দেশে প্রতিটি খাবার উৎপাদন থেকে খাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ভেজালে পরিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য আবারও একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সেফ ফুড অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ওই মন্তব্য করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছু কোম্পানির কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে। যে খাবারটা ভালো, সেটা জানার পরও পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে অর্গানিক খাবার থাকলেও সেটা পাওয়া যায় না। প্রতিটি খাবার উৎপাদন থেকে খাওয়ার আগ পর্যন্ত ভেজালে পরিপূর্ণ।’
বৈঠকে উপস্থিত অন্য বক্তারা বলেন, দিন দিন আমাদের খাদ্য তার ঐতিহ্যগত নিরাপদ বলয় থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ মিঠাপানির প্রাকৃতিক ভান্ডার, দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর দেশে নিরাপদ খাদ্য এখন অনেকটাই হুমকির মুখে। কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার এবং ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার, কলকারখানার বর্জ্য, রং ও কেমিক্যাল, অপ্রয়োজনীয় প্রিজারভেটিভ, কার্বাইড, ফরমালিন এসবের যথেচ্ছ ব্যবহার এখন প্রকাশ্যে হচ্ছে। ফলে মাটি, পানি, বাতাসসহ গোটা পরিবেশ প্রকৃতিই মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (রিইব) পরিচালক সুরাইয়া বেগম বলেন, ‘আমি যা খেতে চাই, সেটা খেতে পারছি না, এই জায়গাটায় আমাদের যেতে হবে। আমাদের আগে মনের জায়গাটা ঠিক করতে হবে, তারপর আন্দোলন করতে হবে।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘দেশে কৃষকদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের দাবিদার। সচিব, ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্যরা যে গুরুত্ব পান, সেটা তারা পান না। ঢাকায় কিছু অভিযান করে সংবাদমাধ্যমে আসা যায়, তবে সেটি কার্যকর কিছু হয় না।’
বাংলাদেশ সেফ ফুড অ্যালায়েন্সের সভাপতি কাজী জিয়া শামসের সভাপতিত্বে বৈঠক সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম বাবু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।