি স্ট্রোক ছিল না হাতে। কিন্তু দলের প্রয়োজনে শক্ত হাতে হাল ধরতে তার জুড়ি ছিল না। নিজেকে কখনোই আশরাফুল, সাকিব, তামিদের মতো প্রতিভাবান মনে করেননি। কিন্তু নিজেকে তাদের অবস্থানে তুলে আনতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তাই ৩৮ বছর বয়সেও নিজেকে রেখেছেন ফিট। চার প্রজন্মের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার ব্যাখ্যা দিতে যেয়ে গুল্লু বলেন, 'আমি কখনোই প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলাম না। কিন্তু আমি ছোট থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম, ক্রিকেট, ফুটবল ও হকি যাই খেলি না কেন, সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম। সেটাই করেছি। করেছি বলেই আমি আতাহার আলী, বুলবুল, সুজন, পাইলট, সাকিবদের সঙ্গে খেলতে পেরেছি। আমি মনে করি জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রে সফল হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।'
গতকাল মিরপুর একাডেমি মাঠে বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অজ্ঝাসোসিয়েশন (বিএসজেএ) ও সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রদর্শনী ক্রিকেট ম্যাচ হয়। খেলায় জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা জিতেছেন ৯৩ রানে। সাবেক ক্রিকেটাররা প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৮১ রান করে। খালেদ মাহমুদ সুজন ৬৭, খালেদ মাসুদ পাইলট ৫৩, জাভেদ ওমর বেলীম গুল্লু ৪০, আমিনুল ইসলাম বুলবুল ৪১ রান করেন। ক্রীড়া সাংবাদিকদের মধ্যে ইসাম ২ উইকেট নেন। জবাবে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান করে ক্রীড়া সাংবাদিকরা। রোহান ১০৬, আসিফ ইকবাল ২২, মাজহার ২০ রান করেন। ম্যাচের ফল যাই হউক না কেন, খেলেছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল, জাভেদ ওমর বেলীম গুল্লু, খালেদ মাহমুদ সুজন, পাইলট, হাসিবুর রহমান শান্ত, মোর্শেদ আলী খান সুমন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, নিয়ামুর রশিদ রাহুল, সানোয়ার হোসেন, ঝড়ু, মিজানুর রহমান বাবুল, এনামুল হক মনি। না খেললেও মাঠে উপস্থিত ছিলেন তামিম ইকবাল, এনামুল হক জুনিয়র।