২০১১ সালের ১১ মার্চ। বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে নাটকীয় সেই ম্যাচে দুই উইকেটের দারুণ এক জয় পেয়েছিল টাইগাররা। ব্যাট হাতে মাত্র ২৪ রান করেও সেই ম্যাচে 'মহানায়কে'র খ্যাতি পেয়েছিলেন শফিউল ইসলাম সুহাস। প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ২২৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১৬৯ রানে আট উইকেট পড়েছিল বাংলাদেশের। হাতে উইকেট ছিল মাত্র দুটি, বলও পর্যান্ত ছিল না। কিন্তু নবম উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে শফিউল অপরাজিত ৫৮ রানের ঝড়ো জুটিতে নিশ্চিত হয়ে যায় জয়। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সেই স্মৃতি রোমন্থনে ব্যস্ত ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এবারের বিশ্বকাপেও কী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে নাটকীয় কোনো ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে নাকি? আর এ ম্যাচে জিতলেই তো কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণ হবে বাংলাদেশের। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১১ সালের ওই ম্যাচের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে মিলে যােেচ্ছ অনেক ঘটনা। এবারের বিশ্বকাপেও সেই মার্চেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। শুধু তারিখ এদিক সেদিক, ১১ মার্চের জায়গায় ৯ মার্চ। ওই ম্যাচে ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে না থাকলেও ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের ইনজুরির কারণে দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পথে রওনাও দিয়েছেন ইমরুল।
স্মরণীয় সেই ম্যাচে 'নবম উইকেটে' শফিউলের সঙ্গী মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো এবার রয়েছেন ফর্মের তুঙ্গে। আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছেন ৬২ বলে ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস। আর শফিউলের বিশ্বকাপে যাওয়ার ঘটনা তো সবার জানাই। আল আমীন দেশে ফেরত আসায় ভাগ্য খুলে যায় তার। যদিও পেসার আল আমীনকে যে কারণে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সে কারণটা সমর্থকদের কাছে বিস্ময়ই লেগেছে। হোটেলে দেরিতে ফেরার কারণে দেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনা হয়তো ক্রিকেটের ইতিহাসে বিরল। সন্দেহ নেই আল আমীনের ঘটনা দলের ওপর নেতিবাচক একটা প্রভাব ফেলেছিল। বড় ম্যাচের আগে বিজয়ের মতো ওপেনারের ইনজুরিতে পড়াও নেতিবাচকই বটে। কিন্তু নেতিবাচক ঘটনারও নাকি কোনো না কোনো 'ইতিবাচক' দিক থাকে। তাই আল আমীনের দেশে ফেরত আসার ঘটনা এবং বিজয়ের ইনজুরি শেষ পর্যন্ত 'শাপেবর' হয়ে যাক। তাদের পরিবর্তে যাওয়া দুই ক্রিকেটারই ইংলিশদের বিরুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনুক- এমন প্রত্যাশাই দেশবাসীর।
কিন্তু কোটি টাকার প্রশ্ন হচ্ছে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে কি আদৌ একাদশে জায়গা পাবেন ইমরুল ও শফিউল? হঠাৎ করে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সঙ্গে ইমরুলের মানিয়ে দেওয়া কঠিন হলেও শফিউলকে মাঠে নামানো যেতেই পারে। রুবেল হোসেন খুব একটা সুবিধা করতে পারছেন না। তাই তাকে বিশ্রাম দিয়ে শফিউলকে সুযোগ দেওয়া যেতেই পারে! শফিউলের সুইং অ্যাডিলেডের উইকেটে হতে পারে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মৃত্যু-ফাঁদ!