ভাগ্যটা বোধহয় হেলে পড়েছে পাকিস্তানের দিকে। না হয় এমন হওয়ার কথা ছিল না। ওয়ানডে সিরিজ ও টি-২০ ম্যাচে বিধ্বস্ত পাকিস্তানের এমন ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনাই যখন কেউ দেখেননি, তখন মুশফিকদের ক্যাচ মিস ও ভাগ্যের সহায়তায় নির্ভার দিন পার করেছে মিসবাহ-উল-হকের পাকিস্তান। অবশ্য সফরকারীদের ইনিংস আরও ছোট হতে পারত। কিন্তু হয়নি। বাজে ফিল্ডিংয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাকফুটে চলে আসে টাইগাররা। চেয়ারে বসার রাস্তাটাকে অনেকটাই মসৃণ করে নিয়েছে পাকিস্তান। ভাগ্য একটাই সহায় ছিল সফরকারীদের যে, আম্পায়ার ইনিংসের একেবারে শুরুতে মোহাম্মদ হাফিজকে আউট দেওয়ার পরও রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন তিনি। এরপর রিয়াদ, মুশফিক দুটি ক্যাচ ছেড়েছেন আজহার আলির। দিন শেষে সেই হাফিজ ১৩৭ ও আজহার আলি ৬৫ রানে অপরাজিত। পাকিস্তানের রান ১ উইকেটে ২২৭।
খুলনা আবু নাসের স্টেডিয়ামের ফ্লাড উইকেটে দ্বিতীয় দিন শেষে অনেকখানি নিশ্চিন্ত মিসবাহ-আজহার আলিরা। বুধবার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের বোলিং কোচ মোস্তাক আহমেদ হাসিমুখে সে কথাই জানালেন। বললেন, 'আমাদের লক্ষ্য এখন ৩য় দিনের প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশের করা ৩৩২ রানকে টপকে যাওয়া। খেলা এখন পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণেই আছে। আমরা ম্যাচে বাংলাদেশকে বড় টার্গেট দিতে চাই।' যদিও পাকিস্তান পিছিয়ে আসে ১০৫ রানে। তারপরও হাতে ৯ উইকেট থাকায় বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখতেই পারেন লিজেন্ড লেগ স্পিনার।
হাফিজ ও আজহার আলি দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্নভাবে ১৭৭ রান যোগ করে দলকে শক্ত অবস্থান দিয়েছেন। দলের এই অবস্থানে সন্তুষ্ট মুস্তাক। কাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে সন্তুষ্টি নিয়ে হাসিমুখেই বলেন, 'ক্রিজে আজাহার আলি ও মোহাম্মদ হাফিজ এখন পুরোপুরি সেট হয়ে গেছেন। তারা দুজনেই অনেক ভালো ব্যাট করছেন। আমরা সবাই তাদের ব্যাটিং উপভোগ করেছি ও উৎসাহিত হয়েছি। তিনি বলেন, খুলনার এই উইকেটটি বেশ ফ্লাড। এখানে বোলাররা যেমন ভালো করতে পারে তেমনি ব্যাটসম্যানরাও বড় রান করতে পারে। ম্যাচের ২য় দিনে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে অল্প রানে গুটিয়ে ফেলতে পেরেছি। পুরো সময়ে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী ভালো খেলতে পেরেছি। পাকিস্তানের বোলিং ও ফিল্ডিং খুব ভালো হয়েছে। ম্যাচে এখন আমরা অনেকখানি নিশ্চিন্ত।'
পাকিস্তান লিজেন্ড ক্রিকেটার বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছেন। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানিয়েছেন, চাপে রাখতে চান বাংলাদেশকে। কিন্তু অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে কতটা সম্ভব, প্রশ্ন উঠছে। কেননা চলতি উদাহরণ সেটাই বলবে। আগের দিন যেখানে ৪ উইকেটে ২৩২ রান তুলে দিন পার করেছিল বাংলাদেশ, কাল থেমে দাঁড়ায় ৩৩২ রানে। শেষ ৬ উইকেট হারায় ৯৬ রানে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে আশা করতে পারে বাংলাদেশও। তারপরও স্কোর কার্ড দেখে বলাই যায়, নির্ভার পাকিস্তান।