লঙ্কানরা আজ আবেগপ্রবণ। কিংবদন্তি মাহেলা জয়াবর্ধনের বিদায়টা লঙ্কানদের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে। অবশ্য বিউগলের করুণ সুরটা বাজছিল অনেক আগে থেকেই। যেদিন জয়াবর্ধনে ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বোতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টটাই হবে তার শেষ ম্যাচ, তাকে আর দেখা যাবে না প্রিয় সাদা পোশাকে। ভক্তদের অনেকে মাহেলার বিদায়কে যেন মানতেই পারছেন না। এমন ফর্মে থাকার পরও কেউ কি অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়- বেশ কয়েক দফায় সমর্থকরা দাবিও জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। জয়াবর্ধনে নিজের সিদ্ধান্তে অটল। ফর্ম থাকা অবস্থাতেই তিনি সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেবেন।
আজ থেকে শুরু হচ্ছে মাহেলার বিদায়ী টেস্ট। ভেন্যু- কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি)। ১৯৯৭ সালে টেস্টে জয়াবর্ধনের যাত্রা শুরু হয়েছিল এই কলম্বোতেই। শুধু ভেন্যুটা ভিন্ন। সেটি ছিল প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম। লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য বিদায়ী ম্যাচটা একই ভেন্যুতে করতে চেয়েছিল। কিন্তু মাহেলা চেয়েছিলেন তার ঘরের মাঠ এসএসসিতে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে। তাই পরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই ম্যাচটি এসএসসিতে নিয়ে আসা হয়। এটি শুধু ঘরের মাঠ বলেই নয়, জয়াবর্ধনের কাছে বড় পয়মন্ত এক ভেন্যু। এই মাঠে ব্যাট হাতে মাঠে নামলেই জয়াবর্ধনের ব্যাট থেকে যেন আগুনের ফুলকি বের হয়। সর্বশেষ ম্যাচে এই মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি রয়েছে তার।
এই মাঠে ২৬টি টেস্ট খেলেছেন মাহেলা। ২,৮৬৩ রান করেছেন, এক ভেন্যুতে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। এখানে জয়াবর্ধনের গড় রান ৭৭.৩৭। টেস্টের ৩৪টি সেঞ্চুরির মধ্যে ১১টি এই মাঠে করা। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে করা তার ৩৭৪ রানের ইনিংসটিও এই মাঠে। তাই যে মাঠ জয়াবর্ধনেকে এত দিয়েছে, সেই মাঠ থেকেই বিদায়ী সংবর্ধনা গ্রহণ করবেন লঙ্কান তারকা।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের এই সিরিজে ইতিমধ্যে প্রথমটি জিতে ১-০-তে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। এই ম্যাচে ড্র হলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবে স্বাগতিকদের। কিন্তু জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তিনি বলেন, 'সবার জন্যই এটা আবেগপ্রবণ এক সময়। আমাদের দলের নির্ভরতার প্রতীক জয়াবর্ধনের বিদায়ী ম্যাচ। এই ম্যাচে জিতেই আমরা তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেব।'
টেস্ট ক্যারিয়ার
ম্যাচ ইনিংস রান গড় ১০০/৫০ সর্বোচ্চ
১৪৮ ২৫০ ১১৭৫৬ ৫০.০২ ৩৪/৪৯ ৩৭৪