ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সবগুলোই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটা বেশ দারুণভাবেই করলো টাইগাররা। শেখ মেহেদি হাসানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সাত রানে হারায় বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে সফরকারীরা।
শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে রেখে মেহেদি প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডার ভেঙে দেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন। মেহেদি ম্যাচে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন এবং ম্যাচসেরার পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ডটই দিয়েছেন ১৫টি!
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে শেখ মেহেদী বলেন, ‘নতুন বলে তো সবসময়ই বল করে থাকি। নরমালি যে প্রসেসে এগোচ্ছিলাম সেভাবেই বল করেছি। ওদের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিল, আমার লক্ষ্য ছিল ওদের যাতে সহজেই শট খেলতে না দিতে পারি। ওরা তো আসলে শক্তিশালী, ওদের আসলে প্ল্যান করে বল করেছি। আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছি।’
এবার সিরিজও জিততে চান মেহেদী। তিনি বলেন, ‘টেস্ট সিরিজে আমরা জয় দিয়ে শেষ করেছি। ওয়ানডেতে ভালো শুরু করেও ধরে রাখতে পারিনি। আলহামদুলিল্লাহ বিজয়ের মাসে টি-টোয়েন্টিটা ভালো দিয়ে শুরু করলাম। সামনে আরও দুটি ম্যাচ আছে। সিরিজ জেতার জন্য যা কিছু করতে হবে, তার জন্য আমরা সবাই প্রস্তুত আছি।’
সেন্ট ভিনসেন্টে টসে হেরে শুরুতে ব্যাট করে খুব একটা ভালো পুঁজি পায়নি টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রানের সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। লক্ষ্যটা আহামরি বড় না হলেও বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ জিতে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৬ রান করেছেন শেখ মেহেদী হাসান। এরপর বল হাতেও দেখান ঝলক।
দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে ব্রেন্ডন কিং সাজঘরের পথ ধরার পর অফ স্পিন বল দিয়ে ক্যারিবীয়দের রীতিমতো চেপে ধরেন মেহেদী। একে একে তুলে নিতে থাকেন ডেঞ্জারম্যান নিকোলাস পুরান, জনসন চার্লস, আন্দ্রে ফ্লেচার ও রোস্টন চেজকে। তার অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে ৩৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় স্বাগতিক দল (৩৮/৫)। সেখান থেকে লড়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। গুড়াকেশ মোতি অধিনায়কের সঙ্গে ২০ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন তানজিম হাসান সাকিবের শিকার হয়ে (৫৮/৬)।
পরের ওভারে আকিল হোসেনকে ফেরান স্পিনার রিশাদ হোসেন (৬১/৭)। এরপর রোমারিও শেফার্ডকে (১৯ বলে ২২) নিয়ে ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের আশা জাগান রভম্যান। এই দুজন ক্রিজে সেট, তখন স্বাগতিকদের প্রয়োজন পড়ে ১৮ বলে ২০ রান। জয় দেখছিল ক্যারিবীয়রা। কিন্তু চমক যে তখনো বাকি ছিল। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে শেফার্ডকে বিদায় করে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন (১২৮/৮)। ওই ওভারে তাসকিন দিলেন মাত্র ২ রান! পরের ওভারে সাকিব দিলেন ৮ রান।
শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১০ রান। জোসেফ ১ রান দিয়ে স্ট্রাইক দেন পাওয়ালকে। দ্বিতীয় বলটি ডট দেন হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া ফুল লেংথের বলটি খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার লিটন দাসকে ক্যাচ তুলে দেন পাওয়েল (১৩৯/৯)! চতুর্থ বলে ওবেড ম্যাকয় একটি বাই রান নিতে সমর্থ হন। পঞ্চম বলে আলজারি জোসেফকে বোল্ড করে বাংলাদেশের অভাবনীয় এক জয় নিশ্চিত করেন হাসান।
বুধবার একই মাঠে একই সময়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। ওই ম্যাচেই সিরিজ জিতে নেয়ার সুযোগ আছে। না পারলে পরের ম্যাচে আরেকটি সুযোগ আসবে শেখ মেহেদী, লিটনদের সামনে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম