কার্লোস তেভেজ বোকা জুনিয়র্সে এসেছিলেন ১৩ বছরের এক কিশোর হিসেবে। ১৯৯৭ সালের ঘটনা এটা। এর আগে তিনি চার বছর কাটিয়েছিলেন অল বয়েজে। আর্জেন্টিনায় খুব নামকরা ক্লাব না হলেও ফুটবল প্রতিষ্ঠান হিসেবে অল বয়েজের যথেষ্ট সুনাম আছে। অল বয়েজে বেড়ে ওঠা কিশোর তেভেজ বোকা জুনিয়র্সেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলেন। তার বিশ্বসেরা তারকা হয়ে উঠাও এখানেই। ২০০৪ সালে তিনি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়ানসে যাওয়ার সময়ই বিশ্ব দেখেছিল একজন ভবিষ্যৎ ফুটবল তারকাকে। এরপর বহু বছর কেটে গেছে। ওয়েস্ট হ্যাম, ম্যানইউ, ম্যানসিটি আর জুভেন্টাসে খেলেছেন এ আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। সফল হয়েছেন সবখানেই। গোলের বন্যা ছুটিয়েছেন। জয় করেছেন শিরোপাও। হাল আমলের সেরা ফুটবলারদের তালিকায় তার নামটা আছে উপরের দিকেই। সেই কার্লোস তেভেজ যিনি একসময় আলবার্তো জে. আরমান্ডো স্টেডিয়াম দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি ফিরেছেন তার আপন ঠিকানায়।
ঘটনাটা বেশ কয়েকদিন আগের। এরই মধ্যে ভক্তরা তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণও করে নিয়েছে বোকা জুনিয়র্সের জার্সিতে। তবে একজন তারকা হিসেবে তেভেজের যেমন স্বীকৃতি আর যতটা গ্রহণযোগ্যতা তা তিনি প্রথম দুই ম্যাচে দেখাতে পারেননি। বোকা জুনিয়র্স ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন তেভেজ ঝলক দেখার। গত ম্যাচে তেভেজ সেই ঝলক দেখিয়ে দিলেন। কোপা আর্জেন্টিনায় বেনফিল্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে বোকা জুনিয়র্স। পিরেজ আর ক্যালেরির পর গোল করেছেন তেভেজ। আর গোলটাও ছিল দর্শনীয়। ৩১ গজ দূর থেকে ফ্রি কিক। বেনফিল্ড গোলরক্ষক তেভেজের শটটা বুঝে ওঠার আগেই বল জালে জড়িয়ে যায়। তেভেজ দীর্ঘ ১১ বছর পর বোকা জুনিয়র্সে গোলের খাতা খুললেন। সর্বশেষ ২০০৪ সালে আর্জেন্টাইন এ ক্লাবের জার্সিতে গোল করেছিলেন তেভেজ। সেবার কোপা সাউদামেরিকানার ফাইনালে বলিভিয়ান ক্লাব বলিভারের বিপক্ষে গোল করে দলকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন তিনি।
তেভেজ বোকা জুনিয়র্সে একজন কিংবদন্তি। এখানে তিনি একবার আর্জেন্টাইন লিগ জয় ছাড়াও জিতেছেন ল্যাটিন ফুটবলের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট কোপা লিবারতেদরস, কোপা সাউদামেরিকানা এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ। জাতীয় দলে তেভেজ যত উপেক্ষিতই হোক না কেন, বোকা জুনিয়র্সের দর্শকদের কাছে তার মূল্য অনেক। আর তেভেজ! তার হৃদয়ের মণিকোঠায়ও বোকা জুনিয়র্সের জন্য রয়েছে বিশেষ স্থান। ৩১ বছরের এ আর্জেন্টাইন তারকার ক্যারিয়ার শেষ হতে এখনো অনেক দেরি। তবে বোকা জুনিয়র্সে নিজের সেরা সময়ের কিছুটা কাটানোর জন্যই ইউরোপিয়ান ফুটবলের শত আহ্বান পেছনে ফেলে ফিরে এসেছেন তিনি। এখানেই ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চান। জিততে চান একজন ফুটবলার হিসেবে প্রাপ্য সব কিছুই। তেভেজের এ স্বপ্ন পূরণ হবে তো!