দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। অথচ বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে রান করতে পারেননি। তাই আত্মবিশ্বাসের পারদটা নেমে গিয়েছিল অনেক। সেজন্যই কালকের ম্যাচের আগের রাত ঘুমাতে বেশ কষ্ট হয়েছে তামিম ইকবালের। অস্থির পায়চারি করেছেন টিম হোটেলের লবিতে। হেঁটেছেন আর পরিকল্পনা এঁকেছেন স্কটিশদের বিপক্ষে সফল হওয়ার। তার রাত জাগা যে কতটা সহায়ক ছিল, কাল ৯৫ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংসই প্রমাণ। স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রান টপকে যে সহজ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ, তার নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম। খেলেছেন ৯৫ রানের ইনিংস। রেকর্ড গড়ে ম্যাচ জেতায় অবদান রাখায় যেমন খুশি দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪ হাজার রান করা তামিম, তেমনি হতাশ সেঞ্চুরির কাছে এসেও সেটা করতে না পেরে। বিশ্বকাপে এসেছিলেন একটি টার্গেট নিয়ে। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করবেন বিশ্বকাপে। কাল সেই সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাজঘরে ফিরেন ৫ রানের আপেক্ষ নিয়ে। দলের জয়ে আনন্দিত। স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির। কিন্তু কাল স্কটিশদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করতে না পারায় হতাশাই ঝরে পড়েছেন বাঁ হাতি ওপেনারের কণ্ঠে, 'আমি বাংলাদেশ থেকে আসার সময় একটি টার্গেট সেট করে এসেছিলাম। আমার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করব। কাল সেই সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু করতে পারিনি। তাই হতাশ। তারপরও আশায় বুক বেঁধে আছি। হয়তো পরের কোনো ম্যাচে সেঞ্চুরি করব।' বিশ্বকাপে এর আগে সর্বোচ্চ রান চেজ করে জেতার রেকর্ড ২০১১ সালে। চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের ২২৬ রান তাড়া করে জিতেছিল ২ উইকেটে। কাল যখন ৩১৯ রানের টার্গেট ছুড়ে দেওয়া হলো, তখন দ্বিধা, সংশয় সবই জন্ম নিয়েছিল। কিন্তু আত্মবিশ্বাস ছিল পুরো দলের। ব্যাটিং করতে নামার আগে কোচ শুধু জানিয়ে দেন প্রথমে ব্যাট করলে যে আগ্রাসন থাকত, সেটাই যেন থাকে। কোচের নির্দেশকে শিরোধার্য করে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন তামিম, 'কোচ বলে দিয়েছিলেন, যেন প্রথমে ব্যাট করার মতো মেজাজে ব্যাটিং করি। আমরা সেই পরিকল্পনা মাথায় রেখেই ব্যাটিং করেছি। শুধু আমি নয়, মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমও পরিকল্পিত ব্যাটিং করেছেন। আমরা টিম হয়ে খেলছি বলেই সহজে জিতেছি।'
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়নি বাংলাদেশের। এজন্য ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে অবশই হারাতে হবে ইংল্যান্ডকে। ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের রেকর্ডও রয়েছে টাইগারদের। তাই আত্মবিশ্বাসী তামিম, 'আমরা যদি টিম হয়ে খেলতে পারি, তাহলে বিশ্ব্বের যে কোনো বড় দলকে হারাতে পারি। আজ (কাল) আমরা টিম বাংলাদেশ হয়ে খেলেছি। তাই জিততে কোনো সমস্যা হয়নি। ইংল্যান্ড শক্তিশালী দল। তবুও আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।' ২০০৯ সালে বাংলাদেশ প্রথম ৩০০ রানের টার্গেট চেজ করে জিতেছিল। জিম্বাবুয়োর ৩১২ রান টপকে ছিল টাইগাররা ৪ উইকেট হাতে রেখে। ওই ম্যাচে তামিম রান করেছিলেন ১৫৪। কাল করেন ৯৫। ১০০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৯টি চার ও একটি ছক্কা।