রাজশাহী মহানগরীর চৌদ্দপাই থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত ড্রেনের পাশে রেলিংয়ের জন্য ১ কোটি ২৫ লাখ ও সড়কে কার্পেটিংয়ের জন্য ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে সিটি করপোরেশন (রাসিক)। এ কাজ শেষ হয়েছে গত অর্থবছরে। কিন্তু আবারও ওই এলাকায় কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে রাসিক। গত ১২ আগস্ট দরপত্রের শিডিউল জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। যদিও এ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়েছে।
অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সদ্য অপসারিত মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অভিযোগ, শুধু গুটিকয় কাউন্সিলরকে নিয়ে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতেন প্রভাবশালী এই মেয়র। পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করা হয়েছে অপ্রয়োজনীয় এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন। অভিযোগকারী কাউন্সিলরদের সন্দেহ, এসব কাজে বিপুল অঙ্কের দুর্নীতিও হয়েছে। শুধু চৌদ্দপাই-শ্যামপুর নয়, ১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঁঠালবাড়িয়া-হাইটেক পার্ক হয়ে জাহানারা জামান স্টেডিয়াম পর্যন্ত সড়কের কার্পেটিং, ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণ প্রকল্প, ৬ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে লালনশাহ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও শেখ রাসেল শিশু পার্কের ফুটপাত নির্মাণ, ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নুরুর ঢালানের পুকুর ও সোনাদিঘি সংস্কার, ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নগর ভবন রং করা, ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নগর ভবনের বাথরুম সংস্কার, ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে শালবাগান গ্যারেজ ও সিটি হাসপাতালের বাথরুম সংস্কার, ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান নার্সিং ইনস্টিটিউটের বৈদ্যুতিক কাজ এবং ৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬, ৭, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, সড়ক বিভাজন ও ড্রেন নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করে প্রকৌশল শাখা। যদিও এসব কাজ আগেই শেষ হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্বাস আলী সরদার জানান, যেসব জায়গায় ফ্লাইওভার প্রয়োজন ছিল না, এমন জায়গায়ও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় প্রকল্প নেওয়া হয়নি। ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু বলেন, ‘কিছু প্রকল্প কোনো কারণ ছাড়াই নেওয়া হয়েছে।’ ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদাররা কাজ করেছেন। এর সঙ্গে কাউন্সিলররা যুক্ত নন। গুটিকয় কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে মেয়র সব প্রকল্প নিয়েছেন।’ কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের দিয়ে বেশির ভাগ কাজ করাতেন মেয়র। এসব কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগও দেওয়া হতো না কাউন্সিলরদের। ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল হোসেন জানান, ঠিকাদারি সব কাজ প্রকৌশল শাখা আর মেয়র মিলে করতেন। সেখানে তাদের কোনো অংশগ্রহণ কখনোই রাখা হয়নি।