২২ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:১০

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে যা ভাবছেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা

অনলাইন ডেস্ক

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে যা ভাবছেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা

ফাইল ছবি

ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি ম্যাচ মানেই বিশ্বজুড়ে দর্শক-সমর্থকদের মাঝে কাজ করে বাড়তি উন্মাদনা। লড়াইটা বিশ্ব মঞ্চে হলেতো কথাই নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লড়াই হিবে আগামী ২৪ অক্টোবর। মাঠে নামার আগে সেই উত্তাপ বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে। এই ম্যাচকে ফাইনালের আগেই আরেকটি ফাইনাল হিসেবে দেখছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক লড়াই বন্ধ আট বছর ধরে। এখন মাত্র আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোয় দেখা হয় দুই দেশের। দুবাইয়ে আগামী রোববার টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হবে দল দুটি। বুধবার রাতে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আলাপচারিতায় হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি নিয়ে অভিমত জানান ইনজামাম।

তিনি বলেন, গ্রুপ পর্বে ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচ ফাইনালের আগে আরেকটি ফাইনাল। অন্য কোনো ম্যাচ এমন উন্মাদনা তৈরি করতে পারে না। এমনকি ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত-পাকিস্তানের যাত্রা শুরু হয়েছিল তাদের মুখোমুখি লড়াই দিয়ে, শেষটাও হয়েছিল এই দুই দলের ম্যাচ দিয়ে। দুটি ম্যাচকেই মনে হয়েছিল ফাইনালের মতো। এই ম্যাচে যে দল জিতবে, তারা মানসিকভাবে অনেক চাঙা থাকবে।

চার বছর আগের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারলেও ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের গুঁড়িয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। তবে ওয়ানডে হোক বা টি-টোয়েন্টি, বিশ্বকাপে কখনোই ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুই দলের ৭ বারের লড়াইয়ে ভারত জিতেছে প্রতিটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৫ লড়াইয়ে ভারতের সরাসরি জয় ৪টিতে। আরেকটি হয়েছিল টাই। ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই টাই ম্যাচেও পরে টাইব্রেকারে হেরে যায় পাকিস্তান। এবারের বিশ্বকাপে ফেভারিটের তালিকায় অনেকেই ওপরের দিকে রাখছেন ভারতকে।

এ প্রসঙ্গে ইনজামাম বলেন, কোনো টুর্নামেন্টে নির্দিষ্ট করে বলা যায় না, কোন দল জিতবে। তবে কোন দলের জেতার কতটা সম্ভাবনা আছে, সেটা ধারণা করা যায়। আমার মতে, এই টুর্নামেন্টে অন্য যে কোনো দলের চেয়ে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বেশি সম্ভাবনা আছে, বিশেষ করে এমন কন্ডিশনে। তাদের দলে অভিজ্ঞ টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় আছে।

বিশ্বকাপের ভেন্যু সংযুক্ত আরব আমিরাতে লম্বা সময় ধরে আইপিএলে খেলেছেন ভারতের ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে ২০০৭ আসরের শিরোপাজয়ী দলটি। ইনজামামের চোখে, এমন কন্ডিশনে ২০ ওভারের ক্রিকেটে সবচেয়ে বিপজ্জনক দল ভারত। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারত তাদের প্রস্তুতি ম্যাচটি সহজেই জিতেছে। ১৫৫ (১৫৩) রান তাড়া করতে নেমে বিরাট কোহলির ব্যাটিং তাদের প্রয়োজনই হয়নি। এই ধরনের উপমহাদেশীয় পিচে, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর টি-টোয়েন্টি দল।

বিশ্বকাপের আসরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই স্নায়ুর লড়াই। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে এমনটাই মন্তব্য করেছেন সাবেক ক্রিকেটার কপিল দেব। ৮২ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত অধিনায়ক জানিয়েছেন, হাইভোল্টেজ এই ম্যাচ যেমন নতুন তারকার জন্ম দেয়, তেমনই এক ঝটকায় মাটিতে আছড়ে ফেলে রথী-মহারথীদেরও।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ প্রসঙ্গে কপিল দেব আরও বলেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই উন্মাদনার শেষকথা। এই ম্যাচে যে দল স্নায়ুর চাপ সামলে সেরাটা মেলে ধরতে সক্ষম হবে, তারাই বাজিমাত করবে। এক্ষেত্রে ভারতীয় দল একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চে। আর সেই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে চাপ সামাল দেওয়ার ক্ষমতা। মোদ্দাকথা, খোলা মনে ম্যাচ উপভোগ করতে হবে। আর যারা অতিরিক্ত চাপের বোঝা কাঁধে তুলে নেবে তারা পড়বে বিপদে।

সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেবাগ এবং সাবেক পাকিস্তান ক্রিকেটার সেলিম মালিক মনে করেন, এই ম্যাচে ভারতই এগিয়ে। পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে ভারত কখনোই পাকিস্তানের কাছে হারেনি। শেবাগ বলেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটারদের উপর চাপ কম থাকবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত সবসময়ই পাকিস্তানের তুলনায় ভালো খেলেছে। তার দাবি, খেলার আগে ভারতীয় ক্রিকেটাররা কখনো বড় বড় কথা বলেন না। সেটা আসে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের তরফ থেকে। ভারত সবসময় ভালো করে প্রস্তুতি নেয়। আর ভালো প্রস্তুতি থাকলে ফলাফলও ভালো হয়।

এক সাক্ষাৎকারে সেলিম মালিক বলেছেন, কোনো সন্দেহ নেই, পাকিস্তানের তুলনায় ভারত এবার এগিয়ে। আইপিএল খেলার ফলে টি-টোয়েন্টিতে ভারত খুবই ভালো জায়গায় এসে গেছে। ভারতীয় দলকে হারানো খুবই কঠিন। তার মতে, ভারত চাপের মুখে ভেঙে পড়লে অঘটন ঘটতে পারে। সেলিম মালিক পাকিস্তান ক্রিকেট কর্তাদের প্রবল সমালোচনা করেছেন। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রথমে একটা দল বাছা হলো। তারপর সমালোচনা হওয়ায় দল বদলে ফেলা হলো। এটা অর্থহীন। এরকম করলে ক্রিকেটাররা চাপে পড়ে। মালিকের মতে, পাকিস্তানের ব্যাটিং ভরসা হলেন বাবর আজম এবং ফখর আজম খান।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর