ইতিহাসে সবচেয়ে সুউচ্চ ভবন
মানুষ যখন থেকে নির্মাণ করতে শুরু করেছে, তখন থেকে অসংখ্য স্থাপত্য বা উদ্ভাবন; একাল-সেকাল- সবকালে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। কয়েক হাজার বছর ধরে এসব নির্মাণ আকাশের উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা আমাদের বিভিন্ন প্রেরণার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছে। ধর্ম, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, বাণিজ্য এবং নকশা এমন কয়েকটি নাম।
প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বছর আগে প্রাচীন মিসরীয়রা তাদের ফারাওদের মমি করা দেহ রক্ষার জন্য বিশাল পিরামিড তৈরি করেছিল। বিশ্লেষকদের ভাষ্য, পৃথিবীর বুকে পিরামিড প্রথম উঁচু অট্টালিকা। তার পর কেটে যায় বহু বছর। কিন্তু নির্মাণ বা প্রকৌশলী উদ্ভাবন থেমে থাকেনি। পরবর্তীকালে খ্রিস্টানরা তাদের ধর্মীয় উপাসনালয় ক্যাথেড্রালগুলো তৈরিতে গথিক নকশা এবং নান্দনিকতায় পূর্ণ করে। যেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল ‘উড়ন্ত বাট্রেস’ এবং ‘খিলানযুক্ত খিলান’। যা তৎকালীন পৃথিবীতে এসব স্থাপনাকে সুউচ্চ দালানের তকমা দেয়। যার অন্যতম উদাহরণ যুক্তরাজ্যের লিংকন ক্যাথেড্রাল, ক্যাথেড্রাল অব আওয়ার লেডি অব স্ট্রাসবার্গ। আর ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় হিসেবে আসে ‘টুইন টাওয়ার’। আমেরিকানরা নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রসারের জন্য এই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি তৈরি করেছিল; যা আজ কেবলই স্মৃতি। কারণ, আকাশচুম্বী ভবনটি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
আজকের বিশ্বে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অর্থনীতি এবং আধুনিক নগরায়ণ। ফলে বাড়তি মানুষের আবাসনের জন্য নির্মাণ করতে হচ্ছে উঁচু উঁচু ভবন। কিছু কিছু ভবন এতটাই উঁচু যে, যেন আকাশকে ছোঁবে। বর্তমান পৃথিবী সত্যিকার অর্থেই আকাশছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ফলে সেসব উঁচু দালান কিংবা স্থাপনার শহর আলাদা পরিচিতি পেয়েছে। আমেরিকার শহরগুলোয় নগরবিদরা ১৮৭০-এর দশকে উচ্চতর ভবন তৈরি করতে শুরু করেন। সে সময় তারা গৃহযুদ্ধের পর পরই ব্যাপক হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখেন। চীনের মতো দেশের জন্য আকাশচুম্বী ভবনগুলো আরও বেশি অর্থপূর্ণ। কারণ, সেখানে সীমিত ভূমি এবং উল্লেখযোগ্য হারে জনসংখ্যার চাপ রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, বর্তমান বিশ্বে চীন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আকাশচুম্বী ভবনের দেশ। চীনারা ৩ হাজারেরও বেশি উঁচু ভবন নির্মাণ করেছে। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে উন্নত দেশগুলোয় বিস্ময়কর সুউচ্চ ভবনের নির্মাণশৈলীর দেখা মেলে। যার অন্যতম কারিগর আমেরিকার প্রকৌশলবিদরা। তৎকালীন আমেরিকার ‘শিকাগো’কে আধুনিক ‘আকাশচুম্বী ভবনের জন্মস্থান’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ১৮৮৫ সালে বিশ্ববাসী আমেরিকার বুকে প্রথমবারের মতো ‘হোম ইন্স্যুরেন্স বিল্ডিং’-এর নির্মাণ দেখে। সে সময় উঁচু স্থাপত্যযুগের সূচনা হয়। ইস্পাত ফ্রেমে নির্মাণ কৌশলে বিপ্লব ঘটে।
এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবনের তালিকায় থাকা ১০টি ভবন হলো বুর্জ খলিফা, মারদেকা, সাংহাই টাওয়ার, মক্কা ক্লক রয়েল টাওয়ার, পিং অ্যান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স সেন্টার, লোটে ওয়ার্ল্ড, ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার, তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার ও সিআইটিআইসি টাওয়ার। এসব ভবন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বুর্জ খলিফা
