টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেও জিততে পারল না ভারত। বার বার রঙ বদলানো ম্যাচে চার্লস, সিমন্স ও অ্যান্ড্রো রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপার পথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অন্যদিকে, নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ঘরে তোলার যে স্বপ্ন দেখছিল, সেই কোহলি, রোহিত ও ধোনিরা এখন ফাইনাল ম্যাচের শুধুই দর্শক। স্বপ্নের খুব কাছাকাছি না গেলেও সেমিফাইনালে হেরে হতাশায় মাথা নিচু করেই মাঠ ছেড়েছে টিম ইন্ডিয়া। শুধু ভারতীয় ক্রিকেট দল বললে ভুল হবে, ম্যাচ জয়ী রানটা আসার সঙ্গে সঙ্গে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্যালারি।
বৃহস্পতিবার রাতে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে বিরাট কোহলির অপরাজিত ৮৯ রানের ওপর ভর করে সুবাদে ২ উইকেটে ১৯২ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে লেন্ডন সিমন্সের হার না মানা ৮৩ রানের কল্যাণে ২ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবীয়রা। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। দু'দলই একবার করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাদ পেয়েছে।
১৯৩ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান ক্যারিবীয় ব্যাটিং-দানব ক্রিস গেইল (৫০)। পরের ওভারে সাজঘরের পথে ধরেন মারলন স্যামুয়েলসও (8)। আশিস নেহরার বলে অজিঙ্কা রাহানে ক্যাচ দেন এই ডানহাতি।
১৯ রানেই ২ উইকেট হারালেও তৃতীয় উইকেটে জনসন চার্লস ও লেন্ডল সিমন্সের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চার্লস তুলে নেন ফিফটি। বারবার বোলার পরিবর্তন করেও জুটি ভাঙতে না পারায় ১৪তম ওভারে কোহলিকে আক্রমণে আনেন ধোনি। আর নিজের প্রথম বলেই ব্রেক থ্রু এনে দেন ব্যাট হাতে ৮৯ রান করা কোহলি। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রোহিত শর্মার হাতে ধরা পড়েন চার্লস (৩৬ বলে ৫২)। চার্লস-সিমন্স জুটিতে আসে ৯৭ রান। চার্লস ফিরে গেলেও অশ্বিনের ‘নো’ বলে জীবন পাওয়া সিমন্স আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। সিমন্স ফিফটিও তুলে নেন। ফিফটির পরই অবশ্য ফিরে যেতে পারতেন তিনি। তবে আবারও জীবন পান ‘নো’ বলের কল্যাণে! এবার ‘হতভাগা’ বোলার হার্দিক পান্ডিয়া।
শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। ১৮তম ওভারে বুমরাহ প্রথম তিন বলে ‘ডট’ দিলেও চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকান সিমন্স। পরের বলে ২ রান নিয়ে শেষ বলে চার মারেন সিমন্স। অর্থাৎ শেষ দুই ওভারে দরকার পড়ে ২০ রান।
১৯তম ওভারে রবীন্দ জাদেজা প্রথম চার বল থেকে মাত্র ৩ রান দিলেও পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকান রাসেল। পরের বলে মারেন চার। শেষ ওভারে দরকার পড়ে ৮ রান। কোহলির করা শেষ ওভারে প্রথম দুই বল থেকে ১ রান এলেও পরের দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিবীয়দের কলকাতার ইডেন গার্ডেনের ফাইনালে পৌঁছে দেন আন্দ্রে রাসেল। ৫১ বলে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৮২ রানে অপরাজিত থাকেন সিমন্স। মাত্র ২০ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন রাসেল।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব