বিশ্বকাপের আগে ফুটবলসম্রাট পেলে বলেছিলেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মাঝে নাকি ইউসেবিওকে দেখতে পাচ্ছেন তিনি। ব্রাজিলে এবার পর্তুগিজ তারকা বাজিমাৎ করবেন। আর পেলে গ্যালারিতে বসে তা উপভোগ করবেন। কিন্তু কোথায় পেলে? পর্তুগালের ম্যাচের দিন তো স্টেডিয়ামের আশেপাশেও ফুটবলসম্রাটের দেখা মেলেনি। রোনালদোও ইউসেবিওর মতো খেলতে পারেননি। পর্তুগিজরাও ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পথে। প্রথম ম্যাচে জার্মানির বিরুদ্ধে লজ্জাজনকভাবে ৪-০ গোলে হারের পর কাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে শেষ মুহূর্তের গোলে ২-২ ব্যবধানে ড্র।
কাগজে কলমে এখনো পর্তুগালের নকআউট পর্বে যাওয়ার একটা ক্ষীণ রাস্তা থাকলেও তা নির্ভর করছে অনেক 'যদি'র ওপর। যদি শেষ ম্যাচে জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রকে বড় ব্যবধানে হারায়, আর যদি নিজেরা আরেক ম্যাচে ঘানাকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারে তাহলেই কেবল সুযোগটা আসতে পারে। আপাতত পয়েন্ট তালিকার তলানিতে পর্তুগাল। দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে জার্মানি। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থানে যুক্তরাষ্ট্র। ঘানা তৃতীয় স্থানে থাকলেও পর্তুগালের চেয়ে সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পর্তুগালের জয়টা ছিল অপরিহার্য। রোনালদোদের শুরুটাও ছিল প্রত্যাশিতই। খেলার মাত্র ৫ মিনিটেই দুর্দান্ত এক গোল করে পর্তুগিজদের এগিয়ে দেন নানি। মার্কিন ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে তা কাজে লাগান ম্যানইউ তারকা। এরপর প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয়ার্ধে যেন অলসভাবে শুরু করে পর্তুগিজরা। তাদের আক্রমণের ধার কমে যায়। এই সুযোগে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে মার্কিনিরা। ৬৪ মিনিটে সফলতাও পেয়ে যায়। খেলায় সমতা ফেরান জোনস। গোল পরিশোধ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়রা যেন আরও উজ্জীবিত হয়ে যায়। ৮১ মিনিটে অধিনায়ক ডেম্পসীর গোলে এগিয়েও যায়। পর্তুগিজ শিবিরে তখন নেমে আসে হতাশা। অন্যদিকে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ। মার্কিনভক্তরা গ্যালারিতে উঠে দাঁড়িয়েছে। রেফারির দেওয়া ৫ মিনিটের ইনজুরি সময়ও প্রায় শেষ। ২০ সেকেন্ড বাকি। খেলা শেষের বাঁশি বাজাতে যাচ্ছিলেন রেফারি। ডান প্রান্তে বল পেয়ে লম্বা করে যুক্তরাষ্ট্রের ডি-বক্স বাড়িয়ে দিলেন রোনালদো। দুর্দান্ত এক হেডে ভ্যারেলা বল পাঠিয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জালে। উৎসব পণ্ড হয়ে গেল মার্কিনিদের। একটুর জন্য নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারল না ডেম্পসীরা।