প্রথম দিন ব্যাট করতে নামার আগে দলনায়ক মো. শরীফের ব্যাট নিয়ে ব্যাটিংয়ের আবদার করেছিলেন রনি তালুকদার। নেতিবাচক মনোভাব দেখাননি জাতীয় দলের সাবেক পেসার। শুধু শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন রনিকে। ডাবল সেঞ্চুরি করতে হবে। প্রথম দিন ১০৩ রান করার পর সেই পথে এগিয়ে গিয়েছিলেন বেশ কয়েক ধাপ। কাল ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন ঢাকা বিভাগের ওপেনার রনি। সাজঘরে ফিরেন ২২৭ রানের দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস খেলে। ওয়ালটন জাতীয় লিগের প্রথম পর্বে প্রথম দিন সেঞ্চুরি হয়েছিল তিনটি। কাল হলো আরও তিনটি। সেঞ্চুরি করেন রনির সতীর্থ সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার রকিবুল হাসান, খুলনার অধিনায়ক তুষার ইমরান ও নুরুল হাসান সোহান।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আগের দিন ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রনি। কাল সেটাকে ২২৭ রানে নিয়ে থামেন। অবশ্য দিনের শুরুটা ভালো ছিল না ঢাকার। বিনা উইকেটে ১৮০ রান নিয়ে খেলতে নেমে মাত্র ১৭ রান যোগ করার পর সাজঘরে ফিরেন আব্দুল মজিদ (৭৬)। ১৯৭ রানে মজিদের বিদায়ের পর রকিবুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে যোগ করেন ২২৬ রান। দলীয় ৪২৩ রানে অফ স্পিনার ফরিদউদ্দীন মাসুদকে সুইপ করতে যেয়ে শর্ট স্কয়ার লেগে গোলাম কবীরের তালুববন্দী হন। অবশ্য মাসুদের আগের ওভারে একই ফিল্ডারের হাতে জীবন পেয়েছিলেন রনি। ২২৭ রানের ইনিংসটি রনি খেলেন ২৬৬ বলে ২৬ চার ও ৩ ছক্কায়। রকিবুল সাজঘরে ফিরেন ১৪৫ রানের ইনিংস খেলে। শেষ দিকে ৮৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন বাঁ হাতি তরুণ ক্রিকেটার তাইবুর রহমান পারভেজ। দুই সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৫৯১ রান তুলে দিন পার করেছে ঢাকা। এগিয়ে রয়েছে ৪৫২ রানে।
বিকেএসপি-৩ নম্বর মাঠে কাল রাজশাহীকে অলআউট করে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন। আগের দিনের বিনা উইকেটে ৮ রান নিয়ে খেলতে নেমে রাজশাহীর প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১৮। ৮৪ রানে এগিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ১১৫ রান তুলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন। এগিয়ে রয়েছে ১৯৯ রানে। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদি মারুফ আউট হন ৪৬ রানে।
বিকেএসপি-২ নম্বর মাঠে সেঞ্চুরি করেছেন বর্ষিয়ান ক্রিকেটার তুষার ইমরান ও তরুণ ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। আগের দিনের ৫৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে তুষার কাল অপরাজিত থাকেন ১৭৭ রানে। সোহান করেন ১১৫ রান। দুই সেঞ্চুরিতে খুলনা ৮ উইকেটে ৫৩৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে খেলতে নেমে ৪ উইকেটে ৮৬ রান তুলে দিন পার করেছে সিলেট। আজ ৪৫০ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামবে সিলেট।
নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা স্টেডিয়ামে রংপুরের ইনিংস থেমে যায় ২৬৯ রানে। জবাবে ১০৭ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংস। চট্টগ্রামের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন ইরফান শুক্কুর। চট্টগ্রামকে গুটিয়ে দিতে দুরন্ত বোলিং করেন শুভাশীষ রায় ও বিশ্বনাথ হালদার। বিশেষ করে বিশ্বনাথের বোলিং ছিল দুর্ধর্ষ। তার বোলিং স্পেল ৪.৩-৩-১-২।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভেন্যু : মিরপুর
বরিশাল : প্রথম ইনিংস, ১৩৯/১০, ৫০.৩ ওভার ( শাহরিয়ার নাফিস ১৩, ফজলে রাব্বি ৫২, নুরুজ্জামান ১৯, আল-আমিন ৩০। শাহাদাত হোসেন ২/৪০, শরীফ ৬/২৪)।
ঢাকা : প্রথম ইনিংস, ৫৯১/৪, ১২৮.৪ ওভার ( আব্দুল মজিদ ৭৬, রনি তালুকদার ২২৭, রকিবুল হাসান ১৪৫, তাইবুর পারভেজ ৮৫*, শুভাগত হোম ৪০। কামরুল রাব্বি ১/১১৫, আল-আমিন ১/৭৯, ফরিদউদ্দীন মাসুদ ১/৯৯)।
ভেন্যু : বিকেএসপি-৩
ঢাকা মেট্রো. : প্রথম ইনিংস, ৩০২/১০ (মেহেদি মারুফ ১৪১) ও দ্বিতীয় ইনিংস, ১১৫/৩, ২৯.৪ ওভার ( সৈকত ৪৬, মেহেদি মারুফ ৪৬। সাকলাইন সজিব ৩/৪৭)।
রাজশাহী : প্রথম ইনিংস, ২১৮/১০, ৬২.৫ ওভার ( জুনায়েদ সিদ্দিকী ৫৫, ফরহাদ হোসেন ৩০, জুবায়ের আহমেদ ৫৪, মুক্তার আলি ৩৭। শহীদ ৩/৮৬, আসিফ ২/২৩, শরীফ উল্লাহ ৩/৪৪)।
ভেন্যু : বিকেএসপি-২
খুলনা : প্রথম ইনিংস, ৫৩৬/৮, ডি. ১৫৬ ওভার ( অমিত ৬০, রবি ২৫, ইমরুল কায়েশ ৬৩, তুষার ইমরান ১৭৭*, মিথুন ৫৭, নুরুল হাসান ১১৫। কাপালি ৩/৭৬, সাদিকুর ৩/১০৮)।
সিলেট : প্রথম ইনিংস ৮৬/৪, ২২ ওভার ( সায়েম আলম ৪৪, এনামুল ২৩। রবিউল ২/৭)।
ভেন্যু : ফতুল্লা স্টেডিয়াম
রংপুর : ২৬৯/১০, ১১২.৫ ওভার ( নাঈম ইসলাম ১০৭, সোহরাওয়ার্দী শুভ ৬২। আলাউদ্দিন বাবু ৪/৪৯, মনিরুজ্জামান ৩/৩৮, ফয়সাল ২/৩০)।
চট্টগ্রাম : প্রথম ইনিংস, ১০৭/১০, ৫৯.৩ ওভার ( মাহাবুব ১৯, নাফিস ১৪, ইরফান শুক্কুর ৩২, ইয়াসির আলি ১৫। শুভাশিষ রায় ৩/৩৭, বিশ্বনাথ হালদার ২/১, আরিফ ২/৩২)।