একসময় ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এখন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চলতি আসরের বাংলাদেশের অন্যতম ভরসাও। টাইগারদের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার পুরোটাই নির্ভর করছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্সের ওপর। বিষয়টি বেশ ভালো করেই জানেন সাকিব। জানেন বলেই নিজের পারফরম্যান্স এবং দলের ওপর আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের।
কাল অনুশীলন ছিল না টাইগারদের। তাই বলে বিশ্রামও ছিল না। ছিল না যত্রতত্র যাওয়ার অনুমতিও। বিকালে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় মাশরাফি বিন মর্তুজার দলকে সংবর্ধনা দেয় বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশ ছাড়ার আগে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ডিনার করেছিলেন ক্রীড়ানুরাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের কথা মাথায় রেখে ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কাল বাংলাদেশ হাইকমিশনারও মাথা উঁচু করে ক্রিকেট খেলার কথা বলেন মাশরাফি-সাকিবদের।
অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ২৪ জানুয়ারি ব্রিসবেন আসেন টাইগাররা। দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করেন সেখানে। সাকিব আসেন তারও আগে। বিগব্যাশ টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলেন মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে। তাই দলের অন্য ক্রিকেটারদের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা তারই বেশি। সেই সাকিবও লড়াই করছেন অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একাদশ, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চারটি গা গরমের ম্যাচে জ্বলে ওঠেনি সাকিবের ব্যাট কিংবা বাঁ হাতের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত করতে পারেননি প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। দেশের এক নম্বর ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স যখন এমন, তখন চিন্তায় ঘুম হারাম হওয়ার কথা টিম ম্যানেজমেন্টসহ পুরো জাতির! কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচগুলোর পারফরম্যান্স নিয়ে ঘুম হারাম করতে রাজি নন দলের সহ-অধিনায়ক। ক্যানবেরা থেকে তিনি ফোনে জানান, 'চারটি ম্যাচ আমরা খেলেছি দুটি ভিন্ন ভেন্যুতে। দুই ভেন্যুর উইকেটের আচরণও ভিন্ন। তাই আমাদের সবার মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়েছে। আশা করি, এ ম্যাচগুলো আমাদের সহায়তা করবে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে।'
২০০৭ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলছেন নিয়মিত। এবার খেলতে নামবেন তৃতীয়বারের মতো। তার সঙ্গী দলনায়ক মাশরাফি, মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। সবাই খেলতে নামবেন তৃতীয়বারের মতো। তবে তারকা মূল্যে পেছনে ফেলেছেন অন্য সবাইকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮১ রানের আত্মবিশ্বাসী ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। প্রথম তিন ম্যাচের ভুলের ব্যর্থতা কাটিয়ে মুশফিকও ফিরেছেন রানে। দুরন্ত বোলিং করছেন মাশরাফি। অথচ দলের সেরা ক্রিকেটার সাকিব শুধু রান করেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, ৩১। ওই ইনিংসটি ছিল দৃষ্টিনন্দন। প্রস্তুতি ম্যাচে রান না করলেও নিজের ওপর অগাধ আত্মবিশ্বাস বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের- 'প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে নামার অপেক্ষায়। সেখানে ভালো করার বিষয়ে আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।' ক্রিকেট মহাযজ্ঞে টাইগারদের প্রথম ম্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। আইসিসির সহযোগী দেশটির বিপক্ষে গেল বছর এশিয়া কাপে হেরেছিল ঘরের মাঠে, যা এশিয়া কাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটন। অবশ্য আফগানদের তুলাধোনা করে প্রতিশোধ নিয়েছিল টি-২০ বিশ্বকাপে।