গতকাল রাতে আইপিএলের দর্শকরা উপভোগ করল হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো এক ম্যাচ। রাজস্থান রয়্যালস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দলের মধ্যে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। প্লে-অফে খেলার জন্য মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দলের জন্য ম্যাচটি ছিল বাঁচা মরার লড়াই। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জন্য সেই কাজটি করে দেখালেন করি অ্যান্ডারসন। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৯৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ম্যাচটি ছিল নানা নাটকীয়তায় ভরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রাজস্থান ১৮৯ রান করে। প্লে-অফে জায়গা পেতে হলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে এ রান করতে হবে মাত্র ৮৭ বলে। অর্থাৎ ১৪.৩ ওভারে।
চৌদ্দতম ওভারেই ঘটে নাটকীয় ঘটনা। শেষ এক বলে ২ রান করলেই ম্যাচ জিতে নেবে মুম্বাই। এই অবস্থায় ফকনারের বলে রান আউট হয়ে যান অম্বতি রায়ডু। স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, মুম্বাইয়ের রান পাঁচ উইকেটে ১৮৯। দর্শকদের কেউই অাসলে বুঝতে পারছিলেন না কী ঘটতে যাচ্ছে। রায়ডুর আউটের পরপরই রাজস্থানের খেলোয়াড়রা ডাগ আউটে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন। তারা হয়ত ভেবেছিলেন, মুম্বাই বোধহয় আর পারল না।এর মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা চলে আম্পায়ার ও দু'দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত আম্পায়াররা জানান, পরের বলে চার মারলেই প্লে অফে পৌঁছে যাবে মুম্বাই।
ব্যাট হাতে ক্রিজে অাসেন মুম্বাইয়ের আদিত্য তারে। ডাগ আউট থেকে কি করণীয় এ ব্যাপারে বারবার তার কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। প্লে-অফে যাওয়ার নতুন সমীকরণও বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাকে। বল হাতে তখন রাজস্থানের ফকনার। ব্যাট হাতে তৈরি তারেঅ। ফকনার দিলেন ফুলটস ডেলিভারি। তারে ব্যাট উঁচিয়ে বল সোজা গ্যালারিতে পাঠিয়ে দিলেন। চোখে দেখেও তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না মাঠে উপস্থিত দর্শকরা। মুম্বাই প্লে-অফে! রাজস্থানের শেন ওয়াটসন তখনো বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কী হয়ে গেল।
মুম্বাইয়ের জয়ের নায়ক করি অ্যান্ডারসন ন’টি বাউন্ডারি ও ছ’টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। তাকে শেষের দিকে সঙ্গ দেন রায়ডু। ১০ বলে ৩০ রান করেন রায়ুডু। আর মাত্র এক বল খেলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তারে জাগিয়ে দিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদের স্মৃতি।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে মুম্বাইয়ের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ ছিল ওয়াংখেড়েয় ৷ টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বাই ৷ প্লে-অফের ছাড়পত্র পেতে এদিন রাজস্থানকে হারালেই চলত না মুম্বাইয়ের ৷ বড় ব্যবধানে জিততে হত রোহিত শর্মাদের ৷ প্রথমে ফিল্ডিং নেয়ায় ঘরের মাঠে রান তাড়া করে জেতার সুযোগ ছিল রোহিতদের ৷
প্লে অফে যাওয়ার সমীকরণ ছিল, প্রথম ব্যাট করে রাজস্থান ১৩০ থেকে ২০১ তুললে, তা ৮৭ বলের মধ্যে তুলতে হবে মুম্বাইকে। তাহলেই সমসংখ্যক পয়েন্ট নিয়েও রানরেটের বিচারে রাজস্থানকে পিছনে ফেলে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে উঠে যাবে মুম্বাই। ১৩ ম্যাচে মুম্বাইয়ের পয়েন্ট ১২। অন্য দিকে, প্লে-অফের ছাড়পত্রের জন্য মুম্বাইকে হারালেই হবে রাজস্থানের।
রাজস্থান প্রথমে ব্যাট করে ২০ভারের শেষে তোলে চার উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান। সঞ্জু স্যামসন করেন ৭৪ রান। করুণ নায়ার ৫০ রানে ফিরে যান ডাগ-আউটে। ব্র্যাড হজ অপরাজিত থেকে যান ২৯ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে করি অ্যান্ডারসনের ব্যাট জ্বলে ওঠে। তারপর তারের মিয়াঁদাদ সুলভ ছক্কা। মুম্বাই পৌঁছে গেল প্লে অফে।