২০০৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালির মার্কো মাতেরাজ্জিকে আচমকা মাথা দিয়ে ঢুঁস মেরে ফ্রান্সের জিনেদিন জিদানকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা এখনও সবার চোখের সামনে ভাসে। যার ফলশ্রুতিতে ক্যারিয়ারের সেই শেষ ম্যাচে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় সাবেক ফিফা বর্ষসেরাকে। নির্ধারিত সময়ে ১-১ ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে হেরে দ্বিতীয় বারের মতো ট্রফি ছুঁয়ে দেখা হয়নি ফ্রান্সের।
কিন্তু ওই দিন মাঠে কি ঘটেছিল, যে জিদান তাকে ঢুঁস মেরে দলকে অসহায় অবস্থায় ফেলে মাঠ ছাড়েন। তাই তো এখনও এ নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় জিদান কিংবা মাতেরাজ্জিকে। যদিও তারা তাতে ব্রিবত ও ক্ষুদ্ধ হন। তবে মিডিয়া কিন্তু সেটা নিয়ে কথা বলতে ছাড়েনি।
ঘটনাটি ঘটার পর থেকে এর প্রকৃত কারণ খুঁজে ফিরছিলেন সবাই। এই বিষয়ে কোনো মিডিয়া দাবি করেছিল জিদানের বোনকে নিয়ে খারাপ কথা বলেছিলেন মাতেরাজ্জি। কেউ আবার দাবি করেন, ‘না বোনকে নিয়ে নয়; জিদানের মাকে নিয়ে খারাপ কথা বলেছিলেন ইতালির ফুটবলারটি।’
দিনটি ছিল ৯ জুলাই। সেই ঘটনার এক দশক পূর্তি হয়েছে শনিবার। আর এই দিনটিতেই সেই ঘটনার আসল সত্যিটা সবাইকে জানিয়ে দিলেন মার্কো মাতেরাজ্জি।
ইতালির একটি মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাতেরাজ্জি বলেছেন, ‘আমি এই বিষয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেননা, সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করে কেন জিদান আমাকে ঢুঁস মেরেছিলেন? আমি তাকে কি বলেছিলাম? যদিও আমি যা বলেছিলাম তাতে জিদানের কাছ থেকে ওতটা প্রতিক্রিয়া আশা করিনি। কেননা, ইতালির বিভিন্ন শহরে (যেমন: রোম, নেপোলি, মিলান, তুরিন কিংবা ফ্রান্সের প্যারিসেও) এর চেয়েও খারাপ কথা শুনা যায়।’
সেই খারাপ কথাটি কি ছিল? না, সেই কথা মাতেরাজ্জি প্রকাশ করেননি। তবে বলেছেন, ‘ওই ঘটনার পর এবং এখনও বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিবেদনে দেখতে পাই যে আমি নাকি জিদানের মাকে নিয়ে খারাপ কথা বলেছিলাম। বিষয়টি আসলে তা ছিল না। আমি কিশোর বয়সে নিজের মাকে হারিয়েছিলাম। তাই অন্যের মাকে নিয়ে খারাপ কথা বলতে পারিনা আমি। প্রকৃতপক্ষে জিদানকে তার বোন সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলাম।’
মাতেরাজ্জি আরও বলেছেন, ‘আমি আসলেই বুঝতে পারিনা যে ওই ঘটনা কেন এতটা গুরুত্ব পেয়েছে। কেনইবা মানুষ এটাকে এত অতিরঞ্জিত করে। এমনকি অনেকে এর ভুল ইতিহাসও জানে। ইতালিতেই অনেক মানুষ আমাকে বলে, মাতেরাজ্জি জিদানকে ঢুঁস মেরে তুমি ভালো একটা কাজ করেছিলে। একবার অবস্থাটা বুঝুন; ঢুঁস খেলাম আমি, আর কোনো কোনো মানুষ কিনা জানে আমিই জিদানকে ঢুঁস মেরেছিলাম!’
বিডি-প্রতিদিন/১০ জুলাইন, ২০১৬/মাহবুব