খাঁ খাঁ করছিল গ্যালারি। ২৫ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কাল দর্শক ছিল কয়েক শত মাত্র। গ্যালারির মতো নিরুত্তাপ মাঠের ফুটবলও। লড়াইটা যে দেশের দুই বড় দল আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তা বোঝার উপায় ছিল না। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ থাকলেও পুরো ম্যাচই ছিল ভুল পাসে ভরা। গোল মিসের মহড়ায় মেতে ছিল দুই দলই। তবে প্রথমার্ধে সংঘবদ্ধ একটি আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় আবাহনী। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠে ছাড়ে আকাশী-নীলরা।
লিগে আবাহনীর টানা দ্বিতীয় জয় এটি। আগের ম্যাচে সকার ক্লাব ফেনীর সঙ্গে ২-১ গোলে জয় পেয়েছিল তারা। ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই রইল আবাহনী। হেরেও চতুর্থ স্থানেই থাকল মুক্তিযোদ্ধা। আগের ম্যাচে মোহামেডানের বিরুদ্ধে ভালো খেলেও ১-০ গোলে হেরেছিল মুক্তিযোদ্ধা। কাল স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় ফিরতে হলো শূন্য হাতেই। তবে প্রথমার্ধে আবাহনীর বিরুদ্ধেও বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল মুক্তিযোদ্ধাই। বেশ কয়েকবার সুযোগও তৈরি করেছে তারা। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে পয়েন্ট হারাতে হয়।
খেলার ২৮ মিনিটেই সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী। শাহেদের থ্র থেকে বল মুক্তিযোদ্ধার জালে জড়ান আবাহনীর পর্তুগিজ এই ফুটবলার। কাল পুরো ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছেন সুয়ারেজ। বেশ কয়েকটি গোলও মিস করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত করা একমাত্র গোলেই আবাহনীর জয় নিশ্চিত হয়। খেলার শেষ মিনিটে গোল পরিশোধের সহজতম সুযোগটি নষ্ট করে মুক্তিযোদ্ধার স্ট্রাইকার সানডে। ডি-বঙ্রে মধ্যে বল পেয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। শুধু তাই নয়, কাল ম্যাচের শুরুতেই সুযোগ পেয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধার এই নাইজেরিয়ান। ১০ মিনিটের মাথায় এনামুলের থ্র থেকে পাওয়া বল আবাহনীর জালে জড়াতে ব্যর্থ হন সানডে। ৬১ মিনিটেও আরও একটি সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। তবে ৪২ মিনিটে প্রায় গোল পেয়েই যাচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধার এনকোচা। আবাহনীর গোলমুখ লক্ষ্য করে জোরালো শট করেন মুক্তিযোদ্ধার নাইজেরিয়ান এই তারকা। দক্ষতার সঙ্গেই তা ফিরিয়ে দেন সোহেল। ফিরতি বলেও ডি-বঙ্রে ভিতর থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহিম যে শটটি করে সেটি পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায়। খেলার শুরু ১৮ মিনিটে একটা নিশ্চিত গোল মিস করেন কিংসলে। ডান প্রান্ত থেকে অধিনায়ক মারুফ লম্বা করে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কিংসলে ডি-বঙ্রে মধ্যে বল পেয়েও তা জালে জড়াতে ব্যর্থ হন। পরের মিনিটেই পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল আদায় করে নিতে পারত আবাহনী। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক লিটন বাধা হয়ে দাঁড়ান। ৭০ মিনিটে তো মরিসন করে বসেন অমার্জনীয় এক ভুল। মুক্তিযোদ্ধা চার চারজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডি-বঙ্ েঢোকেন। গোলরক্ষককেও পরাস্ত করেন। কিন্তু ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি মরিসন।
কালকের ম্যাচে দুই হাফের চিত্র ছিল দুই রকম। প্রথমার্ধে ছিল মুক্তিযোদ্ধার দাপট। আর দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনীর একক আধিপত্য। সে কারণেই প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধা দ্বিতীয়ার্ধে আর খেলায় ফিরতে পারেনি। তবে স্ট্রাইকাররা আরেকটু সতর্ক হলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত। তখন মাথা উঁচু করেই মাঠ থেকে ফিরতে পারতেন মুক্তিযোদ্ধার ফুটবলাররা।