ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অভিমত, এবারের বিশ্বকাপে দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য খুব একটা নেই। উনিশ থেকে বিশ হতে পারে, আকাশ-পাতাল নয়। এর প্রথম প্রমাণ দিলেন আইরিশরা। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলতে গেলে উড়েই গেল আইরিশ ঝড়ে! ৩০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ২৫ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটে জয় তুলে নেওয়াকে উড়িয়ে দেওয়াই বলে। তবে ক্রিস গেইলরা বোধ হয় উড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক শকও পেয়েছেন। তিনশর ঊর্ধ্বে রান তাড়া করে বিশ্বকাপের মঞ্চে জয়ের রেকর্ড খুব একটা নেই। যে কটা আছে তার মধ্যে তিনটাই আয়ারল্যান্ডের! ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩২৮ রানের লক্ষ্য ৫ বল হাতে রেখেই স্পর্শ করেছিলেন আইরিশরা। সেবারই নেদারল্যান্ডসের ছুড়ে দেওয়া ৩০৭ রানের লক্ষ্য ছুঁয়েছিলেন ১৪ বল হাতে রেখে! তবে অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এবার। গতকাল নেলসনের স্যাঙ্টন ওভালে ২৫ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। টস জিতে প্রথমেই ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন আইরিশ অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড। ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে যান ক্যারিবিয়ানরা। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২০০ পার হবে, এমনটা ভাবা ছিল সত্যিই কষ্টকর। এ কষ্টকর কাজটাই করলেন সিমন্স ও ড্যারেন স্যামি। সিমন্স মাত্র ৮৪ বলে ৯ চার এবং ৫ ছক্কায় ১০২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। স্যামি করেন ৬৭ বলে ৮৯ রান। ৩০৪ রানের লক্ষ্য দাঁড় করানোর পর ক্যারিবিয়ানরা জয়ের স্বপ্নই দেখেছিলেন। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে আইরিশরা তাণ্ডবই শুরু করেন। স্টারলিংয়ের ৯২, জয়েসের ৮৪ ও নেইল ও'ব্রায়েনের ৮৪ রানে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড। অবশ্য ২৭৩ রানের পর তিনটা উইকেট হারিয়ে কিছুটা আশা জাগিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এর আগেই জয়ের বন্দরে তরী ভেড়ানোর সব আয়োজন সম্পন্ন করেন আইরিশরা। ৪৬তম ওভারের পঞ্চম বলে টেইলরকে পুল করে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন জন মুনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার জয় করেন পল স্টারলিং। এমন অসাধারণ এক জয়ের পর আইরিশ অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড বলছেন, 'এটা আমাদের জন্য নিশ্চয়ই অসাধারণ এক জয়। পরবর্তী কয়েকটা ম্যাচের জন্য এ জয় আমাদের প্রেরণা জোগাবে।' অন্যদিকে ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার বলছেন, 'আমরা তিনশর ওপর রানকেই জয়ের জন্য যথেষ্ট মনে করেছিলাম। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না।' পরবর্তী ম্যাচগুলোয় যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে হলে। কারণ তাদের খেলতে হবে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের সঙ্গে।