সুস্থ থাকা মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া। কিন্তু এই চাওয়া সবার পূরণ হয় না। অনেকে মধ্য বয়স পাড়ি দেওয়ার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। চলাফেরা করতে পারলেও নিজেকে নির্জীব বলে মনে হয়। আবার অনেকের নিত্যসঙ্গী হয় বিছানা। সুস্থ থাকা তাই মানুষের জীবনের চরম ব্রত। এই ইচ্ছে পূরণের জন্য মানুষ অনেক কিছুই করে থাকে। চিকিৎসার জন্য খরচ করে উদারচিত্তে। সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের খোঁজ করে সবাই। এতকিছুর পরও শেষটা আর ভালো হয় না। অথচ একটু সতর্ক থাকতে পারলে শরীর সুস্থ রাখা তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়। হাইকিং শরীর ও মন সুস্থ রাখে। নিয়মিত বিরতিতে হাইকিং করতে পারলে এর চেয়ে বড় চিকিৎসা আর কিছু হতে পারে না।
হাইকিং হচ্ছে হাঁটা। তবে সাধারণ কোনো হাঁটা নয়। পাহাড়-পর্ব ডিঙানো। সবার পক্ষে হয়তো এটি সম্ভব হয় না। তবে এতে শরীর-মন সুস্থ রাখা অনেক সহজ হয়ে যায়। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানোই মূল উদ্দেশ্য। পাহাড়ি সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে থাকা কিংবা ইচ্ছে মতো নিজের মন থেকে সব চাপ দূর করে দেওয়ার জন্য হাইকিংয়ের চেয়ে ভালো কোনো পদ্ধতি হতে পারে না। একদিকে শরীরে এড্রিনালিনের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় মনে আসে প্রফুল্ল। অন্যদিকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ সক্রিয় অংশ নেওয়ায় নিয়মিত ব্যায়ামের কাজটাও শেষ হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে হাইকিংকে অনেক রোগের মহৌষধ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। কিছুদিন পর পর ১০ মাইলের হাইকিংয়ে বের হতে পারলে শরীরের অনেক উপকার হয়। পিএস ম্যাগাজিনে ফর গুড হেলথ : টেক এ হাইক প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, 'অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা মত দিয়েছেন, হাইকিংয়ের ফলে মেদ কমে এবং রক্ত পরিষ্কার হয়। সেই সঙ্গে হাইকিং শরীরের অশুদ্ধ কোলেস্টেরল কমিয়ে ফেলে।' হাইকিং দুই রকমের আছে। পাহাড়ে ওঠা এবং পাহাড় থেকে নামা। দুই প্রকারের হাইকিংয়েই দারুণ উপকার হয়। হাইকিংয়ের সবচেয়ে ভালো ফল হলো, এতে মন ভালো হয়ে যায়। হাইকিং যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তেমনি ক্ষতিকরও হতে পারে। পাহাড়ি অঞ্চলে চলাফেরায় অবশ্য অনেক সতর্ক থাকতে হবে। ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে সব সময়। বিশেষ করে গিরি খাতের পাশ দিয়ে চলার সময়। হাইকিংয়ের সময় অবশ্যই সঙ্গে মজবুত লাঠি রাখতে হবে। এতে ভারসাম্য রক্ষায় যেমন কাজে আসবে, তেমনি সাপ থেকেও আত্দরক্ষা করা যাবে।