প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মহাকাব্যিক এক জয়। কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিরুদ্ধে সেটিই ছিল টাইগারদের প্রথম জয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সাফল্যের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনও! পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ওই জয়ের পরের বছর 'টেস্ট মর্যাদা' পায় বাংলাদেশ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বাংলাদেশ সব টেস্ট খেলুড়ে দলের বিরুদ্ধে জয় পেলেও হারাতে পারেনি কেবল পাকিস্তানকে। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানোর পর টাইগারদের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। এবারের সিরিজেই 'পাকিস্তান কুফা' কাটাতে চান তাসকিন, সৌম্যরা।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে পেসার তাসকিন আহমেদ বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে এই সিরিজে আমরা ভালো করব। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবার আমাদের কুফা কেটে যাবে। আমি সিরিজ জয়ের কথাই ভাবছি। বিশ্বকাপে আমরা যেমন পারফরম্যান্স করেছি সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে অনেক ভালো হবে।' বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তাসকিন। এই তরুণ তুর্কি শিকার করেছিলেন ৯ উইকেট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজেও ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। তাসকিন বলেন, 'এটা ঠিক যে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে আমাদের এখানকার উইকেট অনেক বেশি ব্যাটিং সহায়ক। কিন্তু আমার মনে হয়, ভালো জায়গায় বল ফেলতে পারলে অবশ্যই ভালো করা সম্ভব। তবে অনেক ভালো করতে হবে এটা ভেবে আমি চাপ নিতে চাই না। আমার লক্ষ্য থাকবে নিজের স্বাভাবিক পারফরম্যান্সটা ধরে রাখা। আমার বিশ্বাস, সফল হতে পারব।'
বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ে আলো ছড়িয়েছেন সৌম্য সরকার। বিশ্বসেরা বোলারদের বিরুদ্ধে তার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি তিনি জাতীয় দলের সবচেয়ে নবীন সদস্য। পাকিস্তান সিরিজেও দাপুটের সঙ্গেই নিজের সামর্থ্য প্রদর্শন করতে মরিয়া সৌম্য। তিনি বলেন, 'এই সিরিজে আমরা ভালো করব। এজন্য বিশ্বকাপের গতিটা ধরে রাখতে হবে।' পাকিস্তানের পেস বোলিং সব সময়ই ভয়ঙ্কর। কিন্তু তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন সৌম্য। তার চিন্তায় কেবল নিজের পারফরম্যান্সের গ্রাফটাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। দলের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান বলেন, 'পাকিস্তানের বোলিং নিয়ে ভাবছি না। আমি আমার ব্যাটিং নিয়েই মনোযোগী। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে ভালো করা সম্ভব।'
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৭ এপ্রিল ওয়ানডে ম্যাচের মধ্যদিয়ে সিরিজ মাঠে গড়াচ্ছে। গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথম কোচ হাতুরাসিংহের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করেছেন মাত্র সাত ক্রিকেটার। এর মধ্যে ওয়ানডে দলে থাকা মাশরাফি, মাহমুদুল্লাহ, রুবেল, তাসকিন, রনি তালুকদার ও সৌম্য সরকারের সঙ্গে ছিলেন দেশের একমাত্র লেগ স্পিন বিশেষজ্ঞ জুবায়ের আহমেদ।
আইপিএলে খেলার কারণে সাকিব আল হাসান অনুপস্থিত ছিলেন। আর বিসিএল ফাইনাল ম্যাচ থাকায় অনুশীলনে থাকতে পারেননি প্রথম দুই ওয়ানডের জন্য ঘোষিত বাকি সাত ক্রিকেটার -আবুল হাসান রাজু, আরাফাত সানি, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মুমিনুল হক ও তামিম ইকবাল।
প্রথম দিন শুধু হালকা অনুশীলন করান হয়েছে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কন্ডিশন নিয়ে টুকটাক কথা বলেছেন কোচ। তারপরেও কালকের দিনটি ছিল রনি তালুকদারের জন্য স্মরণীয়। জাতীয় দলের সঙ্গে প্রথম অনুশীলন বলে কথা! অনুভূতি জানাতে গিয়ে রনি বলেন, 'সবাই এসে অভিনন্দন জানাচ্ছিল। কোচ উৎসাহ দিয়েছেন। প্রথম থেকে আমি খুব এক্সসাইটেড ছিলাম। যদিও সবাই পরিচিত। গত ৬-৭ বছর ধরে সবার সঙ্গেই ক্রিকেট খেলেছি। তারপরেরও পুরো সময় আমি খুব উপভোগ করেছি।' পেসার রুবেল হোসেন বলেন, 'চাপ ছিল না অনুশীলনে। তারপরও ব্যাটিং-বোলিং হালকা অনুশীলন করেছি। ভুলগুলো নিয়ে কাজ করেছি।'