দুবাই, আরব আমিরাত
১৬৩ তলার বুর্জ খলিফা আজকের বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাশ্চর্য কীর্তি। যেন বিস্ময়ের প্রতীক হয়ে মাথা তুলে আছে আরব আমিরাতের বুর্জ খলিফা। ২০০৪ সালের ৬ জানুয়ারি বুর্জ খলিফা তৈরির কাজ শুরু হয়। পৃথিবীর উচ্চতম বহুতল ভবন তৈরি হতে সময় লেগেছিল পাঁচ বছর। নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০০৯ সালে। একে পৃথিবীর উচ্চতম বহুতল ভবন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বুর্জ খলিফার অবস্থান। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের নামে এর নামকরণ। ৮২৮ মিটার উচ্চতার ভবনটিতে আছে ১৬৩টি তলা। স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিডমোর ও ওয়িংস অ্যান্ড মেরিলের স্থপতি অ্যাড্রিয়ান স্মিথ আকাশচুম্বী ভবনটির নকশা করেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এখানে অ্যাপার্টমেন্ট এবং স্টুডিও মিলিয়ে মোট বাসস্থানের সংখ্যা ৯০০। তাতে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ থাকেন। বুর্জ খলিফার মধ্যে রয়েছে মোট চারটি সুইমিং পুল, লাইব্রেরি ও রেস্তোরাঁ (‘অ্যাটমোসফিয়ার’)। আছে ‘দ্য ক্লাব’, যা মূলত একটি স্বাস্থ্যচর্চা কেন্দ্র। বহুতলের ৪৩, ৭৬ এবং ১২৩ তলায় রয়েছে কাচ দিয়ে মোড়া হল ঘর (স্কাই লবি)।
মক্কা ক্লক রয়েল টাওয়ার
মক্কা, সৌদি আরব
৪,৫০০ বছর আগে থেকে আজকের বিশ্ব; দীর্ঘ এই সময়ে পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য আকাশচুম্বী অট্টালিকা নির্মাণ হয়েছে। আর বর্তমানে বিশ্বে চীন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক (৩ হাজার) আকাশচুম্বী ভবনের দেশ। -তথ্যসূত্র : দ্য টাওয়ার ইনফো
মক্কা ক্লক রয়েল টাওয়ার বিশ্বের চতুর্থ সুউচ্চ ভবন। সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত ভবনটি আবরাজ আল বাইতিন মক্কা নামেও পরিচিত। মক্কা নগরীর পবিত্র মসজিদ মাসজিদুল হারামের দক্ষিণ প্রবেশপথ সংলগ্ন এলাকায় এর অবস্থান। এটি মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উঁচু ভবনও। শৈলী, সৌন্দর্য ও আভিজাত্যে পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনা এই মক্কা ক্লক টাওয়ার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঘড়িটির অবস্থানও এ ভবনে। মক্কা ক্লক রয়েল টাওয়ারের নকশা করেছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান দার আল হানদাসাহ শাইর অ্যান্ড পার্টনারস। ১২০ তলাবিশিষ্ট ভবনটির উচ্চতা ৬০১ মিটার। ২০০৪ সালে এই টাওয়ারের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১১ সালে। ২০১২ সালে ভবনটির উদ্বোধন হয়। প্রতিবছর মক্কায় যাওয়া হাজিদের থাকার জন্য ভবনটিতে আছে সাতটি হোটেল।
লোটে ওয়ার্ল্ড
সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে লোটে ওয়ার্ল্ড টাওয়ারের অবস্থান। এটি মূলত দেশটির সবচেয়ে ঘণবসতিপূর্ণ শহরে নির্মাণ করা হয়। ১২৩ তলাবিশিষ্ট ভবনটির উচ্চতা ৫৫৫ মিটার (১৮১৯ ফুট)। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে উঁচু এবং বিশ্বের ষষ্ঠ উঁচু ভবন। এ ভবনেরও নকশা করেছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান আমেরিকার কোহন পেডারসেন ফক্স অ্যাসোসিয়েটস। ২০১৭ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এতে আছে বৃহৎ থিম পার্ক, একটি আউটডোর পার্ক, অফিস, অ্যাপার্টমেন্ট, একটি হোটেল, খুচরা আউটলেট, একটি কনসার্ট হল এবং একটি পর্যবেক্ষণের জায়গা (ভিউয়িং প্ল্যাটফর্ম)। লোটে টাওয়ার মূলত মিশ্র ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ৭৬ থেকে ১০১ তলায় হোটেল, ৪২ থেকে ৭১ তলা পর্যন্ত বাসস্থান এবং বাকি সবগুলো অফিসের জন্য ব্যবহার করা হয়।
সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার
গুয়াংজু, চীন
ধচীনের গুয়াংজুতে অবস্থিত গুয়াংজু সিটিএফ (চৌ তাই ফুক) ফিন্যান্স সেন্টারের অবস্থান। স্থানীয়দের কাছে ভবনটি গুয়াংজু ওয়েস্ট টাওয়ার হিসেবে পরিচিত। এটি বিশ্বের অষ্টম উঁচু এবং চীনের তৃতীয় সর্বোচ্চ উঁচু ভবন। ১১১ তলাবিশিষ্ট ভবনটির উচ্চতা ৫৩০ মিটার (১৭৩৯ ফুট)। গুয়াংজু সিটিএফ চীনের তৃতীয় সর্বোচ্চ উঁচু ভবনও। ভবনটিতে আছে অফিস, একটি হোটেল, বিলাসবহুল বাসস্থানসহ বিভিন্ন সুব্যবস্থা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান কোহন পেডারসেন ফক্স অ্যাসোসিয়েটস এটির নকশা করেছে। ২০১৬ সালে সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টারের নির্মাণকাজ শেষ হয়। টাওয়ারটির অন্যতম আকর্ষণ হলো ১১১ তলার পর্যবেক্ষণ ডেক। যা বুর্জ খলিফার পর্যবেক্ষণ ডেক থেকে সামান্য নিচু।
সিআইটিআইসি টাওয়ার
বেইজিং, চীন
বেইজিংয়ে অবস্থিত সিআইটিআইসি টাওয়ারটি চায়না জুন টাওয়ার নামেও পরিচিত। এটি বেইজিংয়ে সবচেয়ে উঁচু ভবন। ভবনটির উচ্চতা ৫২৮ মিটার (১৭৩১ ফুট)। চায়না জুন টাওয়ারটি বেইজিংয়ের সেন্ট্রাল বিজনেজ ডিস্ট্রিকে অবস্থিত। ২০১১ সালে এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল, আর শেষ হয় ২০১৮ সালে। ১০৯ তলাবিশিষ্ট ভবনটির মাটির নিচে আছে আটটি ফ্লোর। ভবনটি নানা উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন- ভবনটির প্রথম ৬০ তলা পর্যন্ত অফিসের জায়গা, ২০টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট এবং ৩০০ কক্ষসহ একটি হোটেল ও কয়েকটি রেস্তোরাঁ। আমেরিকার বিখ্যাত স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান কোহন পেডারসেন ফক্স অ্যাসোসিয়েটস এটির নকশা করেছে। টাওয়ারটি প্রাচীন চীনা জাহাজ ‘জুন’-এর আদলে (অনুপ্রেরণায়) এর নকশা করা হয়েছে।
পিং অ্যান ইন্টা. ফিন্যান্স
শেনজেন, চীন
চীনের শেনজেনে অবস্থিত দ্য পিং অ্যান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স সেন্টার বিশ্বের পঞ্চম সুউচ্চ ভবন। এটি চীনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং এশিয়ার তৃতীয় উঁচু ভবন। ১১৫ তলাবিশিষ্ট ভবনটির উচ্চতা ৫৯৯ মিটার। নিউইয়র্কভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান কোহন পেডারসেন ফক্স অ্যাসোসিয়েসসের নকশা করেছে। যা দেখতে অনেকটা সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফিন্যান্স এবং গুয়াংজু সিটিএফ সেন্টার (চৌ তাই ফুক)-এর মতো অন্যান্য ভবনের সঙ্গে বিশ্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৭ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। যাই হোক, ভবনটির কাঠামোগত নকশা করে নিউইয়র্কভিত্তিক থর্টটন টোমাসেটি নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। বিশাল টাওয়ারটির ফ্লোর আনুমানিক প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬০০ বর্গমিটার। এটি অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি এই ভবনটিতে রয়েছে বিশাল অফিসের জায়গা, কয়েকটি সম্মেলন কেন্দ্র, খুচরা দোকানপাট এবং একটি বিলাসবহুল হোটেল।
ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার
নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’ ভবনটি অবস্থিত। এটি বিশ্বের সপ্তম উঁচু ভবন। এর উচ্চতা ৫৪১ মিটার (১৭৭৬ ফুট)। যা আমেরিকানদের কাছে ‘ফ্রিডম টাওয়ার’ হিসেবে পরিচিত। ভবনটি নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে অবস্থিত। স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিডমোর, ওয়িংস অ্যান্ড মেরিলের স্থপতি ডেভিড চাইল্ডস এর নকশা করেছেন। ২০১৪ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এটি বহুমুখী কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানে অফিসের জায়গা পর্যবেক্ষণের স্থান এবং একটি জাদুঘরও আছে। ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৭১টি লিফট রয়েছে, যা ঘণ্টায় ২৩ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। অর্থাৎ আপনি মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ভবনটির নিচ তলা থেকে ১০২তম তলায় যেতে পারবেন।
মারদেকা
কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের ২ হাজার ২২৭ ফুটের উচ্চতার ‘মারদেকা ১১৮’ নামের ভবনটি এখন বুর্জ খলিফার পর বিশ্বের দ্বিতীয় সুউচ্চ ভবন। ১১৮ তলাবিশিষ্ট ভবনটি পিএনবি ১১৮ নামেও পরিচিত। ১০ লাখ বর্গফুটের ভবনটিতে থিয়েটারসহ আছে হোটেল ও অফিস, দোকানপাট এবং ওপর থেকে নিচের দিকে দৃষ্টিনন্দন স্থান দেখার জায়গা। মারদেকায় আছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সর্বোচ্চ অবজারভেশন ডেক। ২০২৩ সালে এর নির্মাণ শেষ হয়। মারদেকা অর্থ স্বাধীনতা। মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পারমোদালান ন্যাসিওনাল বেরহাদ (পিএনবি) এর উন্নয়ন ও অর্থায়নে নেতৃত্ব দিয়েছে।
সাংহাই টাওয়ার
সাংহাই সিটি, চীন
সাংহাই টাওয়ার চীনের উচ্চতম ভবন। ১২৮ তলাবিশিষ্ট ভবনটির উচ্চতা ৬৩২ মিটার (প্রায় ২ হাজার ফুট)। আইকনিক এই অট্টালিকার নকশা করেছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান গেনসলার। এখানে আছে বাণিজ্যিক কেন্দ্র, অফিস ও হোটেলের জায়গা। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্যবেক্ষণ স্থান এবং দ্রুতগতির এলিভেটরের অবস্থানও এখানে। ২০১৫ সালে সাংহাই টাওয়ারের নির্মাণকাজ শেষ হয়। সাংহাই টাওয়ারের পাশেই সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফিন্যান্সিয়াল সেন্টারের অবস্থান। এটি বিশ্বের ১২তম উঁচু ভবন। এই অট্টালিকার ওপরের তলাগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জে হোটেল সাংহাই টাওয়ার’।
তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স
তিয়ানজিন, চীন
অবাক বিষয় হলো বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবনের তালিকায় আট ও নয় নম্বরে থাকা ভবন দুটি সমানে সমান। তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার এবং গুয়াংজু সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার- দুটি ভবনেরই উচ্চতা ৫৩০ মিটার (১৭৩৯ ফুট)। তবে তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার ভবনটি ৮৭ তলাবিশিষ্ট। আর গুয়াংজু সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টারে আছে ১১১ তলা। এটি চীনের উত্তর উপকূলের গুরুত্ব শহর তিয়ানজিনে অবস্থিত। যা দেশটির প্রধান পাঁচটি শহরের মধ্যে অন্যতম। গোল্ডেন ফিন্যান্সের পর এটি তিয়ানজিনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উচ্চতার ভবন। ২০১৯ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টারটি স্থাপত্যপ্রতিষ্ঠান ‘রোনাল্ড লু অ্যান্ড পার্টনার’-এর সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয়েছে। স্কিডমোর ও ওয়িংস অ্যান্ড মেরিল যৌথভাবে এর নকশা করেছে। ভবনটিতে আছে অফিসের জায়গা, বিলাসবহুল পরিষেবাযুক্ত অ্যাপার্টমেন্ট ও একটি পাঁচ তারকা হোটেল।