টানা চার বলে চার উইকেট নিয়ে লঙ্কান বোলার লাসিথ মালিঙ্গার মহাকীর্তি, দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত-পাকিস্তানকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে দিয়ে প্রথমবারের মতো সুপার-এইটে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড, ঘরের মাঠে ক্রিকেট পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেমিফাইনালে উঠতে না পারার দুঃখ, হোটেল রুমে পাকিস্তান কোচ বব উলমারের রহস্যজন মৃত্যু- সব ঘটনা ছাপিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ে। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা-এটা সবারই জানা! ঠিক কতটা অনিশ্চয়তার ২০০৭ বিশ্বকাপে তা ক্রিকেটবিশ্বকে নতুন করে জানিয়ে দেন শ্রীলঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা! ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের সুপার এইটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। লড়াই জমে উঠছিল না, ম্যাচে একাধিপত্য আফ্রিকানদের। লঙ্কানদের দেওয়া ২১০ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে সহজেই জিতে যাচ্ছিল প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ৫ উইকেটে ২০৬ রান। জয়ের জন্য দরকার মাত্র ৪ রান, বলও বাকি আছে অনেক। ঠিক এমন সময় ঘটে যায় নাটকীয় এক ঘটনা। মালিঙ্গা বোলিংয়ে এসেই আফ্রিকানদের ওপর দিয়ে সুনামি বইয়ে দেন। টানা চার বলে তুলে দেন চার উইকেট। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়ারা এক উইকেটে রুদ্ধশ্বাস এক জয় পায়। তবে ম্যাচে হারলেও বিশ্বরেকর্ডের অংশ হয়ে যান মালিঙ্গা। অঘটন এবং নাটকীয়তায় ভরা থাকলেও প্রত্যাশিতভাবেই ২০০৭ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। অসিদের চতুর্থ বিশ্বকাপ জয়। তবে ১৯৮৭ সালের পর টানা ১৯৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৭ বিশ্বকাপ জিতে, শিরোপা জয়ে হ্যাটট্রিক করে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অসিরা। এই সুযোগ অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনেও এসেছিল ১৯৮৩ সালে। কিন্তু ক্লাইভ লয়েডরা ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে হেরে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ের মধ্যদিয়ে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধও নেওয়া হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৯৬ সালের ফাইনালে অসিদের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিল অর্জুনা রানাতুঙ্গার শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ২০০৭ সালে আর লঙ্কানদের সুযোগ দেয়নি অস্ট্রেলিয়া।