শ্বাসকষ্টজনিত কারণে সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানির সৃষ্টি হয়ে থাকে। হাঁপানি মানুষের দেহের এক অসহনীয় ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। আর এই শ্বাসকষ্টের উপদ্রব হয় নানারকম অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী অ্যালার্জেনের কারণে। তবে ধুলোবালিতেই শ্বাসকষ্টের নীরব ঘাতক বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির অ্যালার্জেনগুলো হচ্ছে- ধুলোবালি, ফুলের রেণু, মাইটের মল, পরিবেশের ধুলা, পোষা প্রাণীর লোম ইত্যাদি। বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা ধুলোবালি, অফিসের খাতাপত্র বা ফাইলে জমে থাকা ধুলা এবং রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত যে ধুলো উড়ছে তা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রধান উদ্রেককারী। ধুলোবালি মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অন্য অ্যালার্জেনের চেয়ে ধুলা খুব সহজে নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। ফলে খুব দ্রুত সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের বা সব জায়গায় ধুলাই যে হাঁপানি বা অ্যাজমার জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। ঘরে বা অফিসে জমে থাকা ধুলা রাস্তার ধুলার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। রাস্তার ধুলাতে থাকে অজৈব পদার্থ- যাতে হাঁপানি, অ্যাজমা, সর্দি, কাশি, হাঁচি বা শ্বাসকষ্টের তেমন কষ্ট হয় না। তবে রাজপথে যে যানবাহন চলাচল করে তাতে যে ধুলোবালি, ধোঁয়া থাকে তা হাঁচি বা শ্বাসকষ্টের উদ্রেককারীর অন্যতম পদার্থ। পুরনো জমে থাকা ধুলা বা ময়লা হাঁপানির জন্য ক্ষতিকর; কারণ এতে মাইট, ফুলের রেণু, তুলার আঁশ, পোষা প্রাণীর লোম ব্যাকটেরিয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক মিশে থাকে। যাদের ধুলার কারণে শ্বাসকষ্ট অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়, তাদের কতগুলো বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে- এমন পরিবেশে চলা যাবে না যেখানে ধুলার পরিমাণ বেশি। ঘর পরিষ্কার এবং বিছানাপত্র ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাইট বেড়ে উঠার উপযুক্ত পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অ্যালার্জি প্রতিরোধক টিকা ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা। ইমিউনোথেরাপি হচ্ছে এমন এক ধরনের ওষুধ যা কিনা দেহের ভেতরে অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। সুতরাং ধুলোবালি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
লেখক : বক্ষব্যাধি ও অ্যাজমা
বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা ফোন : ০১৭১১-১৭১৬৩৪