কয়েক দিনের আন্দোলন ও কারফিউর পর গতকাল আবার চালু হয়েছে গাজীপুরের শিল্প কারখানা। কারখানা চালু হওয়ায় মালিক-শ্রমিকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সকালে কোনাবাড়ী, ভোগড়াসহ অন্যান্য শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে দেখা গেছে। একই অবস্থা দেখা গেছে কোনাবাড়ী বিসিক ও টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় কাজে যোগ দিতে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। গতকাল প্রায় সব শিল্প কারখানাই খোলা ছিল বলে শিল্প পুলিশ জানিয়েছেন। শিল্পাঞ্চলে বিজিবি সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সারওয়ার আলম জানান, গাজীপুরে ২ হাজার ২২৩টির মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। গতকাল আমরা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। কোথাও কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার খবর পাওয়া যায়নি। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তার কাজে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি শিল্প পুলিশের প্রায় ৫০০ সদস্য নিয়োজিত ছিল। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকার ফারদার ফ্যাশনস লিমিটেডের এমডি ও সিইও মো. জাকির হোসেন জানান, পাঁচ দিন পর গতকাল কারখানা খুলে দেওয়ায় প্রায় শতভাগ শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেছেন।
কয়েক দিন বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে কারখানা খোলা থাকলে সহজেই ওই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হবে। ওই কারখানার শ্রমিক মো. সাবের হোসেন জানান, নিরাপত্তা জোরদার থাকায় তারা নির্বিঘ্নে কাজে যোগ দিতে পেরেছেন। কারখানা খোলায় তারা খুব খুশি। কোনো নাশকতাকারী বা বিশৃঙ্খলাকারী যাতে কারখানায় ঢুকতে না পারে তাদের প্রতিহত করার কথাও জানান তিনি। এদিকে, বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, দেশে সৃষ্ট নাশকতা নির্মূলের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ সব বাহিনীর সদস্যরা একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি। নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, বিশৃঙ্খলা আমরা সবাই মিলে নিয়ন্ত্রণে এনেছি। গার্মেন্ট মালিকরা কারখানা খুলে দিয়েছেন। শ্রমিকরা যাতে নির্ভয়ে কারখানায় কাজে আসতে পারে এবং এর ভিতরে যাতে কোনো দুষ্কৃতকারী পরিকল্পনা করে আবার কোনো নাশকতা না করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। গতকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে বিজিবি অধিনায়ক এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোনাবাড়ী জোন) মো. আমির হোসেনসহ বিজিবি ও পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।