সাঁতারে বাংলাদেশের প্রচুর সম্ভাবনা ছিল। আশির দশকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে মোশাররফ হোসেন একাই ৭টি স্বর্ণ জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। মহিলারাও পিছিয়ে ছিলেন না। রীতিমতো পুলে ঝড় তুলতেন। এদের মধ্যে বেগম লায়লা নূরের নাম অন্যতম। দেশে শুধু সাঁতার বললে ভুল হবে, যে কয়জন খ্যাতনামা মহিলা ক্রীড়াবিদ রয়েছেন, সে তালিকায় লায়লার নাম ঠাঁই পাবে। ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য তিনি ২০০৪ সালে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। বয়স যখন তার মাত্র আট, তখুনি রাজবাড়ীতে নিজ পুকুরে সাঁতার কাটা শুরু করেন। ব্যস, এখানেই চোখে পড়ে যান এরশাদুল নবীর। তার অধীনে অনুশীলন করে লায়লা হয়ে ওঠেন সাঁতারের রানী। তা ছাড়া বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় খেলাধুলায় আসতে পেরেছেন বলে লায়লা জানান। দেশে মহিলা সাঁতারুর সংখ্যা একেবারে কম নয়। অনেকে জাতীয় পর্যায়ে পদক পেয়ে পুল কাঁপিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে তাকে একটু ব্যতিক্রমী বলতে হয়। সুইমার হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করলেও বসে থাকেননি লায়লা নূর। পাতিয়ালা ও জার্মানি থেকে প্রশিক্ষকের উচ্চতর ডিপ্লোমাও নিয়ে এসেছেন। যোগ্যতা তাকে এতদূর নিয়ে গেছে যে, বর্তমানে মহিলা তো আছেই পুরুষ সাঁতারুদের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। কিছুদিন আগে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে সাঁতারে হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সাঁতার ফেডারেশনের সহ-সভাপতিও। মাঝে তিনি ঢাকার বেসরকারি দুই খ্যাতনামা স্কুল আইএসডি ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনালের গেম টিচার ছিলেন।
১৯৮১ সালে প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার শুরু করেন লায়লা নূর। মহিলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত বয়সভিত্তিক আয়োজনে সর্বোচ্চ পদক জিতে তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। সাফল্য যেন তাকে পেয়ে বসেছিল। জাতীয় পর্যায়ে সাঁতার থেকে লাগাতার স্বর্ণ আসতে থাকে। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ টানা পাঁচ বছর মহিলা সাঁতারে ছিলেন শীর্ষে। ১৯৯১ সালে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সাফ গেমসে দুটো পদক জেতার কৃতিত্ব রয়েছে তার। ৮০০ মিটার ফ্রি স্টাইল ও ১০০*৪ মিটার ফ্রি স্টাইলে দুটোতেই তামা জেতেন। এরপর খেলা ছেড়ে পাতিয়ালাতে ডিপ্লোমা কোর্স করতে যান। শুধু লায়লা একা নন, তার ছোট বোন নূরই আফরোজও বয়সভিত্তিক সাঁতারে স্বর্ণ জেতার কৃতিত্ব পান। লায়লার স্বামী মজিবুর রহমান আশির দশকে ঢাকা লিগে ফুটবল খেলেন। বর্তমানে তিনি মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল কলেজের লেকচারার। দেশের সাঁতারে আগের সেই জৌলুশ নেই কেন? এ ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে লায়লা বলেন, দেখেন শুধু সাঁতার কেন ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলাতেও জৌলুশ নেই। বড় বড় দলের খেলাতে গ্যালারি থাকছে ফাঁকা। কিন্তু কেউ যদি বলেন, সাঁতারে মানই নেই তা আমি মানব না। দেশে এখনো পুরুষ বা মহিলা বিভাগে এমন সাঁতারু আছেন যাদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা দিলে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বড় সাফল্য পাওয়া সম্ভব। প্রসঙ্গক্রমে তিনি মাহফিজুর রহমান সাগরের নাম উল্লেখ করে বলেন, প্রস্তুতি তেমন ছিল না তারপরও অসুস্থ শরীর নিয়ে কমনওয়েলথ গেমসে যে পারফর্ম শো করেছেন তা কোনোভাবেই খারাপ বলা যাবে না। আমরা কীভাবে এগুবো বলেন, এশিয়ান গেমসে সাঁতারুদের যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হলো? কারণ আমাদের পদক পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। মানলাম এত বড় গেমসে আমাদের কেউ পদক পেতেন না। কিন্তু যেসব ইভেন্ট রাখা হয়েছে সেখানে ক্রিকেট ছাড়া অন্যতে কি পদক পাবই সে ধরনের নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে? কে কী ভাববেন জানি না, আমি বলব এশিয়ান গেমসে সাঁতারুদের অবশ্যই পাঠানো উচিত ছিল। প্রস্তুতি নেওয়ার পরও যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। এতে সাঁতারুরা অবশ্যই উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। যার প্রভাব খুবই করুণ হতে পারে। লায়লা বলেন, আমি স্পষ্টবাদী, তাই অনেকে আমাকে পছন্দ করেন না। কিন্তু যা সত্যি তাই আমি বলি। কালোকে তো আর সাদা বলতে পারি না। যেমন বলব, প্রতিটি ফেডারেশনের কমিটি এমনভাবে গড়া উচিত, যারা খেলা বুঝেন বা জানেন। হুট করে অচেনা কাউকে বড় পদে বসানোটা ঠিক হচ্ছে না।
শিরোনাম
- টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা রোহিত শর্মার
- দেশে প্রথমবারের মতো দুইটি ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা
- পাকিস্তানে ভারতের হামলা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ ঝুঁকি বাড়িয়েছে: তুরস্ক
- পুলিশের ৯ অতিরিক্ত ডিআইজিকে বদলি
- পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার মধ্যেও চলবে পিএসএল
- রৌমারী-ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে ৩৬ রোহিঙ্গা ও ৮ বাংলাদেশিসহ আটক ৪৪
- পাকিস্তানের হামলায় ভারতে হতাহত বেড়ে ৫৮: ভারতীয় সেনাবাহিনী
- 'শব্দদূষণ রোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই'
- পানি সংকটে রাঙামাটি, বন্ধ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চার ইউনিট
- সাফ অনূর্ধ্ব-১৯: ভারতে উত্তেজনার মাঝেও নির্ধারিত সূচিতেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধের ঘোষণা মোদির
- কারাগারের দেয়াল টপকে হাজতির পালানোর চেষ্টা, ভিডিও ভাইরাল
- নতুন ১৮ ওয়ার্ডের উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ: ডিএনসিসি প্রশাসক
- খোদ ভারতেই যুদ্ধবিরোধী কণ্ঠ: কবীর সুমনের তীব্র প্রতিক্রিয়া
- ধর্মশালা থেকে সরিয়ে নেওয়া হল পাঞ্জাব বনাম মুম্বাই ম্যাচ
- হামলায় অংশ নিয়েছিল ৭৫ থেকে ৮০টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, দাবি পাকিস্তানের
- ভারতের হামলায় ‘শান্তির আহ্বান’ বিশ্বনেতাদের, ইসরায়েল জানাল সমর্থন
- পাক-ভারত সংঘাত : সীমান্ত জেলাগুলোতে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
- রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৯৩৮ মামলা
- যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের খবর নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার লুকোচুরি
সাঁতারের রানী সেই লায়লা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর