ব্যাডমিন্টন বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি অভ্যন্তরীণ খেলা। পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না হৃদস্পন্দন বাড়ে অথবা মৃদু শ্বাসকষ্ট হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যাডমিন্টন খেলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে তা অবশ্যই হতে হবে মধ্যবয়সে এবং প্রতিদিন। তাহলে পরবর্তী ২০ বছরের জন্য মৃত্যুঝুঁকি কমে যায় প্রায় ২৩%। এমনকি এতে আয়ুও বাড়ে প্রায় দুই বছর। সর্বোচ্চ উপকারিতা আমরা এ ব্যাডমিন্টন খেলা থেকে পেতে পারি, যদি দিনে ৩০ মিনিট ব্যাডমিন্টন খেলি।
শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো দিক হলো, ব্যাডমিন্টন খেলার মাধ্যমে খারাপ কলেস্টেরল রক্তে কমে যায় ও ভালো কলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। আমাদের শরীরে পুরো কলেস্টেরল, ট্রাইগি্লসারাইড, এলডিএল (খউখ), ভেরি লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (ঠখউখ), এরা সবাই খারাপ কলেস্টেরল এবং হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (ঐউখ) হলো একমাত্র ভালো কলেস্টেরল।
যেহেতু খারাপ কলেস্টেরল রক্তবাহিকার আকার কমায়, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়; সেহেতু তাদের পরিমাণ যদি রক্তে কমে তবে তা একজন মানুষের জন্য অনেক শারীরিক সুফলতার কারণ হয়। দৈনিক ব্যাডমিন্টন খেলায় শরীরের রক্তচাপও কমে যা উচ্চ রক্তচাপ/হাইপারটেশানের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এমনকি এ খেলা কোনো ধরনের ওষুধ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ সারানোর জন্য যথেষ্ট। যদি ওষুধের প্রয়োজনও হয়, তবে তার পরিমাণ কম লাগে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারী দিক হলো, দৈনিক ব্যাডমিন্টন খেলা হৃদরোগের জন্য ভালো একটি প্রতিরোধব্যবস্থা, বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক। এ ছাড়াও এতে হৃদপেশীয় শক্তি বাড়ে এবং রক্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা কমে যায়। এমনকি যেসব মানুষের বেশ আগে থেকেই হৃদরোগ আছে, তারাও সুফল পেতে পারে ব্যাডমিন্টন খেলে, তবে তা অবশ্যই হতে হবে তাদের সহ্যশক্তি অনুযায়ী এবং মেডিকেল তত্ত্বাবধানে, উপদেশ ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
খেলার পর ভালো বোধহয়, নিজেকে বেশ শক্তিশালী, অত্যন্ত আগ্রহান্বিত ও প্রাণবন্ত মনে হয়। অবসাদ, দুশ্চিন্তা, চাপ এগুলো দূর হয়ে যায় এবং নিজের ওপর আত্দবিশ্বাস বাড়ে। রাতে ভালো ঘুম উপভোগ করতেও সাহায্য করে, এতে আগের শারীরিক সমস্যাগুলোও কমে যায়, যেগুলোর প্রধান কারণ ছিল ঘুম না হওয়া।
তাই বলছি, প্রিয় বন্ধুরা, আর কেন দেরি? নিজের শরীর, মন সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে আজ থেকেই হয়ে যাক ব্যাডমিন্টন!!!
লেখক : অধ্যাপক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা, ফোন : ০১৭১১৬১৭৭৩৫