অভিষেকের পর পারফরম্যান্সের যে ধারাবাহিকতা ছিল সোহাগ গাজির, তাতে বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায় বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায়। বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন এই অফ স্পিনার। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে মরিয়া সোহাগ। ২৪ জানুয়ারি বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর পরীক্ষা দিয়েছেন চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই দিন পরীক্ষা দিয়েছেন পাকিস্তানের অফ স্পিনার সাঈদ আজমলও। চেন্নাইয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর সোহাগ জানিয়েছেন, এবার পরীক্ষায় পাস করবেন এবং খুব সহসাই জাতীয় দলে ফিরতে চান তিনি।
গত ২২ আগস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে চলাকালীন সোহাগের বোলিংকে ত্রুটিপূর্ণ ঘোষণা করে আইসিসি। আইসিসির নিষেধাজ্ঞার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে ক্রিকেট বোর্ড। এরপর পরীক্ষা দিতে ইংল্যান্ডের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। সেখানে ১৯ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা দিলেও পাস করতে পারেননি। ফলে ৮ অক্টোবর সব ধরনের ক্রিকেটে আইসিসি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাকে। ওই নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হারান। শনিবার পরীক্ষা দিয়ে মিরপুর স্টেডিয়ামে কাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে ফিরে আসার কথা বলেন, 'পরীক্ষা দেওয়ার সময় একটু নার্ভাস ছিলাম। পরে এহসান স্যারের সঙ্গে কথা বলে আমি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। এছাড়া কার্ডিফে যারা টেস্ট করেছিলেন, তারাই ছিলেন। পরীক্ষাও একই ধরনের। কোনো সমস্যা হয়নি। আগের চেয়ে কম ওভার বোলিং করেছি। পরীক্ষার পর আমি এখন অপেক্ষায় আছি ফলাফলের জন্য। আশা করি এবার কোনো সমস্যা হবে না।' এর আগে যখন পরীক্ষার রিপোর্টে সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি কনুই ভাঙার উল্লেখ ছিল। অথচ আইসিসির নিয়ম সর্বোচ্চ ১৫ ডিগ্রি। এবার সেটা ৫-৬ ডিগ্রি হবে বলেন সোহাগ, 'সবাই পজিটিভ কথা বলেছে। তাতে আশাবাদী। অবশ্য এ রকমটা আগেরবারও বলেছিল। সেবার ফল এসেছিল নেগেটিভ। আমি মনে করি আমার বোলিং অ্যাকশনে আমি ৩৮ ডিগ্রি ভাঙতাম না। হয়তো ২৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ভাঙতো। এখন সেটা ৫-৬ ডিগ্রি ভাঙবে। এর চেয়ে কম ভাঙলে বল স্পিন করানো সম্ভব নয়।'
সোহাগ যেদিন পরীক্ষা দেন চেন্নাইয়ে, সেদিন রাতেই বিশ্বকাপ ক্রিকেট দল খেলতে ঢাকা ছাড়ে বাংলাদেশ। বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ না হলেও তার যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। নিষেধাজ্ঞার জন্য যেতে না পারলেও দলের শুভ কামনা করেছেন একই টেস্টে হ্যাটট্রিক ও সেঞ্চুরিম্যান সোহাগ, 'জাতীয় দল ২৪ জানুয়ারি যাবে জানতাম। একজন খেলোয়াড় হিসেবে দোওয়া করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। দোওয়া করি যেন দল একটি সন্মানজনক অবস্থানে পৌঁছায়।' আন্তর্জাতিক অঙ্গনে না পারলেও খেলেছেন প্রিমিয়ার ক্রিকেটে। এখন জাতীয় লিগে খেলবেন বরিশালের পক্ষে। অবশ্য চেন্নাইয়ে থাকার জন্য প্রথম রাউন্ডে মাঠে নামতে পারেননি। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে খেলবেন।