বিশ্বজুড়ে পরিচিত এক নাম সার্ফিং। বর্তমান বিশ্বে সার্ফিংয়ের এখন জয় জয়কার অবস্থা। আর এ সার্ফিংকে নিয়ে যিনি বাংলাদেশ জুড়ে পরিচিতি ও সফলতা এনে দিয়েছেন তিনিই কক্সবাজারেরই গর্ব সার্ফার জাফর আলম। তার হাত ধরেই আজ সার্ফিং-এ বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখছে কক্সবাজারের নাহিদা।
জানা গেছে, বাংলাদেশে সার্ফিং-এর জনক বলতে গেলে প্রথমেই কক্সবাজারের জাফর আলমের নাম চলে আসে। তিনিই প্রথম এ সার্ফিংয়ের ক্লাব গঠন করে বাংলাদেশে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তীতে সার্ফিং সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তার হাত ধরে বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারী-পুরুষ সমানতালে সার্ফিং করেছেন। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন সার্ফিং চলছে কঙ্বাজার সৈকতে। এখানে সার্ফার জাফরের নেতৃত্বে কমপক্ষে অর্ধশত সার্ফার সৈকতের ঢেউয়ের সাথে সার্ফিংয়ে লড়াই করছেন। আর সার্ফিং চলাকালে পর্যটক ও উৎসুক জনতার ভিড়ও যেন লক্ষণীয়।
বাংলাদেশ ওমেন সার্ফিং ক্লাব পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলায় গড়ে উঠেছে। এ ক্লাব ২ বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। ক্লাবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন-নারী সার্ফার নাহিদা আক্তার (জয়)। তার নেতৃত্বে বর্তমানে প্রায় ২০ জনের একটি মহিলা টিম রয়েছে।
নাহিদা জানান, প্রবল ইচ্ছে নিয়ে তিনি সার্ফিং করছেন। যার সবটুকু অবদান সার্ফার জাফর আলমের। নাহিদার মতে, সার্ফিং এখন দেশ ছেড়ে বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করলেও জনপ্রিয় এ স্পোর্টস ইভেন্টটি অবহেলিত। সার্ফিং টিকিয়ে রাখতে হলে সরকার, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সহযোগিতা দরকার। নাহিদা বলেন, সংগ্রাম করে তিনি ১০ বছর ধরে সার্ফিংয়ে টিকে রয়েছেন। এ পর্যন্ত সে সার্ফিংয়ে ছোট-বড় অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন। নাহিদা জানান ৫ বছর বয়সে তার বাবা নাগর আলী মারা যান। বর্তমানে তার মা'ই সব শক্তি এবং উৎসাহদাতা। পিতা হারা নাহিদার সে থেকে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। নাহিদার গর্বিত মা রেহেনা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নাহিদাই তার একমাত্র সম্বল। নাহিদাকে নিয়ে তিনি প্রচণ্ড স্বপ্ন দেখেন। সার্ফিংয়ে নাহিদাকে দিয়ে বিশ্ব জয় করতে চান তিনি ।
তিনি আরও জানান একমাত্র মেয়ে এবং আদরের ধন নাহিদাকে নিয়ে কঙ্বাজার শহরের মধ্যম নুনিয়ারছড়া এলাকায় তাদের বসবাস। উপার্জনক্ষম কোনো ব্যক্তি নেই, অতিরিক্ত সংগ্রাম করে জীবন পার করতে হচ্ছে। তবুও তার স্বপ্ন মেয়ে একদিন দেশের জনপ্রিয় একজন সার্ফার হবে, এতেই তিনি সন্তুষ্ট। এ লক্ষ্যে তিনি সবার দোয়া, উৎসাহ ও সহযোগিতা কামনা করেন।