বাংলাদেশ দল এশিয়া কাপের মিশনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই এবারের আসরে টাইগারদের মিশন শুরু। দলের নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান তাই প্রত্যাশার পারদও চড়া। তবে আছে একটা সম্পূরক প্রশ্ন, সাকিবের হাতে যে স্কোয়াড আছে তা নিয়ে তিনি আসলে কতোদূর যেতে পারবেন?
যদি ওপেনিংয়ের হিসেবে আসা যায়, তবে দেখা যায় কাগজে কলমে স্বীকৃত ওপেনার মাত্র ৩ জন। প্রথমেই আছেন এনামুল বিজয়, যার অনেক দিন ওভাবে এমন বড় আসরে খেলাই হয়নি। ফলে এনামুলের কাছে খুব একটা প্রত্যাশা করা যায় না। সবশেষ জিম্বাবুয়ে সফরেই তিনি খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
নাঈম শেখের কাছে বাংলাদেশের খুব একটা প্রত্যাশা করার নেই। কারণ তিনি ধীরগতিতে রান তোলার জন্য সমালোচিত হয়ে আসছেন বহুদিন। ইনিংসে যা রান করেন, তাতে নিজের পরিসংখ্যান খানিকটা ভারী হলেও দলীয় হিসাবে তা খুব একটা কার্যকর নয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নাঈম ম্যাচ খেলেছেন ৩৪টা, রান ৮০৯। তার গড় ২৪.৫১ আর স্ট্রাইকরেট ১০৩-এর একটু বেশি; যা মোটেও টি-টোয়েন্টি সুলভ নয়।
পারভেজ ইমনও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একেবারে আনকোরা। মাত্র একটা ম্যাচ খেলেছেন তিনি, করেছেন মাত্র দুই রান। তাই তার কাছে সাকিব বেশিকিছু চাইতে পারেন না।
মুশফিকুর রহিমও অনেকদিন টি-টোয়েন্টির বাইরে। মুশফিক যে পজিশনে ব্যাট করেন, টি-টোয়েন্টি সেই পজিশনে যা রান-গড়-স্ট্রাইকরেট মুশির দরকার, তেমনটা তার নেই। ১০০ টি-টোয়েন্টি খেলা মুশির গড় মাত্র ১৯.৯৩ আর স্ট্রাইক রেট ৭৯-এর একটু বেশি। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফর্মটাও আজকাল সুবিধার নয়, টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং আপাতত তিনি করতে পারছেন না।
তরুণ অলরাউন্ডার যারা আছেন যেমন শেখ মেহেদী, মেহেদী মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন কিংবা সাইফউদ্দিন; নামের ভার বাস্তবতার চেয়ে একটু বেশি হলেও দলের প্রয়োজনে ঠাণ্ডা মাথায় হাল ধরার মতো আত্মবিশ্বাস এখনো তারা অর্জন করতে পারেননি বলেই মনে করছেন খেলা সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই আবার দলে নিয়মিত নন।
ফিনিশিংয়ে সাব্বির রহমানের ওপর ভরসা করার মতো অবস্থাও সাকিবের নেই। কারণ সাব্বির অনেকদিন দলের বাইরে, সাথে ঘরোয়াতেও সম্প্রতি তার নজরকাড়া কোন পারফর্ম্যান্স নেই।
তবে তরুণদের মধ্যে আফিফ ভালো শেপে আছেন, তিনি দিনে দিনে আরও পরিণত হয়ে উঠছেন। ফলস্বরূপ পেয়েছেন সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব। তবে আফিফের ধারাবাহিকতা নিয়েও আছে প্রশ্ন।
আর বোলিংয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের সেই ধার আর নেই, তাসকিনের গতি থাকলেও লাইন-লেন্থ নিয়ে আছে যথেষ্ট প্রশ্ন। এবাদত টি-টোয়েন্টি আনাড়ি। সবমিলিয়ে পেস ব্যাটারি যে কার্যকর কিছু করবেই সাকিব সেই ভরসাও করতে পারছেন না। আবার স্পিনে নাসুমের গতিবিধি ভালো, তবে নার্ভ ধরে রাখার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিটা তার মধ্যেও আছে।
সবমিলিয়ে সাকিবের দলে প্রতিভা অনেক, অভিজ্ঞতাও কম নয়। তবে সাকিবের দলে ভরসা করার মতো লোকের সংখ্যা কম, অভাব আছে ধারাবাহিকতায়। তাই ১৭ নামের মাঝেও সাকিব অনেকটা নিঃসঙ্গ শেরপা, রবীন্দ্র জাদেজা কিংবা হার্দিক পান্ডিয়ার অভাব এশিয়া কাপের মঞ্চে তাকে ভোগাবেই। তাই সাকিবকে লড়তে হবে অনেকটা ওয়ান ম্যান আর্মির মতো।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল