শরীর সু্স্থ রাখার জন্য মনের সুস্থতা অনেক বেশি প্রয়োজন। অনেক সময় মন খারাপ থাকলে শরীরের সুস্থতাও কোনো কাজে আসে না। অবস্বাদগ্রস্ত মনে হয় নিজেকে। কোনো কাজেই তেমন শক্তি পাওয়া যায় না। স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকে না শরীরেরও। এ কারণেই মনের সুস্থতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম মানুষের শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে। খেলাধুলার ফলেও মানুষ নিজেকে সুস্থ রাখতে পারে। এর ফলে মনও সতেজ থাকে। তবে সব রকমের ব্যায়াম কিংবা খেলাধুলাতেই মন ভালো থাকে না। সারফিং মন ভালো রাখার জন্য চমৎকার একটি খেলা। সমুদ্রের সুউচ্চ ঢেউয়ের মাথায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। মাঝেমধ্যে ঢেউয়ের ভেতর হারিয়ে যাওয়া কিংবা ঢেউয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিবিম্ব দেখা, এই অনুভূতি কেমন তা কেবল একজন সারফারই বুঝতে পারেন। সারফিং সেই অর্থে বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি খেলা। সমুদ্রের বুকে ছুটে বেড়ানোর অর্থ এখানে স্পিড বোটে চড়ে কিছুদূর চক্কর দেওয়া কিংবা খুব বেশি সাহসী হলে কিছুদূর সাঁতরে আসা। পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত বাংলাদেশে হলেও সারফিং এখানে অপরিচিতই রয়ে গেছে। অথচ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া কিংবা তাহিতির চেয়ে কোনো অংশেই কম সুন্দর নয় আমাদের কঙ্বাজার। সারফিং খেলার জন্য প্রয়োজন সার্ফবোর্ড। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি এই বোর্ডও বিভিন্ন রকমের হতে পারে। লঙ বোর্ড, স্ট্যান্ড আপ প্যাডেল বোর্ড, ওয়েব স্কি, স্কিম বোর্ড ইত্যাদি। এ বোর্ড নিয়ে ঢেউয়ের দিকে ছুটতে হয় সাঁতরে। ঢেউয়ের মাথায় চড়ে বোর্ডের উপর দাঁড়িয়ে আসতে হয় উপকূলের দিকে। বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে আমেরিকান দেশগুলোতে সারফিং খুবই জনপ্রিয় একটি খেলা। বিখ্যাত সারফার বেথানি হ্যামিল্টনের কথা প্রায় সবারই জানা। হাঙ্গরের কামড়ে এক হাত হারিয়েও দুর্দান্ত সারফার হিসেবে আমেরিকা জুড়ে নাম করেছেন তিনি। এ খেলায় শরীরের চেয়ে মনের উপকারই বেশি হয়। সমুদ্রের বুকে দুঃসাহস নিয়ে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে একদিকে যেমন সংকোচিত মন প্রশ্বস্ত হয়, তেমনি সতেজও হয়ে ওঠে। এ ছাড়া শরীরেও অনেক উপকার হয়। বিশেষ করে ভারসাম্য রক্ষার জন্য এর চেয়ে উপযোগী আর কোনো খেলা নেই। ঢেউয়ের মাথায় চড়ে ঘুরতে হলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার প্রশিক্ষণই নিতে হবে সবার আগে। সারফিং অবশ্য কিছুটা ঝুঁকিরও খেলা। ঢেউয়ের মাঝখানে বেকায়দায় পড়লে বড় ধরনের ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার ভয় রয়েছে। এ ছাড়া সারফিং স্থান সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা রাখতে হবে যাতে হাঙ্গরের কামড় খেতে না হয়।