এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গেছেন দুবার। দুবারই ছিলেন অধিনায়ক। হাবিবুল বাশার সুমন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। সাত বছর পর আবারও গেলেন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। এবার দলীয় ম্যানেজার হয়ে। আগের দুটি সফরের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা মুশফিকুর রহিমদের মাঝে ঢেলে দিতেই ম্যানেজার হিসেবে সফরসঙ্গী হয়েছেন। বাশার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, সিরিজ জেতার জন্যই খেলবে ক্রিকেটাররা। আর জেতার সামর্থ্যও রয়েছে ক্রিকেটারদের। এর আগে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম সফরে জয়ের কথা বলেছিলেন। সেটাকেও সমর্থন দিয়েছেন বাশার।
এবার নিয়ে চতুর্থবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গেল টাইগাররা। ২০০৪ সালে প্রথম। সেবার অধিনায়ক ছিলেন বাশার। গ্রস আইলেটে ড্র টেস্টটিতে খেলেছিলেন ১১৩ রানের ইনিংস। কিংস্টোনে পরের টেস্টটি অবশ্য হেরেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। তবে লড়েছিল সমানতালে। এরপর ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ খেলতে যায়। সেবারও অধিনায়ক ছিলেন বাশার। ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১ সালে যে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ, সেরা পারফরম্যান্স ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবিড়দের ভারতকে হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছিল সুপার এইটে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ওটাই একমাত্র সুপার এইটে খেলা। সুপার এইটে মোহাম্মদ আশরাফুল ম্যাজিকে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। দুই দুটি সফরের অভিজ্ঞতা ক্রিকেটারদের মাঝে শেয়ার করবেন সাবেক অধিনায়ক। এরপর ২০০৯ সালে গিয়েছিল টাইগাররা। তিন ওয়ানডে, একটি টি-২০ ও দুটি টেস্ট খেলবেন মুশফিকরা। সফরের প্রথমেই ওয়ানডে সিরিজ খেলবে টাইগাররা। এরপর টি-২০ ম্যাচ এবং সবশেষে টেস্ট সিরিজ। এবারের সফরটা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন- বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। গত ডিসেম্বর থেকে টানা হারে ক্রিকেটারদের মানসিকতা একেবারে তলানিতে। শ্রীলঙ্কা, এশিয়া কাপ এবং ভারত সিরিজ মিলিয়ে টানা ৯ ম্যাচে হার। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কষ্টকর। তারপরও বাশারের বিশ্বাস দল ঘুরে দাঁড়াবে, 'আমি বিশ্বাস করি আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য রয়েছে। গত আট মাস যা হয়েছে, সেটা এখন অতীত। ক্রিকেটাররা সেসব পেছনে ফেলে সামনের দিকে তাকিয়ে আছেন। তারাও জানেন তাদের সামর্থ্যের কথা। তারাও চাইছেন সব ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে। অতীতে ব্যর্থতার চোরাবালি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছি আমরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আমরা ঘুরে দাঁড়াব।'
জিম্বাবুয়ে ছাড়া বাকি টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের। দুই দেশ এখন পর্যন্ত যে ২৫ ওয়ানডে খেলেছে, তার সাতটিতে জয় বাংলাদেশের এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬টি। ১০ টেস্টে বাংলাদেশের জয় ২ এবং ক্যারিবিয়ানদের ৬টিতে। ৫ টি-২০ ম্যাচে টাইগারদের ২ জয়ের বিপক্ষে হার ৩টি। পরিসংখ্যানে ক্যারিবীয়রা এগিয়ে ঠিকই, কিন্তু তাদের মাটিতে টাইগারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফটা বরাবরই উপরের দিকে। ২০০৯ সালে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ফের গেল পাঁচ বছর পর। অতীত রেকর্ডগুলোর কথা ভেবেই বাশার কোচ ও অধিনায়কের মতো স্বপ্ন দেখছেন জয়ের, 'আমরা জেতার টার্গেটেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাচ্ছি। কোচ কিংবা অধিনায়ক ভুল বলেননি। আমি বিশ্বাস করি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর সামর্থ্য রয়েছে আমাদের। সবচেয়ে বড় কথা, তাদের মাটিতে আমাদের জয়ের রেকর্ড রয়েছে। সুতরাং আশা করতেই পারি।'